হবিগঞ্জ: দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহতা কেটে গেলেও কাটেনি বিলাল আহমেদের (২৫) জীবনের স্থবিরতা। করোনাকালের দেনায় জর্জরিত এই যুবক এখনও কর্মহীন, মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন একটি কাজের জন্য।
বিলাল আহমেদ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের বাঘআছড়া গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে। পরিবারে পাঁচ সদস্যের সবাই এখন বেকার।
বিলাল জানান, তার বাবার দ্বিতীয় সংসার থাকায় অন্যত্র বসবাস করছেন। যে কারণে মা ও চার ভাই-বোনকে নিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবারটির দেখাশোনা করেন তিনিই। করোনা সংক্রমণ শুরুর আগে ৫/৬ হাজার টাকা মাসিক বেতনে চাকুরী করতেন। সংক্রমণের ফলে হাতছাড়া হয় সেই চাকুরী।
করোনাকালে কর্মহীন হওয়ায় সংসার চালাতে গিয়ে ৪০ হাজার টাকা ঋণ করেন বিলাল। এ ঋণের জন্য প্রতিমাসে ৪ হাজার টাকা সুদও দিতে হচ্ছে তাকে। দিনমজুরের কাজ করে কিছু টাকা আয় করলেও সেই টাকা খরচ হয়ে যায় সুদ মিটাতেই।
তিনি জানান, পুরো টাকা শোধ করার জন্য মহাজন চাপ দিচ্ছেন। দিনমজুরের কাজটাও সব দিন থাকে না। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন কাজ করতে পারেন তিনি।
তার মা আগে মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে সংসারে কিছু অর্থ যোগ করতেন জানিয়ে বিলাল জানান, মায়ের সেই কাজটাও এখন নেই। বিলালের দুই বোন ও এক ভাই ছোট। তাদের মুখে কোনোদিন দু’বেলা, কোনোদিন একবেলা খাবার তুলে দিতে পারেন হতভাগ্য এই বড় ভাই।
হবিগঞ্জ-রাজিউড়া সড়কের পাশে একটি চায়ের দোকানে বিলালের সঙ্গে দেখা হলে অশ্রুসিক্ত বিলাল বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি কারো কাছে অর্থ সহায়তা চাই না, শুধু একটা কাজ চাই। পরিশ্রমের মাধ্যমে ভাই-বোন ও মায়ের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দিতে চাই’।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২২
বিএ/এনএস