‘অন্তবিহীন পথ চলাই জীবন... শুধু জীবনের কথা বলাই জীবন...’ জীবনমুখী এরকম বহুগানের স্রষ্টা নচিকেতা। কলকাতার এই প্রতিভাবান শিল্পী বাংলাদেশেও কম জনপ্রিয় নন।
কেমন লাগছে বাংলাদেশকে?
নচিকেতা : নিজের দেশের মতোই মনে হচ্ছে। সবসময় তাই মনে হয়। আমাদের ভাষা-সংস্কৃতি সবই তো এক। রাজনৈতিক কারণেই আজ আমরা এপার বাংলা আর ওপার বাংলা হয়ে গেছি। সাংস্কৃতিক বন্ধন তো ছিন্ন হয় নি। এ দেশের মানুষ যেমন বাঙালী, আমিও একজন বাঙালী। শিল্পী হিসেবে সীমান্তের ব্যারিকেড আমি মানি না।
ঢাকায় এলেন কতো বছর পর? কি কি পরিবর্তন চোখে পড়েছে?
নচিকেতা : ঢাকায় তো বহুবার এসেছি। কলকাতার পরই ঢাকা আমার প্রিয় শহর। শেষ বোধহয় বছর তিনেক আগে ঢাকা এসেছিলাম। পরিবর্তন যেটা চোখে পড়েছে, হাইরাইজ বিল্ডিং ঢেকে ফেলেছে ঢাকার আকাশ। আর একটা ব্যাপার চোখে পড়লো, এটাকে বুড়ো বয়সের নজর খারাপও বলতে পারেন। ঢাকায় বোধহয় সুন্দরীদের সংখ্যা বেড়ে গেছে। রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ ট্র্যাফিক জ্যামে বসে থাকতে থাকতে বহু সুন্দরীকে দেখলাম। আগের বার যখন এসেছিলাম এতো লম্বা জ্যামে বসে থাকতে হয় নি আর এতো সুন্দরীও চোখে পড়ে নি।
এবারের সফরে এসে বাংলাদেশের একটি ছবির প্লেব্যাকের রেকর্ডিংয়ে আপনি অংশ নিয়েছেন, গানটি সম্পর্কে বলুন?
নচিকেতা : আসাধারণ একটি গান গাইলাম এদেশের শিল্পী রবি চৌধুরীরর কল্যাণে। তিনি আমার বন্ধু মানুষ। কয়েকমাস আগেই তিনি আমাকে বলে রেখেছেন, আমাকে তার সুর ও সঙ্গীত পরিচালনায় গাইতে হবে। সময় করে উঠতে উঠতে একটু দেরি হয়ে গেল। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যখন তাদের স্টেজ শোর জন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানালো সবার আগে আমার মনের আয়নায় ভেসে উঠলো, রবি চৌধুরীর মুখ। ভাবলাম এবার বন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে আসি। বন্ধুটি যে আমার জন্য এতো চমৎকার একটা গান বেঁধে রেখেছে কে জানতো ! তাহলে যে সব কাজ ফেলে কবেই ঝাঁপ দিয়ে চলে আসি। নারগিস আক্তারের ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’ ছবির জন্য এই গান।
একটি স্টেজ শো ও একটি লাইভ টিভি প্রোগ্রামে আপনি পারফর্ম করেছেন, কেমন লাগলো?
নচিকেতা : বাংলাদেশে গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার বরাবরই চমৎকার। সবসময় একরাশ সুখানুভূতি নিয়ে এখান থেকে নিজের ডেরায় ফিরে যাই। এবারও তাই ঘটতে যাচ্ছে। আমার মতো একজন উটকো শিল্পীকে এদেশের মানুষ কেনো এতো পছন্দ করে তার কারণ খুঁজে পাই না। লাইভ শোতে দর্শকদের রেসপন্স দেখে তো আমার চোখ রীতিমতো কপালে ঠেকেছিল।
বাংলাদেশের গান শোনেন?
নচিকেতা : কেনো শুনবো না? কলকাতার গান শুনতে শুনতে যখন একঘেয়ে ঘ্যান ঘ্যান লাগে, তখনই বাংলাদেশের গান শুনে মনে শান্তি লাগে। বাংলাদেশই তো আসলে বাংলাগানের আসল জায়গা। কলকাতায় যেভাবে হিন্দির আগ্রাসন চলছে তাতে বাংলায় গান গাওয়া তো দূরে থাক, কদিন বাংলাভাষায় কথা বলতে পারি তাই নিয়েই তো আমি চিন্তিত।
আপনার আগামী পরিকল্পনা ?
নচিকেতা : কিচ্ছু নেই। যদি পরিকল্পনা করে চলতাম তাহলে আমি আজকের নচিকেতা হয়ে উঠতে
পারতাম না।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ এপ্রিল ২১, ২০১১