চলচ্চিত্র শিল্পীদের সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন ২০ মে শুক্রবার । বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন।
শাকিব-মিশা প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মিশা সওদাগর তাদের নির্বাচনী প্রচার কাজে অসুবিধার কথা জানিয়ে বলেন. শিল্পী সমিতির ভোটার তালিকায় অনেকের নাম আছে, কিন্তু ঠিকানা নেই। শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে তাদের কোনো ফোন নম্বরও নেই। এরকম ভোটারদের কাছে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
গত ৪ বছর ধরে মিজু আহমেদ রয়েছেন শিল্পী সমিতির সভাপতি পদে। তার প্রতিই অভিযোগের পাল্লাটা খানিকটা বেশি। প্রতিপক্ষ অভিযোগ তুলেছে, ভোটার তালিকা নিয়ে। অনেকেই বলছেন, শিল্পী সমিতির ৫৫৬ ভোটারের মধ্যে অর্ধেকই প্রায় ১০ বছর ধরে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত নন। এছাড়া অনেকে অভিনয় না করেই শিল্পী সমিতির সদস্য হয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের নামও শিল্পী সমিতির ভোটার তালিকায় পাওয়া গেছে। অন্যদিকে নিয়মিত অভিনয় করেন এমন বেশ কয়েকজন শিল্পীর নামও ভোটার তালিকায় স্থান পায়নি।
এ বিষয়ে মিজু আহমেদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, আমি সভাপতি থাকাকালীন সময়ে যে ভোটার তালিকা তৈরি হয়েছে তাতে শিল্পী ছাড়া অন্য কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি। শিল্পী ছাড়া কাউকে যদি ভোটার তালিকায় দেখাতে পারেন তাহলে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবো। একসময় যারা চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করেছেন, কিন্তু এখন আর অভিনয় করছেন না; তারাও তো শিল্পী। তাদেরও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সময়ে অভিনয় করছেন, অথচ শিল্পী সমিতির সদস্য হন নি; এরকম কেউ থাকলে তার জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। সব শিল্পীকেই শিল্পী সমিতির সদস্য হতে আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্ধারিত নিয়মের মধ্যে থেকে কেউ যদি সদস্য হতে না এগিয়ে আসেন তাহলে যারা নের্তৃত্বে ছিলেন তাদের নিশ্চয়ই দায়ী করা যায় না।
কয়েকদিন পরেই নির্বাচন, অথচ শাকিব খান এখনও ব্যস্ত তার ছবির শুটিং নিয়ে। তার তুলনায় জনসংযোগে অনেক এগিয়ে মিজু আহমেদ ও ড্যানি সিডাক। এ বিষয়ে শাকিব-মিশা প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মিশা সওদাগরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, শাকিব খান ব্যস্ত নায়ক। তার পক্ষ থেকে আমরা এতোদিন প্রচার ও জনসংযোগ চালিয়েছি। তবে শাকিব খানও মাঠে নেমেছেন। নির্বাচনের ৪দিন আগে থেকে শুরু করে নির্বাচনে দিন পর্যন্ত শাকিব কোনো শুটিং বা ডাবিং করছেন না শাকিব খান। পূর্ণ প্যানেল নিয়েই আমরা নির্বাচনী প্রচার ও জনসংযোগে নেমে গেছি।
১৫ মে রবিবার দুপুরে এফডিসির ডাবিং হলের সামনে শাকিব-মিশা প্যানেলের শিল্পীসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শাকিব খান ঘোষনা করেন, পূর্ণ প্যানেল নির্বাচিত হলে শিল্পী সমিতির জন্য দোতলা একটি বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শুরু করবেন। যেখানে সব আধুনিক আসবাবপত্র ও সাজসজ্জা থাকবে। তিনি বলেন, কর্মহীন ও প্রবীণ শিল্পীদের জন্য এককালীন ভাতা হিসাবে বিশ লাখ টাকা প্রদান করা হবে। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ফান্ডে এককালীন পঞ্চাশ লাখ টাকা সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করা হবে।
নির্বাচনে অভিজ্ঞ মিজু আহমেদ অবশ্য অনেক আগেই তার প্যানেল নিয়ে মাঠে নেমেছেন। সদলবলে তারা প্যানেলের জন্য কাজ করছেন। মিজু আহমেদ তার প্যানেলের প্রতিটি প্রার্থীকে ডেকে বলেছেন, নির্বাচনে নেমে ঘরে বসে থাকলে চলবে না। কখনোই প্রতিদ্বন্দ্বীকে দুর্বল ভাবা যাবে না। একবারের জায়গায় প্রয়োজনে তিনবার ভোটারদের কাছে যেতে হবে। এখন সাধারণ ভোটারদের হাতেই সব ক্ষমতা। কাজেই তাদের সিদ্ধান্তই আমাদের মাথা পেতে নিতে হবে।
এই প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ড্যানি সিডাক বললেন, এরই মধ্যে আমরা সমিতির প্রতিটি সদস্যের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করেছি। তাদের সুখ-দুঃখের খোঁজখবর নিয়েছি। নির্বাচনের আগে আরো একাধিকবার তাদের কাছে যাওয়ার আশা রাখি। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী পয়সা দিয়ে ভোটারদের কিনতে পারবেন না বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা কোন মিথ্যা আশ্বাস বা আকাশ-কুসুম স্বপ্ন দেখিয়ে শিল্পীদের মন গলাতে রাজি নই। সব শিল্পীকে একসঙ্গে নিয়েই শিল্পী সমাজের উন্নয়ন করতে চাই।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তারকাশিল্পী। তাদের মধ্যে রয়েছেন শাকিব খান, মৌসুমী, রিয়াজ, ফেরদৌস,আমিন খান, নিপুণ, বাপ্পারাজ, অরুণা বিশ্বাস, মিজু আহমেদ, ডন, মিশা সওদাগর, আদিল, দিলারা, প্রবীর মিত্র, আহমেদ শরীফ, আনোয়ারা সহ আরো অনেকে। এতো তারকার উপস্থিতিই নির্বাচনকে করে তুলেছে জমজমাট। এফডিসির প্রবেশ দরোজা থেকে শুরু করে এফডিসির সর্বত্রই এখন চলছে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা।
বাংলাদেশ সময় ১৮০৫, মে ১৫, ২০১১