ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

বন্ধন

ওয়ালীউল্লাহ মিঠু | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৪
বন্ধন

যখন আপনি চাচ্ছেন আপনার জীবনে প্রেম-ভালবাসা সারাটি জীবন সঙ্গী হয়ে থাকুক। আর এই পরম চাওয়ার সাথে যখন আপনার প্রিয় মানুষটিই আপনার জীবনসঙ্গী।

তখন দু‘জনের বিবাহ বন্ধন কীভাবে মধুর এবং সুদৃঢ় করা যায় সেটাই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।

যা করবেন-

সাস্থ্যকর খাবার খান:
ব্রিটেনের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় ২০১২ সালে পাওয়া গেছে যে, যারা বেশি পরিমাণে ফল এবং শাবসবজি খায় তারা উচ্চ মাত্রার মানসিক প্রশান্তি লাভ করে। এসব খাবার আপনার খাবার তালিকায় যুক্ত করলে রুচি বাড়বে, ঘুম ভাল হবে এবং সাধারণ মানুষের থেকে বেশ ভাল একটা বিবেচনা শক্তি তথা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে। নিজের সাস্থ্যের প্রতি সবচেয়ে বেশি যত্ন নেয়াকে সব সময় প্রাধান্য দিতে হবে।       

শরীর চর্চায় সময় দিন:
এর অর্থ এই নয় যে, প্রচুর শ্রম দিতে হবে। প্রিয় মানুষটি আপনার একেবারে শূণ্য ফিগার দেখে খুশি হবে এই আশায় শরীর চর্চা করতে হবে তাও না। যারা নতুন বিয়ে করেছেন তারা পোশাক পরে বা হালকা খালি শরীরে আত্মবিশ্বাসী হয়ে শরীর চর্চা করতে পারেন এতে করে শরীরের ভাব প্রকাশক হরমোন নিয়ন্ত্রিত হয় এবং হতাশা দূর হয়। একাশরীর চর্চা করতে পারেন আবার সঙ্গীকে নিয়েও করতে পারেন।

প্রথম দেখার স্মৃতি:
প্রথম সাক্ষাতের কথা স্বরণ করতে হবে মাছে মাঝে। প্রথম সাক্ষাতের অভিজ্ঞতাটা দু‘জনের কাছে অনেক মূল্যবান এবং উপভোগ্য ছিল তার স্বীকৃতি দিতে হবে এবং প্রকাশ করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে এমন বলতে পারেন,  আমি সেই রকম রোমান্টিক ডিনার ভুলতে পারিনা এবং বারবার আশা করি। এতে আপনার সঙ্গী খুশি হবে এই ভেবে যে, সে আপনার জন্য যা করেছে তাতে আপনি সন্তুষ্ট। ফলে সে নিজেকে স্বার্থক মনে করবে। এতে আপনার প্রতি তার ভালোবাসা আরও বাড়বে।

সঙ্গীর বন্ধুর সাথে বন্ধুত্ব:
আপনার সঙ্গীর বন্ধুদের সাথে একটা ভাল সম্পর্ক থাকা দরকার। যদি এখনও সেই সম্পর্কটা না হয়ে থাকে তবে এখনি বেরিয়ে পড়েন ঘুরতে কয়েকজন মিলে। আপনার সঙ্গীর বন্ধুদের সাথে সহজে মিশে যান, আপনার প্রিয় সঙ্গী তা দেখে নিঃসন্দেহে খুশি হবে। এই বিষয়টা আপনার সঙ্গীর সাথে সম্পর্কের উন্নয়নে লক্ষনীয়ভাবে প্রভাব ফেলতে সক্ষম। তবে সামাজিকতাকে খেয়াল করতে হবে নইলে আবার হীতে বিপরীত হবে পারে।

সঙ্গীর পরিবারের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখুন:
আপনার সঙ্গীর জন্য এটা একটা উপহার হবে যখন সে দেখবে যে, আপনি তার বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়ের সাথে ভালভাবে মিশে গেছেন। এমন হতেই পারে যেমন এমন হতে পারে আপনার সঙ্গীর পরিবারের বিশেষ কারও ব্যবহার ভাল লাগছে না। এই বিষয়টাই অধিকাংশ বিয়ে বন্ধনে ফাটল ধরাতে কাজ করে আমাদের দেশে। তাই সাবধান অন্তত আপনার সঙ্গীকে খুশি রাখতেই কৌশলী হতে হবে। একটু না হয় সহ্য করে মানিয়েই নিলেন।   

