ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

অবশেষে অডিও বাজারে হাবিবের ‘আহ্বান’

বিনোদন প্রতিবেদক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০১১

এই সময়ের মিউজিক ক্রেজ হাবিবের নতুন অ্যালবাম ‘আহ্বান’। এতোদিন শুধু অ্যালবামটির গানগুলো বাংলালিংকের গ্রাহকরাই শুধু শুনেছেন।

কিছুগান অবশ্য এফএম রেডিওতেও বাজানো হয়েছে। এটি এবার বাজারে এলো সিডি আকারে। ৪ জুন থেকে অ্যালবামটি অডিও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এটি এসেছে ডেডলাইন মিউজিকের ব্যানারে। ‘আহ্বান’ অ্যালবামটি সামনে রেখে বাংলানিউজ এ বিষয়ে কথা বলে হাবিবের সঙ্গে।

হাবিবের তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘আহ্বান’। ২০০৬ সালে বের হয়েছিল তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘শোনো’। দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘বলছি তোমায়’ বের হয় ২০০৮ সালে। আগের দুটো অ্যালবামের মতোই এ অ্যালবামের সাফল্য নিয়ে হাবিব বেশ আশাবাদী।

বাংলালিংক মিউজিক স্টেশন এবং এফএম রেডিওতে মুক্তি পাওয়ার পর অডিও সিডি আকারে বাজারে এসেছে ‘আহ্বান’, এ বিষয়ে হাবিব নিজের অনুভূতির কথা জানিয়ে বলেন, ‘আমি আনন্দিত। কারণ সীমাবদ্ধ পরিসর ছাড়িয়ে আমার এ অ্যালবামটি এখন সিডি আকারে সব শ্রেণীর শ্রোতাদের জন্য উন্মুক্ত হলো। সব শিল্পীর মতোই আমিও চাই আমার গাওয়া নতুন গানগুলো যেন দর্শক-শ্রোতার কাছে পৌঁছায়’। হাবিব সেই সঙ্গে এটাও জানালেন যে, ২৯ এপ্রিল মিউজিক স্টেশনে ‘আহ্বান’ প্রকাশের পর  এই কদিনে প্রায় ১০ লাখ শ্রোতা গানগুলো শুনেছে। এই হিসাবটা অবশ্য তিনি জেনেছেন বাংলালিংকের কাছ থেকে। এটাও কম বড় কথা নয়।

ব্রিটিশ মিউজিশিয়ন জর্জ মাইকেলের ‘ওল্ডার’ অ্যালবামের প্রচ্ছদের সঙ্গে অনেকটাই মিলে গেছে হাবিবের নতুন অ্যালবাম ‘আহ্বান’-এর প্রচ্ছদ। এ বিষয়ে হাবিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বললেন, কভারের ভাবনাটা ওখান থেকেই নিয়েছি। আমি জর্জ মাইকেলের বিশাল ভক্ত। যখন লন্ডনে ছিলাম, তখন এশিয়া স্পাইস নামে ভারতীয় একটা খাবারের দোকানে প্রতি উইকএন্ডে গান করতাম। ওটা লন্ডন থেকে একটু বাইরে, জায়গাটার নাম ব্যাজিল্ডন। ওখানে জর্জ মাইকেলের গানই বেশি গাইতাম। কারণ আমার কণ্ঠে সেখানে সবাই জর্জ মাইকেলের গান বেশি পছন্দ করত। জর্জ মাইকেলের ‘ওল্ডার’ অ্যালবামের কভার দেখে আমার খুব পছন্দ হয়েছিল। আগেই ভেবে রেখেছিলাম, ভবিষ্যতে এই আইডিয়া নিয়ে কিছু একটা করবো। বলা যায়, ওটা দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি।

মজার বিষয় হলো, অ্যালবামটির নাম ‘আহ্বান’ রাখার পরিকল্পনা শুরুতে একদম ছিল না হাবিবের। শুরুতে নাম ঠিক করা হয়েছিল ‘তুমি যে আমার ঠিকানা’। অ্যালবামটির বেশির ভাগ গান রেকর্ডিং হয়ে যাওয়ার পর এবছরের মার্চে এক প্রবাসী বন্ধুর সঙ্গে হাবিব চট্টগ্রাম বেড়াতে যান। সঙ্গে ছিল একটা ল্যাপটপ কম্পিউটার আর টু-অক্টেভের ছোট কিবোর্ড। বাংলালিংকের হাতে পূর্ণাঙ্গ অ্যালবামটি জমা দিতে মাত্র পাঁচ দিন বাকি। হোটেল রুমে বসে দুই বন্ধু মিলে গান নিয়ে আলোচনা করছিলেন। প্রবাসী সেই বন্ধুটি ভালো পারকাসন বাজায়, পাশাপাশি তিনি একজন রিদমিস্ট। হঠাৎ তাদের মাথায় এল, ‘ভাঙরা’ ধারার একটা সুর করা যাক। একরাতে মাত্র তিন ঘণ্টায় পুরো একটি গানের সুর তারা তৈরি করলেন। ঢাকায় ফিরে সেই সুরের ওপর কথা লেখার দায়িত্ব দেয়া হলো সাকি আহমদকে। তৈরি হয়ে গেলো ‘আহ্বান’ গানটি। সিদ্ধান্ত হলো, অ্যালবামের শুরুতেই গানটি থাকবে । অ্যালবামের নামও পাল্টে হয়ে গেল ‘আহ্বান’।


