দীর্ঘ বিরতির পর ভারতীয় বাঙালি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান অভিনেত্রী লিসা রে ফিরে এসেছেন বলিউড ফিল্ম। ডোমে।
বলিউডের এই সময়ের ছবি সম্পর্কে নিজের মত জানিয়ে লিসা রে বলেন, ভারতীয় ছবির আন্তর্জাতিক বাজার দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। আমাদের ইন্ড্রাষ্ট্রি দিন দিন বিশ্বব্যাপি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এখনকার অনেক ছবির কাহিনীই দর্শকদের চিন্তা-ভাবনাকে বিকশিত করছে। তাছাড়া বলিউডের ছবি টেকনিক্যালভাবেও যথেষ্ট অগ্রসর হয়েছে। এ শুভ যাত্রায় আমি খানিকটা হলেও অবদান রাখতে চাই।
লিসা রে বলিউডে ‘কসুর’ ছবির মাধ্যমে কাজ শুরু করেন। দিপা মেহতার ছবি ‘ওয়াটার’-এর একটি বিতর্কিত চরিত্রে অভিনয় করে তিনি জনপ্রিয়তা পান। হলিউডের বেশ কিছু ছবিতেও তিনি অভিনয় করেছেন। যার মধ্যে ‘আই কান্ট থিঙ্ক স্ট্রিট’,‘কিল কিল ফাস্টার ফাস্টার’ এবং ‘কুকিং বিথ স্টেল’ উল্লেখযোগ্য। কিন্তু হঠাৎ করেই তার অস্থি-মজ্জায় ক্যান্সারের সংক্রামণ ধরা পড়ে।
২০০৯ সালের মাঝামাঝিতে মাল্টিপল মাইলেমো নামের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন লিসা রে। এরপর দুরারোগ্য ব্যাধির সঙ্গে দুই বছরের কঠিন সংগ্রামে চালিয়ে যান তিনি। চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টা আর নিজের জীবনীশক্তির জোরেই ঘাতক ব্যাধিকে লিসা রে পরাজিত করেন। ফিরে আসেন জীবনে।
এ প্রসঙ্গে লিসা রে বলেন, আমার একজীবনে অনেক জটিল অধ্যায় পাড় করতে হয়েছে। অনেক কিছু দেখেছি, অনেক কিছু শিখেছি। এখন আমি নিজেকে ক্যান্সার গ্রাজুয়েট বলতে পারি। ক্যান্সার মুক্ত হতে গিয়ে এর খুঁটিনাটি অনেক কিছুই এখন আমার নখদর্পনে। কাছের মানুষরা আমার জীবনের আশা ছেড়ে দিলেও, আমি জীবন নিয়ে সবসময়ই ছিলাম আশাবাদী। আমার এই আশাবাদ-ই আমাকে আবার জীবনের সঙ্গে যুক্ত করেছে। আমি বলিউডে আবারও কাজ করতে চাই, আর চাই ক্যান্সার রোগীদের আজীবন সেবা করে যেতে।
৩৮ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীর বাবা বাঙালি আর মা পোলিশ। লিসা রে বড় হয়ে উঠেন কানাডায়। বাবার সঙ্গে ভারতে আসেন নব্বুইয়ের দশকের শুরুতে। প্রথম দিকে খোলামেলা ভঙ্গিতে মডেলিং করে তিনি ঝড় তোলেন। তামিল ছবি ‘নেতাজি’এর মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন ১৯৯৪ সাল থেকে।
ক্যান্সার মুক্ত হবার পর পুনরায় অভিনয়ে ফিরেছেন লিসা রে। তবে হলিউড, বলিউড বা তামিল ছবিতে নয়। তার এই নতুন জন্মের শুরুতেই অভিনয় করেছেন একটি মঞ্চনাটকে। ‘তাজমহল’ নামের এ নাটকে কবির বেদীর মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন লিসা। কানাডার টরন্টো শহরে সম্প্রতি নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছে। এতে মোঘল সম্রাট শাহজাহানের মেয়ে নূরজাহান চরিত্রে অভিনয় করেন এই সুন্দরী অভিনেত্রী। আর শাহজাহানের চরিত্রটি করেন কবির বেদী। শিগগিরই তিনি বলিউডে আসছেন আবারও ছবিতে অভিনয় করার জন্য। তবে ছবির নামটি তিনি ভারতে পা রেখেই সবাইকে জানাতে চান।
এছাড়াও লিসা রে কিছুদিন ধরে একটি বই লিখা শুরু করেছেন। বইটি ক্যান্সার নিয়ে। এতে থাকছে তার ক্যান্সার আক্রান্ত দিনগুলো এবং নিজেকে ক্যান্সার মুক্ত করার অক্লান্ত পরিশ্রমেরে কথা। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি তিনি বললেন, আমি আমার জীবনকে ঈশ্বরের করুণা ও পুরস্কার বলে মনে করি। মরণব্যাধি ক্যান্সার আমাকে জীবনের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে শিখিয়েছে। এখন আমি আমার স্বাস্থ, খাবার ও ওসুধ সম্পর্কে খুব সচেতন থাকি। যোগ ব্যায়ামকে করেছি জীবনের অপরিহার্য্য অংশ। যোগ ব্যায়াম আমাকে শারীরিক ও মানসিক শক্তি যোগাচ্ছে।
ফটোগ্রাফার পাওলো জাম্বালদি এর সাথে সম্পর্কের ব্যাপারটি জানতে চাইলে লিসা বলেন, আমি খুব শিগগিরই বিয়ে করছি না। তবে তার সাথে সম্পর্কের ব্যাপারে আমি সুখী। পরবর্তিতে আমাদের এই সম্পর্কটি আরো ভালো হবে সেই আশায় করছি।
বলিউডে লিসা তার নতুন ছবির নাম না বললেও জানিয়েছেন, এটি হবে মজার ও আনন্দের একটি কাজ। আমি বলিউডে আমার প্রত্যাবর্তনটি স্মরণীয় করে রাখতে চাই।
সূত্র : ওয়েব
বাংলাদেশ সময় ১৪৩০, জুলাই ০৭, ২০১১