সবমিলিয়ে বিশ্বে টেলিভিশন আবিষ্কারের ১০০ বছরও পেরোয়নি।
বাংলাদেশ টেলিভিশন যাত্রা শুরু করে ১৯৬৫ সালে।
অন্যদিকে ১৯৫০ সালে বগুড়ায় প্রকাশিত প্রয়াত ফজলুল হক সম্পাদিত ‘সিনেমা’কে বিনোদন পত্রিকার সুচনা ধরলে বিনোদন সাংবাদিকতার বয়স ৬১ বছরে পড়েছে। তবে নব্বই দশকের শুরুর দিকে দৈনিকগুলোতে প্রতিদিন বিনোদন পাতা শুরু হয়। সেই হিসেবে দৈনিক পত্রিকার বর্তমান বিনোদন সাংবাদিকতার বয়স ২১।
কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে চাই শুরুতেই। নানা সমীক্ষায় জানা যায় দেশের ৭০ ভাগ মানুষ বাস করছে গ্রামে ও মফস্বলে। শিক্ষাগত যোগ্যতার হার অক্ষরজ্ঞান ধরলে ৬৩ শতাংশ। ৯০ শতাংশ মানুষ টেলিভিশন, সংবাদপত্র বা অন্যান্য মাধ্যমের আওতায় আছেন। সমীক্ষা বলছে, দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ টেলিভিশন দেখেন। পাশাপাশি সংবাদপত্র ও ম্যাগাজিন পড়েন, রেডিও, এফ এম রেডিও, অনলাইনও আছে। অনলাইনে পাঠকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। জানা যায়, দেশে ৯২টি জাতীয় ও ১৯৩টি স্থানীয় দৈনিক আছে। এ ছাড়াও রয়েছে সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক ম্যাগাজিন। সব মিলিয়ে রেজির্ষ্টাড সংবাদপত্র প্রকাশনা তিনশো ছাড়িয়ে যাবে।
১৯৯৭ সালে এটিএন বাংলা স্যাটেলাইট চ্যানেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৯৯ সালে প্রথম ডিজিটাল চ্যানেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে চ্যানেল আই। ২০০০ সালে বিটিভির পাশে টেরিস্ট্রোরিয়াল সুবিধা নিয়ে আসে একুশে টেলিভিশন। আইনী জটিলতায় ২০০২ সালে বন্ধ হয়ে ২০০৫ সালে পুনরায় যাত্রা শুরু করে। ২০০৩ সালে এসেছে এনটিভি, ২০০৫ সালে বাংলাভিশন ও আরটিভি, ২০০৬-এ ও নব সাজে ২০১০ থেকে বৈশাখী, ২০০৭ এ ইসলামিক টিভি, ২০০৮-এ দিগন্ত, ২০০৯-এ দেশ টিভি, ২০১০-এ এটিএন নিউজ, ২০১১ তে মাই টিভি, মোহনা টেলিভিশন, সময় টেলিভিশন সম্প্রচারে এসেছে। এই মুহূর্তে পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে আছে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন, মাছরাঙ্গা টেলিভিশন, চ্যানেল নাইন। এছাড়া ২০০৪ সাল থেকে বিটিভি ওর্য়াল্ড নামে স্যাটেলাইট চ্যানেল যোগ করেছে বিটিভি। শুধু দেশে নয় বিদেশেও আমাদের স্যাটেলাইট চ্যানেল প্রচারিত হচ্ছে। লাইসেন্স পেয়েছে আরও একাধিক চ্যানেল। সেই সাথে শেষ তিন বছরে বন্ধ হয়ে গেছে সিএসবি নিউজ, চ্যানেল ওয়ান ও যমুনা টেলিভিশন। স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো দেখতে পাওয়া যায় কেবল নেটওর্য়াক এর মাধ্যমে। মাসিক ফি ১০০ থেকে ৫০০ টাকা এলাকাভেদে। রাতের ৮.৩০ থেকে ৯.৩০ সময়কে সাধারণত পিক টাইম বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