স্পর্শ:
হাত ধরুন। সকালে যখন কফি খান তখন তাকে স্পর্শ করতে পারেন। টিভি দেখার সময় পাশাপাশি বসা, এসব ছোট ছোট বিষয়গুলোই দেখা যায় সারাদিনের দূরত্ব দূর করে দুজনকে আরও কাছে আসার পরিবেশ তৈরি করে।

অতীত টেনে বর্তমান নষ্ট:
সঙ্গীর জীবনে যদি এমন কিছু ঘটে থাকে যা সামনে এলে দু‘জনের সম্পর্কে শীতল নেতিবাচক লক্ষণ দেখা দেয়। এমন বিষয় অবশ্যই টেনে এনে তাকে ছোট দেখানোর অভ্যেস অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে।  

একসঙ্গে রান্না করা:
জমিয়ে রাখা বা প্রতিদিনের নির্ধারিত খাবারের তালিকা ভঙ্গ করে মাঝে-মধ্যে নতুন কোনো খাবার দু‘জনে মিলে রান্না করে খেলে একটা নতুনত্বের ছোঁয়া আসে ভালোবাসার ক্ষেত্রে।

শুনতে হবে:
সঙ্গীর কথা মন দিয়ে শুনতে হবে। সে যখন আগ্রহ নিয়ে কিছু বলতে চায় তখন যদি আপনি টিভি দেখা বা ল্যাপটপে কাজ করতে ব্যস্ত থাকেন তবে সম্পর্কে শীতল ফাটল ধরতে পারে এখান থেকেই।  

ব্যয় ও সঞ্চয়:
সব প্রকারের বিল পরিশোধ করা, বাসা ভাড়া সংসার চালানোর খরচ সময়মত দিতে হবে। আর দুজন যদি আয় করেন তবে খরচের কিছু দায়িত্ব দুজনকেই  নিতে হবে। আর আয় যেমনই হোক ভবিষ্যতে বিপদ-আপদের জন্য কিছু টাকা জমাতে হবে।

একে অপরের সম্পর্কে ভাল কথা বলা:
এমন যদি হয়, সঙ্গীর সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝগড়া মেটাতে পারিবারিক বৈঠক বসেছে। সেখানে সঙ্গীর সাথে খুব একান্ত সমস্যা নিয়ে কোনো কথা না ওঠানোই ভালো। এসব পরিস্থিতিতে সবার সাথে ভালভাবে ধীর, নমনীয় কণ্ঠে রাগ না করে, কথা বলতে হবে। এতে দ্রুত ভালো সমাধান আসবে।

অনুরোধ রক্ষা:
সঙ্গী যদি কোনো অনুরোধ করে তবে তার প্রয়োজনটা গুরুত্ব দিতে হবে। তার অনুরোধটা রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আর যদি তাৎক্ষনিক অনুরোধ রাখা সম্ভব নাও হয় তারপরেও তাকে যৌক্তিকভাবে বোঝানো যেতে পারে কিন্তু কখনই উদ্ধত আচারণ বা বিরক্তি প্রকাশ করা যাবে না।

বাড়ির কাজ:
বাড়ির কাজ নিয়ে অনেক সময় বিভক্তি চলে আসে দু‘জনের মাঝে। মাঝে মাঝে কিছু কাজ সে করতে চায় না বা সেই কাজের বিষয়ে তার অন্য মন্তব্য থাকে। সেক্ষেত্রে তার কথার মূল্য দিতে হবে। সে কি চায় সেটা শুনতে হবে। তখন পারলে নিজে সে কাজ করতে হবে নইলে লোক দিয়ে কাজটা করতে হবে। এ বিষয়ে বাড়ির কাজ নিয়ে এক সাথে বসে সমাধানে আসতে হবে, কারণ দু‘জনেরই তো দরকার বাড়ির কাজ সমাধান করে সংসার সুন্দর রাখা।
এভাবে দু‘জনের বন্ধন আরো দৃঢ় করতে বারবার এই বিষয়গুলো প্রয়োগ করতে পারেন।   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।