তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত নায়িকা পপির এ মুহূর্তে ব্যস্ততা নেই বললেই চলে। ক্যারিয়ারের পড়তি সময়ে সব নায়িকাই নিজের অবস্থান পুনরুদ্ধারের আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকেন।
ঢাকার ইস্কাটনের বাসা থেকে ইদানিং পপি বের হন না কোথাও। কপাটবন্ধ করে নিজের রুমেই কাটিয়ে দেন দিনরাত্রির বেশিরভাগ সময়। পপির এই রহস্যজনক জীবনযাপনে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তার পরিবারের সদস্যরাও।
এক সময় পপি মানেই ছিল সুপারহিট-বাম্পার হিট ছবি। এখন চলচ্চিত্রে ব্যস্ততা না থাকলেও পপি তার প্রজন্মের সব নায়িকাকে ছাড়িয়ে গেছেন। কারণ ববিতা-শাবানার পর পপি ছাড়া আর কোনো অভিনেত্রী এখন পর্যন্ত তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাননি। অহিদুজ্জামান ডায়মন্ডের ‘গঙ্গাযাত্রা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য চলতি বছরের শুরুতে তৃতীয়বারের মতো শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান পপি। এর আগে তিনি কালাম কায়সারের ‘কারাগার’ ও নারগিস আক্তারের ‘মেঘের কোলে রোদ’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য পর পর দুবার এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। তৃতীয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার পর ঢালিউডের অনেকেই আশা করেছিলেন, ইস্যুটাকে কাজে লাগাবেন পপি। সক্রিয় হয়ে উঠবেন আবার।
পপি নিজেও সেরকম আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে মোটেও তৎপর হতে দেখা যায় নি। উল্টো বরং পপির অসহযোগিতার কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে নির্মাণাধীন তিনটি ছবি। ছবি তিনটি হলো নারগিস আক্তার পরিচালিত ‘শর্টকাটে বড় লোক’, ‘পৌষ মাসের পিরিতি’ এবং এম এম সরকার পরিচালিত ‘বৃষ্টির চোখে আগুন’। ব্যস্ততা না থাকলেও পপি একাধিকবার শিডিউল দিয়ে পরে তা বাতিল করায় ছবি ৩টির কাজ শেষ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে সামনে রেখে শাকিব-মিশা আর মিজু-ড্যানি দুই প্যানেল থেকেই পপির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তাকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল, নির্বাচনে প্রার্থী হতে। কিন্তু সম্মত হন নি তিনি। এমনকি নির্বাচনী প্রচারণায় সহকর্মী শিল্পীরা তার বাসায় যাওয়ার পরও পপি তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নি।
বেশিরভাগ সময় পপির ফোন রিসিভ করে কাজের লোক। খানিকক্ষণ পর স্রেফ বলে দেন, আপা বাসায় ফোন রেখে বাইরে গেছেন কিংবা ঘুমাচ্ছেন। ফোনে কদাচিৎ পপিকে পাওয়া গেলেও তিনি কিছুক্ষণ পর ফোন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিছুক্ষণ পর ফোন করলে তিনি আর রিসিভ করেন না অথবা ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সামনে মুক্তির অপেক্ষায় আছে, পপি অভিনীত লেডি অ্যাকশনধর্মী ছবি ‘গার্মেন্টস কন্যা’। জি সরকার পরিচালিত এ ছবিতে তার বিপরীত রয়েছেন এই সময়ের নায়ক ইমন। অনেকেই মনে করছেন নাজিমউদ্দিন চেয়ারম্যান প্রযোজিত বিগ বাজেটের ছবি ‘গার্মেন্টস কন্যা’-এর উপর নির্ভর করছে চলচ্চিত্রে পপির ভবিষ্যৎ। কেউ কেউ আবার বলছেন, ছবিটি শুধু বাণিজ্যিক সাফল্যের মুখ দেখলেই চলবে না পপিকে বেরিয়ে আসতে হবে তার রহস্যজনক জীবনযাপন থেকেও। নয়তো মেঘের আড়ালেই চিরতরে ঢাকা পড়ে যাবে ঢালিউডের ঝলমলে এই নক্ষত্র।
বাংলাদেশ সময় ১৯০৫, মে ১৭, ২০১১