কি কি থাকছে অনুষ্ঠানমালায়? সংবাদ, নাটক, গান, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান, পলিটিক্যাল টক শো, লাইভ শো, মেলা, রিয়েলিটি শো, সিনেমা সবই থাকছে টেলিভিশনে। এর মাঝে কিছু টেলিভিশন চ্যানেল চলচিত্র প্রযোজনার সাথেও যুক্ত হয়েছে। নতুন সিনেমার প্রিমিয়ারও তাই হচ্ছে ছোট পর্দায়। নানান জরিপে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এটিএন বাংলা, চ্যানেল আই ও এনটিভি’র নাম শীর্ষ তিন তালিকায়। প্রিয় তিন অনুষ্ঠানের মাঝে আছে সংবাদ, নাটক ও টক শো।
বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্নেও টেলিভিশনের রয়েছে বাড়তি সুবিধা। কারণ পত্রিকা পড়তেও বিদ্যা লাগে। কিন্তু চোখ মেললেই দেখা যায় টেলিভিশন। সোজা কথায় পত্রিকায় সংবাদ হলো অন্যের চোখে দেখা, আর টেলিভিশন মানে হলো নিজের চোখে দেখা।
তবে এত সব ভালো খবর টেলিভিশনকে ‘বিপদজনক ক্ষমতা’ দিয়েছে বললেও ভুল হবে না। কারণ গণমাধ্যম ১৯৯০ এর পর থেকে অনেক স্বাধীনতা ভোগ করছে। যে স্বাধীনতার সুফল এবং কুফল নিয়ে অনেক কথাই আছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য প্রিভিউ নীতিমালা বলবৎ আছে। স্যাটেলাইট চ্যানেলের জন্য তাদের নিজেদের প্রিভিউ কমিটি আছে।
বর্তমানে প্রায় ২০ টি চ্যানেল ও বিটিভি প্রতিদিন অনেক অনুষ্ঠান ও সংবাদ প্রচার করে। নানা ইভেন্টও করছে চ্যানেলগুলো। সাংবাদিকের পক্ষে এতগুলো চ্যানেল পর্যবেক্ষণ করা খুবই কঠিন কাজ। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো পি আর সেকশন খুলেছে বলে সাংবাদিকরা মনে মনে নিশ্চয়ই ধন্যবাদ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে পথিকৃত চ্যানেল আই। এখন সবগুলো চ্যানেলেই কম বেশি পরিসরে পি আর সেকশন কাজ করছে।
বলতে গেলে বর্তমান ফরমেটের বিনোদন সাংবাদিকতা ও স্যাটেলাইট চ্যানেল সমান্তরালভাবে পথ পাড়ি দিয়ে চলছে। একে অপরের পরিপূরকও বলা যায়। যেমন প্রাথমিক অবস্থায় স্যাটেলাইট চ্যানেল খুব কম জায়গায় দেখা যেত, তখন সংবাদ পত্রের মাধ্যমেই অনেক বেশি মানুষের কাছে পরিচিত হয়েছে স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো। এখন প্রতিদিন দৈনিক বিনোদনে থাকছে স্যাটেলাইট চ্যানেলের নানা অনুষ্ঠানের খবর, নাটকের তারকার খবর, টেলিভিশনে প্রচারিত নতুন বিজ্ঞাপনের খবর ইত্যাদি। বিস্তারিত ও বৈচিত্রময় আয়োজন নিয়ে কাজ করছে ম্যাগাজিনগুলো। আবার অন্যদিকে বলা যায় স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো সাংবাদিকতার পরিধি বাড়িয়েছে। যেমন আগে যখন শুধু বিটিভি ছিল, টেলিভিশন সংবাদ ছিল কম। এখন স্যাটেলাইট চ্যানেলের কারণে টেলিভিশন বিটে একাধিক সাংবাদিক রাখার সুযোগও তৈরী হয়েছে।
আবার টেলিভিশন এবং সাংবাদিকতার যোগসুত্র হয়ে আছে রিয়েলিটি শো এর মাধ্যমে নতুন প্রতিভা আবিষ্কার ও তাদের সম্ভাবনা তুলে ধরার জায়গা। যেমন টিভি চ্যানেলগুলো এখন রিয়েলিটি শো আয়োজন করছে নতুন প্রতিভার খোঁজে। সংবাদ মাধ্যমে সে নতুনদের সম্ভবনা তুলে ধরা হচ্ছে বলেই মানুষ তাদের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন। কিছু অভিযোগ থাকলেও এই মুর্হূতে শোবিজে টেলিভিশনে রিয়েলিটি শো এর সম্ভাবনাময় তারকা সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।
