‘হুমায়ূন আহমেদের কোলন ক্যান্সারটি বেশ জটিল রূপ নিয়েছে। কোলনের তিন জায়গায় ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে।
হুমায়ূন আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে সিঙ্গাপুর থেকে করানো স্বাস্থ্যপরীক্ষার কাগজপত্র দেখিয়েছিলেন প্রফেসর সারওয়ার আলমকে। লেখককে তিনি কালবিলম্ব না করে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
বাংলানিউজকে প্রফেসর সারওয়ার আলম বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে কোলন ক্যান্সার খুব একটা বিপজ্জনক নয়। তবে হুমায়ূন আহমেদের কোলন ক্যান্সার প্রাথমিক স্তর অতিক্রম করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে উন্নততর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসায় এটি আরোগ্য হওয়া সম্ভব বলে আমরা আশাবাদী। এজন্য তাকে বহুবার কেমোথেরাপি ও লেজারথেরাপি নিতে হতে পারে। কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। ’
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটানের ‘মেমোরিয়াল স্লোয়ান কেটারিং ক্যান্সার সেন্টার’ নামের যে হাসপাতালটিতে হুমায়ূন আহমেদ চিকিৎসার জন্য ভর্তি হচ্ছেন সেটি বিশ্বের এক নম্বর ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র বলে জানান প্রফেসর সারওয়ার আলম।
হুমায়ূন আহমেদের ছোট ভাই কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক আহসান হাবীব বাংলানিউজকে বলেন, হুমায়ূন আহমেদ এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে গেছেন। দেশে থেকেই হাসপাতালের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করে গেছেন। আশা করছি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি হবেন তিনি।
কোলন ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য হুমায়ূন আহমেদকে দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করতে হতে পারে বলে জানান আহসান হাবীব। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করে আহসান হাবীব জানতে পেরেছেন, ক্যান্সারের ধরন ও পরিধি যাচাই-বাছাই করার পর চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেবেন। অস্ত্রোপচারের পর আট মাসে তাকে অন্তত আটটি কেমোথেরাপি নিতে হবে। পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার জন্য সব মিলিয়ে এক বছর বা তারচে বেশি সময় লেগে যেতে পারে।
হুমায়ূন আহমেদের প্রধান সহকারী জুয়েল রানা বাংলানিউজকে জানান, লেখক চলতি মাসের এক তারিখে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সিঙ্গাপুর যান। সেখানকার মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ৮ সেপ্টেম্বর তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। সেই পরীক্ষায় তার কোলনে টিউমার ধরা পড়ে। কর্তব্যরত চিকিৎসক একে ক্যান্সার হিসেবে শনাক্ত করেন। জুয়েল রানা বলেন, পুরো বিষয়টিকেই স্যার সহজভাবেই গ্রহণ করেছেন। দেশ ছাড়ার পূর্ব মুহূর্তেও তিনি ছিলেন খুব স্বাভাবিক।
লেখকের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে দেশ ছাড়ার আগেও হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বেশ স্বাভাবিক এবং প্রাণচঞ্চল। চিকিৎসায় তিনি সেরে উঠবেন বলেও পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করে গেছেন।
বাংলাদেশ সময় ১৯১৫, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১১