ঢাকা: বাংলাদেশের জামদানী, খাদি এবং ভারতের বালুচরির বাজার নিজ দেশের বাইরে সম্প্রসারণের তাগিদ দিয়েছেন দুই দেশের জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার ও গবেষকরা।
একই সঙ্গে তারা প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে নিজেদের ডিজাইনের পোশাক কিভাবে ক্রেতাদের কাছে সহজে পৌঁছে দেওয়া যায় সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের লাইফস্টাইল বিভাগ ও ফ্যাশন পাঠশালার আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় দুই দেশের আধুনিক এবং ঐতিহ্যবাহী পোশাকের নানা দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ভারতের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পল এবং বাংলাদেশের সুপ্রতিষ্ঠিত জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনাররা।
বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে ফ্যাশন পাঠশালায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় অংশ নেন বাংলাদেশের পোশাক ডিজাইনার ও গবেষক চন্দ্রশেখর সাহা, টাঙ্গাইল শাড়ি কুটিরের মুনিরা এমদাদ, ফ্যাশন পাঠশালার উদ্যোক্তা এবং ডিজাইনার এমদাদ হক, ডিজাইনার চন্দনা দেওয়ান, প্রাইড গ্রুপের মো. মোমিনসহ অনেকেই।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক রংঙের (ভেজিটেবল ডাই) ব্যবহারকারী ডিজাইনার উদ্যোক্তা রুবী গজনবী।
আলোচনার সঞ্চালক ছিলেন বাংলানিউজের হেড অব নিউজ মাহমুদ মেনন খান।
আলোচকরা দুই দেশের পোশাক, বিশেষ করে বাংলাদেশের জামদানী, খাদি এবং ভারতের বালুচরির বাজার নিজ নিজ দেশের বাইরে সম্প্রসারণের তাগিদ দেন। এছাড়া তারা প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে আধুনিক পোশাক কিভাবে ক্রেতাদের কাছে সহজে পৌঁছে দেওয়া যায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
তারা একমত হন, এ ধরণের আলোচনার মাধ্যমে পারস্পারিক সম্পর্ক আরও ফলপ্রসু হবে এবং অদূর ভবিষ্যতে দুই দেশের ডিজাইনারদের পোশাক নিয়ে মেলা বা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
তারা বলেন, সে আয়োজনে দুই দেশের অংশগ্রহণ সমান হবে।
ভারতেও বাংলাদেশি পোশাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, আর তাই বাজার সম্প্রসারণেরও সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন বিশিষ্ট ডিজাইনার ও গবেষক চন্দ্রশেখর সাহা। স্বাধীনতার ৪০ বছরে এদেশে বুটিক হাউজগুলো স্থানীয় ফ্যাশনের বিস্তারের মাধ্যমে সর্বস্তরের ক্রেতাদের কাছে পৌঁছেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পোশাক তৈরির চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বাজারজাত করা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, শুধু পোশাক তৈরির মাধ্যমে সীমাবদ্ধ না থেকে, একসঙ্গে কাজ করার একটি প্লাটফর্ম তৈরি করতে হবে।
সভায় উপস্থিত ওয়ার্ল্ড ক্রাফট কাউন্সিলের সদস্যরা বলেন, এই প্লাটফর্ম তৈরিতে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।
আলোচকরা বলেন, আজকের এই আলোচনা শুধু টেবিলেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এরপর থেকে দুই দেশের ডিজানাইরদের যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে এবং এর মধ্য দিয়েই আমরা ক্রেতাদের ভালো কিছু করে দেখাব, যা পৃথিবীতে আগে কখনো হয়নি।
বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে, এই গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের পণ্যকে সেই মানে নিয়ে যাওয়া এবং বিশ্বের বাজারে স্বগর্বে টিকে থাকার জন্য সবাই একসঙ্গে কাজ করার বিকল্প নেই বলেও মত দেন বক্তারা।
ভারতীয় অতিথি ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পল বাংলাদেশের স্বনামধন্য ডিজাইনারদের একসঙ্গে পেয়ে এবং তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ পেয়ে বাংলানিউজকে ধন্যবাদ জানান। তিনি এদেশের ফ্যাশন ডিজাইনারদের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি জানান, তার সব শোয়ের পেছনে ভালো কোনো উদ্দেশ্য থাকে। তিনি চান কোনো ভালো কাজে তার কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করা হোক। এদেশের অসহায় এসিডদগ্ধ নারীদের স্বাবলম্বী করতে এবং তাদের হাতের কাজ নিয়ে ল্যাকমি ফ্যাশন উইকের মতো আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রদর্শনের পরিকল্পনার কথা জানান অগ্নিমিত্রা।
বাংলানিউজ ও ফ্যাশন পাঠশালার অয়োজনে উপস্থিত হয়ে আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য আলোচকদের ধন্যবাদ জানানো হয় এবং সব ধরনের ভালো কাজের সঙ্গে বাংলানিউজ সব সময় থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে অনুষ্ঠান শেষ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১২