নানা জরিপ বলছে দর্শক টেলিভিশনে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখতে পছন্দ করে। তবে এখন আর শুধু নাচ, গান, অভিনয়ে বিনোদন সীমাবদ্ধ নেই। খেলার খবর, লাইভ অনুষ্ঠান সম্প্রচার, ভ্রমনও বড় বিনোদন। আবার রাতের পলিটিক্যাল টক শোও এক শ্রেনীর দর্শকের কাছে অনেক বেশি আগ্রহের।
মিডিয়া ইমেজ ক্রিয়েট করে- বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির তো বটেই, দেশেরও। আবারও বলছি এটি হচ্ছে ক্ষমতার ‘বিপদজনক’ দিক। সামান্য অপব্যবহারেই এদিক ওদিক হতে পারে অনেক কিছু। যা ঘটছে, সবই আমি দেখাব বা লিখব, যা ইচ্ছে তাই আমি নির্মাণ করবো নাকি কতটুকু দেখালে, লিখলে পরিমিতি বজায় থাকবে সেটা মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। আমাদের দেশের মানুষের শিক্ষাগত যোগ্যতার হার যে পর্যায়ে আছে তারা কতটুকু গ্রহণ করতে পারেন সেটাও বিবেচনার বিষয়।
মিডিয়ার সাথে সাধারণ মানুষের পার্থক্য কি? সাধারণ মানুষের থাকবে আবেগ। আর মিডিয়ার থাকবে আবেগের ছোঁয়ায় সত্য ভাষণ। নানা সময়ে অনেক নিষিদ্ধ বা ক্ষতিকর জিনিষের প্রতি অনেক মানুষের আগ্রহ তৈরী হতে পারে। কিন্তু মিডিয়াকে বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে এটি অদূর ভবিষ্যতে ক্ষতিকর কিনা? বিশেষ করে স্যাটেলাইট চ্যানেলে প্রচারিত কিছু নাটকের ও বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু, ভাষা বিকৃতি ইত্যাদি দেখে অনেকের মনে হতে পারে স্বাধীনতা মানে যা ইচ্ছে তাই।
তাই সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকাও প্রশ্ন বিদ্ধ। এই মুর্হূতে দৈনিক পত্রিকাগুলো প্রতিদিন এক পাতা করে বিনোদন সংবাদ প্রকাশ করছে। সপ্তাহের একটি দিনে থাকছে দুই থেকে চার পৃষ্ঠার আয়োজন। থাকছে অনলাইন বিনোদন সংবাদ। ম্যাগাজিন তো থাকছেই। এত বড় পরিসরেও সাংবাদিকতায় ‘সমালোচনা ও গবেষণা’ বলতে গেলে অনুপস্থিত। সিনেমা নিয়ে তাও সমালোচনা আছে। কিন্তু লক্ষ্যযোগ্য বিষয় ৭০ শতাংশ মানুষ টেলিভিশনে যা দেখছেন তা নিয়ে সমালোচনা, গবেষণা প্রায় অনুপস্থিত। এখন চলছে মূলত প্রোমোশন সাংবাদিকতা। শিল্পী ও তার কাজের প্রচার ও প্রসার সাংবাদিকতা বললেও ভুল হবে না। যদিও এটি সাংবাদিকতার একটি দিক। কিন্তু প্রশ্ন থাকে ১০ বছর পরে একজন নবীন সাংবাদিক এখনকার সংবাদ ঘাটলে কি রেফারেন্স পাবেন? সরকারের কোন চাপ বিনোদন সাংবাদিকতায় দৃশ্যমান নেই। এমনকি টেলিভিশন চ্যানেলও কোন বিনোদন সাংবাদিককে হুমকি দিয়েছেন এমনও শোনা যায়নি। অর্থাৎ বনে কোন বাঘ নেই, মনে বাঘ কেন? বিনোদন সাংবাদিকরা কি তাহলে তারা ইন্ডাস্ট্রি বা উপরের কর্মকর্তাদের প্রেসার অনুভব করছেন? অথবা কেউ কেউ নিজেও কি কোনভাবে সমালোচনার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন?
