ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

বন্ধু তোকে মিস করছি ভীষণ...

অনন্যা আশরাফ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১১

ক্লোজআপ ওয়ান খ্যাত সঙ্গীতশিল্পী আবিদ শাহরিয়ার নেই। সমুদ্র কেড়ে নিয়েছে তার প্রাণ।

আবিদের তো এভাবে চলে যাওয়ার কথা ছিল না। অসময়ে আবিদকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তার বন্ধুরা। তাদেরই একজন হলেন হলেন সাজিয়া সুলতানা পুতুল। গত বছরের বন্ধুদিবসে তারা একসঙ্গে কাটিয়েছে দীর্ঘসময়। বছর ঘুরে আবারও এসেছে বন্ধু দিবস। পুতুলের জন্য নিয়ে এসেছে এক বিশাল শুন্যতা। প্রিয় বন্ধু আবিদকে ভীষণ মিস করছেন তিনি।

আবিদ শাহরিয়ার আর সাজিয়া সুলতানা পুতুল দুজনই ছিলেন ক্লোজআপ ওয়ান প্রথম আয়োজনের প্রতিযোগী। গ্রুমিং সেশনে তাদের পরিচয়। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। একসঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে গিয়ে তারা হয়ে ওঠেন পরস্পরের প্রিয় বন্ধু। আবিদ আর পুতুলে যৌথ উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ক্লোজআপ ওয়ানের তৃতীয় আয়োজন। এছাড়াও বিটিভির একটি গানের অনুষ্ঠানও তারা একসঙ্গে উপস্থাপনা করেছেন।

প্রিয় বন্ধু আবিদকে হারিয়ে এতোটাই শোকাহত পুতুল, এই শোক প্রকাশের ভাষা তিনি হারিয়ে ফেলেছেন। আবিদ সম্পর্কে পুতুল বাংলানিউজকে বললেন, `মিডিয়ায় আমার একমাত্র বন্ধুর নাম আবিদ। তার মতো প্রাণবন্ত বন্ধু আমার জীবনে আসেনি, আসবে কিনা জানি না। সে হাসতে জানতো, হাসাতে জানতো। আবিদ এমন একটা ছেলে ছিল যে, তাকে সবাই পছন্দ করতো। খুব সহজ-সরল ছিল সে। এমনিতে দেখতে শান্ত-শিষ্ট দেখালেও যে কোনো আড্ডায় আবিদ হয়ে উঠতো মধ্যমণি। `

বন্ধুত্বের স্মৃতিচারণ করে পুতুল বললেন, `২০০৫ সালে ক্লোজআপ ওয়ানের গ্রুমিং সেশনে গিয়ে অন্য অনেকের পাশাপাশি আবিদের সঙ্গে আমার পরিচয়। আমাদের ক্যাম্পের সবচেয়ে নম্র-ভদ্র আর বিনয়ী ছিল সে। গ্রুমিং সেশনের ফাঁকে যখন আমরা সবাই মিলে আড্ডা দিতাম, তখন তার মুখ থেকে বের হতো কথার ফুলঝুরি। মুহূর্তে আড্ডা মাতিয়ে ফেলতো সে। `

ভালো বন্ধু তাকেই বলা যায়, যার কাছ থেকে সবসময় পাওয়া যায় অনুপ্রেরণা-সহযোগিতা-সহমর্তিতা। পুতুল জানালেন আবিদের কাছ থেকে এর সবই পেয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে পুতুল বলেন, `ক্লোজ আপ ওয়ানের তৃতীয় আয়োজন উপস্থাপনার জন্য অন্য অনেকের সঙ্গে আবিদ আর আমার ডাক পড়ে। অডিশনে দুজনই নির্বাচিত হলাম। শুরু হলো আমাদের একসঙ্গে পথচলা। আবিষ্কার করলাম অন্য এক আবিদকে। স্টেজে ও টিভিতে বেশ কিছু অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করায় আবিদ ছিল আমার চেয়ে অভিজ্ঞ। উপস্থাপনা করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে আমি আটকে যেতাম, নার্ভাস লাগতো। তখন আবিদ আমাকে সাহস দিত, উৎসাহ দিত। এভাবেই একসময় আমাদের বন্ধুত্বটা এমন পর্যায়ে পৌছালো যে, আমরা হয়ে উঠলাম একে অন্যের জন্য অপরিহার্য। `

পাশাপাশি উপস্থাপনার স্মৃতিচারণ করে পুতুল বলেন, `ক্লোজআপ ওয়ানের শুটিংয়ে যখন সারা দিন এফডিসিতে থাকতাম, তখন কীভাবে যে সময় কেটে যেত! ভীষণ উপভোগ করতাম একজন আরেকজনের সঙ্গ। আমাদের দেখে সুরকার সুজেয় শ্যাম স্যার হেসে হেসে বলতেন, তোদের দুজনকে দেখলে মনে হয়, দুটো সাদা পায়রা এফডিসিতে ঘোরাঘুরি করছে। সেই দুটো পায়রার একটা কোনও অভিমানে দূর অজানায় ডানা মেলে উড়ে গেল আমি জানি না। আবিদের এই অসময়ে চলে যাওয়া এখনও বিশ্বাস হতে চায় না। মনে হয় আমি বুঝি দুঃস্বপ্নের মধ্যে আছি। এখনই ঘুম ভেঙ্গে দেখবো, মুখে মিটি মিটি হাসি নিয়ে আবিদ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। `

বাংলাদেশ সময় ১৫৫০, আগস্ট ০৬, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।