১৯৯১ থেকে ২০১১, দেখতে দেখতে চলচ্চিত্রে ২০ বছর কেটে গেছে মৌসুমীর। অভিনয় করেছেন হরেকরকম চরিত্রে, তবু মনের মধ্যে রয়ে গেছে একধরণের অতৃপ্তি।
হঠাৎ করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কারণ কী ? এ প্রশ্নের উত্তরে মৌসুমী বলেন, এটি কোন জাতীয় নির্বাচন নয়। আমাদের শিল্পী সমিতির নির্বাচন। চলচ্চিত্র শিল্পীদের কল্যাণ ও তাদের স্বার্থরক্ষার জন্যই এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত। হঠাৎ করে আমি নির্বাচনে প্রার্থী হই নি। এর আগেও আমি শিল্পী সমিতিতে ছিলাম। ব্যস্ততার কারণে হয়তো সেভাবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারি নি। এখনও আমার ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটাতে হয়। তবে এখন আমি বেছে বেছে ছবি করছি। খুব বেশি কাজ করছি না। আমার মনে হয়েছে এখন শিল্পীদের কল্যাণ আর উন্নয়নের জন্য আগের চেয়ে অনেক বেশি সময় দিতে পারবো। এজন্যই আমি চলচ্চিত্র সমিতির নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছি। মৌসুমী আরো বললেন, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এর আগেও অংশ নিয়েছিলাম। এবারের অংশগ্রহণ আগের চেয়ে ভিন্ন বলে মনে হচ্ছে আমার কাছে । বিশেষ করে শাকিবের অনুরোধেই এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হলে সাধারণ শিল্পীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছি। আশা করছি আমার সহশিল্পীরাসহ সবাই আমাকে তাদের পাশে দাঁড়াবার সুযোগ করে দিবেন।
নির্বাচিত হলে শিল্পীদের জন্য কী কী কাজ করতে চান? উত্তরে মৌসুমী বলেন, এককভাবে কারো পক্ষে বিশাল কিছু করা সম্ভব নয়। আমি একটি প্যানেলের পক্ষ থেকে নির্বাচন করছি। এই প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে শিল্পীদের কল্যাণ ও চলচ্চিত্রের উন্নয়নে যেসব কাজ করার কথা বলছেন, সেসব আমাদের সবার কথা। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই, চলচ্চিত্রের কোনো শিল্পী যেন শেষ-বয়সে পৌঁছে চিকিৎসার অভাবে মারা না যান। আমি মনে করি, শিল্পীদের কল্যাণে সবার আগে একটা ফান্ড গঠনের প্রতি জোর দেয়া দরকার।
কখনো সফলতার পেছনে ছোটেননি মৌসুমী। অভিনয় দক্ষতার কারণে সফলতাই তার পিছু নিয়েছে বারবার। একাধিকবার অভিনয় থেকে বিদায় নিতে চাইলেও তাকে ফিরে আসতে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মৌসুমী বললেন, সমস্যাটা আমার নিজের। অনেক সময় মানুষের অনুরোধ উপেক্ষা করাটা আমার পক্ষে কঠিন হয়ে যায়। আসলে এমন কিছু প্রযোজক-পরিচালক আছেন, যাদের ছবিতে একসময় আমি নিয়মিত কাজ করেছি। তারা এসে এমনভাবে আমাকে বলেন তাদের ছবিতে অভিনয়ের জন্য যেক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ে যাই। বার বার না করার পরও যখন দেখি তারা নাছোড়বান্দা, তখন কী আর করা ! তাদের শিডিউল দিতে হয়।
অনেকেই মনে করেন, এখন পর্যন্ত মৌসুমীর বিকল্প হিসেবে ঢালিউডে কাউকে পাওয়া যায় নি। এখনো মৌসুমী শুটিং নিয়ে থাকেন ব্যস্ত। ছেলে ফারদীন আর মেয়ে ফাইজাকে সেভাবে সময় দিতে পারেন না বলে কষ্ট লাগে। মাঝেমধ্যে তো ছুটির দিনটাও প্রযোজক-পরিচালকের হাতে তুলে দিতে হয়। সংসারের প্রতি স্বামী ওমর সানী যথেষ্ট টেক-কেয়ার করেন বলেই নির্ভার হয়ে মৌসুমী শুটিংয়ে অংশ নিতে পারেন।
এ মুহূর্তে মৌসুমী কাজ করছেন এফআই মানিকের ‘মাই নেম ইজ সুলতান’ ও বদিউল আলম খোকেনের ‘বস নাম্বার ওয়ান’ ছবিতে। সোহানুর রহমান সোহানের ‘কোটি টাকার প্রেম’, ‘সে আমার মন কেড়েছে’, এমবি মানিকের ‘জান আমার জান’, ‘এক টাকার দেনমোহর’,শাহদাত হোসেন লিটনের ‘আদরের জামাই’, শাহীন সুমনের ‘নবাবজাদা’, নাঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূলের ‘এককাপ চা’ প্রভৃতি ছবির শুটিং শেষ করেছেন। মুক্তির অপেক্ষায় আছে চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘দেবদাস’, মোস্তফা কামাল রাজের ‘প্রজাপতি’ সহ আরো বেশ কটি ছবি।
বাংলাদেশ সময় ১৬৩০, মে ০৪, ২০১১