টেলিভিশন এবং বিনোদন সাংবাদিকতার একটি সাম্প্রতিক ব্যার্থতা এখানে তুলে ধরতে চাই। বলা হয়ে থাকে মিডিয়া দেশের মসনদকেও নাড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু টেলিভিশন, সিনেমা, গান ও অন্যান্য সেক্টর মিলিয়ে কোটি কোটি টাকার যে ইন্ডাস্ট্রি তার জন্য বাজেটে বড় বরাদ্দ রাখার সুযোগ আমরা হারিয়েছি। সংবাদ, টক শো, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, অনলাইনের মাধ্যমে এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যেত। যেমন বাজেটে ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ চাওয়া যেত যা থেকে টেলিভিশন অনুষ্ঠান, সিনেমা নির্মাণ বা এই সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি ক্রয় ও নানা কাজে সংশ্লিষ্টরা কম সুদে ব্যাংক লোন নিতে পারতেন। এতে করে নতুন ও মেধাবি উদ্যোক্তারা আগ্রহী হতেন। এই সুযোগ মিডিয়ার ছিল এবং পরবর্তী বাজেটের জন্যও আছে।
টেলিভিশন এবং বিনোদন সাংবাদিকতা- দুই নিয়ে একটি সাধারণ অভিযোগ আছে। তা হলো ‘তারকা’ ‘জনপ্রিয়’, ‘আলোচিত’, ’নন্দিত’, কিংবদন্তি’ বিশেষণগুলোর যত্রতত্র ব্যবহার। এর ফলে একজন নতুনের আর সত্যিকার অর্থে তারকা হবার প্রয়োজন অনুভব হয় না। এ বিষয়েও সচেতনতা জরুরী।
সংবাদপত্র, টেলিভিশন এখন পর্যন্ত বিজ্ঞাপন দাতাদের উপরেই কম-বেশি নির্ভরশীল। এ কারণেও মাঝে মাঝে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। বলা হয়, বিজ্ঞাপন দাতা + টেলিভিশন + সংবাদ মাধ্যম এক হয়ে জনপ্রিয়তা ‘তৈরী’ করা সম্ভব। একে বলা চলে ম্যানুফেকচারড হাইপ। লক্ষ্য করে দেখবেন কাউকে কাউকে বলা হলো তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয়। অথচ তিনি হয়তো শহরের একটি অংশের তরুণদের মধ্যেই জনপ্রিয়। অথচ টেলিভিশন দর্শকের ৭০ ভাগই শহরের বাইরের। তাদের মধ্যে কি তরুণ নেই?
বিশেষ করে ১৯৯০ এর পর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বেড়েছে। সংবাদপত্র, চ্যানেলও বেড়েছে। সেই সাথে অনেক কর্মসংস্থান হয়েছে। সংবাদ কর্মীদের বেতন ও সুযোগ সুবিধা বেড়েছে। তবে সাংবাদিক প্রশিক্ষণের তেমন সুযোগ না থাকায় যোগ্য সাংবাদিকের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিশেষ করে টেলিভিশন সাংবাদিকতায় একজন প্রতিবেদকের ভুল তথ্য, ভুল উচ্চারণ ও উপস্থাপন সাংবাদিকদের ইমেজ মলিন করতে পারে। সাংবাদিকের দৃষ্টিকোণ একপেশে হলে তা আরও বিপদ বয়ে আনতে পারে।
বারবারই বলা হলো বিপদজনক ক্ষমতা রয়েছে টেলিভিশন এবং সংবাদ মাধ্যমের। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো মানুষ মিডিয়াকে বিশ্বাস করে। আর অভিযোগ হলো মিডিয়া নিজের সমালোচনা পজিটিভলি নেয় না। প্রথম পৃষ্ঠায় ঘটনা ছাপলে প্রতিবাদ ছাপে ভেতরে, অনাদরে। বিনোদনের ক্ষেত্রেও রয়েছে নিজস্ব পছন্দ- অপছন্দের ইকুয়েশনের অভিযোগ।
তাই এ বছরের শ্লোগান হোক ”চাপ মুক্ত মিডিয়া, মিডিয়ার সু-স্বাধীনতা। স্বাধীনতার প্রয়েজনীয়, নিরপেক্ষ ব্যবহার ও প্রয়োগ”।
সৈকত সালাহউদ্দিন
লেখক পরিচিতি: সাংবাদিক ও মিডিয়া কনসালটেন্ট
ক. নির্বাহী সম্পাদক: পাক্ষিক আনন্দভুবন
খ. প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী সম্পাদক: পাক্ষিক আনন্দ আলো (২০০৪-২০০৮)
গ. ওর্য়াকশপ- ওর্য়াল্ডভিউ টেলিভিশন ট্রেনিং কোর্স ২০০২ মুভিজ টুডে (ফাদার গাস্তন রুবের্জ) ২০০৭
ঘ. কনসালটেন্ট: সুপার হিরো সুপার হিরোইন ২০০৯ (আয়োজনে বিএফডিসি, মার্কেট এক্সেস গ্রুপ ও এনটিভি)
ঙ. জাতীয় চলচিত্র পুরষ্কার বিতরণি অনুষ্ঠান ২০১০ (আয়োজনে তথ্যমন্ত্রণালয়, বিএফডিসি ও বিটিভি)