 হঠাৎ করেই শেষ দিকে প্রবাসী এক বন্ধুর (মিঠু) সঙ্গে হাবিব বেড়াতে যান চট্টগ্রামে। সঙ্গে ছিল একটা ল্যাপটপ কম্পিউটার আর দুই অক্টেভের ছোট কিবোর্ড। বাংলালিংকের হাতে পূর্ণাঙ্গ অ্যালবামটি জমা দিতে আরও পাঁচ দিন বাকি। হোটেলের রুমে বসে দুই বন্ধু মিলে গান নিয়ে আলোচনা করছিলেন। মিঠু পারকাসন বাজায়, পাশাপাশি রিদমিস্ট। হঠাৎ তাঁদের মাথায় এল, ‘ভাংরা’ ধারার সুর তৈরি করলে মন্দ হয় না। হাবিব জানালেন, মাত্র তিন ঘণ্টায় পুরো একটি গানের সুর তাঁরা তৈরি করলেন। ঢাকায় ফিরে সেই সুরের ওপর কথা লেখার দায়িত্ব দিলেন সাকি আহমদকে। দ্রুত তৈরি হলো ‘আহ্বান’ গানটি। সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, অ্যালবামের শুরুতেই থাকবে গানটি। অ্যালবামের নামও পাল্টে রাখা হলো ‘আহ্বান’।

হাবিব  মনে করেন, কোনো অ্যালবামই তার একক কাজের ফসল নয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি গান আসলে টিমওয়ার্কের ফসল। যদি আমি কোনো সাফল্য পেয়ে থাকি, তবে এই সাফল্যের অংশীদার আমার সঙ্গে যারা মিউজিক করেছে তারা প্রত্যেকেই গান তৈরির ফাঁকে আমাকে যে ছেলেটা এক কাপ চা বানিয়ে খাওয়ায়, সেই ছেলেটারও  কন্ট্রিবিউশন রয়েছে আমার গানে’।

হাবিবের ‘আহ্বান’ অ্যালবামে গান রয়েছে নয়টি। গানগুলোর কথা লিখেছেন ফেরদৌস ওয়াহিদ, সাকি আহমেদ, ইলিয়াস মোল্লা, মাহবুব মহসিন ও সুস্মিতা বিশ্বাস। আগের মতোই হাবিব নিজেই করেছেন এ অ্যালবামের সবগুলো গানের সুর ও সঙ্গীত পরিচালনার কাজ। একক অ্যালবাম হলেও এতে থাকছে তিনটি দ্বৈত গান। দুটি গান হাবিবের সঙ্গে গেয়েছেন ন্যান্সি, অন্য একটি গানে হাবিবের সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন কণা।

নতুন কাজ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হাবিব জানান ব্যাপারে, ন্যান্সিকে নিয়ে এখন একটানা কয়েকদিন ধরে কাজ করেছেন। ন্যান্সির এবারের একক অ্যালবামের সবগুলো গানের কাজ একটানা শেষ করতে চান। পাশাপাশি রকগানের শিল্পী না হলেও মেলো রক ধারার কিছু গান তৈরির কথা ভাবছেন। পাশাপাশি নিজের নতুন গানগুলোতে বিভিন্ন রাগ-রাগিণীর ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছেন। চলচ্চিত্রের গান নিয়ে খানিকটা হতাশ হাবিব। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রের গান করে আগের মতো আনন্দ পাই না। অনেক পরিশ্রম করে একটা ভাবনা থেকে গান তৈরি করি। পরে ছবিতে গানটির দৃশ্যায়ন দেখে প্রায়ই হতাশ হতে হয়। যদি যথাযথভাবে দৃশ্যায়ন করা সম্ভব হতো, তাহলে গানগুলোর জনপ্রিয়তা অন্য জায়গায় পৌঁছে যেত। তাই চলচ্চিত্রের গানের ব্যাপারে এখন আর উৎসাহ নেই। ’

সবশেষে হাবিব তার ভক্ত ও শ্রোতদের উদ্দেশে বলেন, আশা করছি আপনারা আমার অরিজিনাল সিডিটি কিনবেন। অরিজিনাল স্বাদ গ্রহণ করবেন। একজন শিল্পীকে তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করবেন না। অরিজিনাল সিডি কিনলেই শিল্পীকে সম্মান জানানো হবে।

বাংলাদেশ সময় ১৭২৫, জুন ০৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।