ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বরিশালের প্রথম ব্যান্ড ক্রিডেন্সের ভোকালিস্ট টুটুল আর নেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২২
বরিশালের প্রথম ব্যান্ড ক্রিডেন্সের ভোকালিস্ট টুটুল আর নেই

বরিশাল: স্বাধীন বাংলায় বরিশালের প্রথম ব্যান্ড ক্রিডেন্সের ভোকালিস্ট কুদরত এলাহী টুটুল ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন)।

তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।

শনিবার (০৩ নভেম্বর) সকাল সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে নগরে মুসলিম গোরস্থান রোড এলাকার বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

মৃতের বড় ছেলে তৌসিফ এলাহী বলেন, বাবা বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হই আমরা। আজ আসর বাদ বগুরা রোড চৈতন্য স্কুল প্রাঙ্গণে বাবার নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর দাফন করা হবে।

টুটুল ছিলেন একাধারে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।  

তার মৃত্যুতে বরিশালে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃতের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোআ চেয়েছেন স্বজনসহ সহশিল্পীরা।

মৃতের বন্ধু ও ক্রিডেন্স ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য জিল্লুর রহমান বলেন, ৫৫ বছর অধিক সময় ধরে একসঙ্গে পথ চলা আমার ও টুটুলের। কত স্মৃতিই না আজ হাতড়ে বেড়াতে হচ্ছে। চলতি বছরের আমার দুই ভাই আমাকে ছেড়ে গেছে, এখন সব থেকে কাছের বন্ধুটিও ছেড়ে গেল। সবাই ওর জন্য দোআ করবেন।

তিনি বলেন, এসএসসি পরীক্ষা শেষে টুটুল ঢাকায় গিয়েছিল পড়াশুনা করতে। তবে সে কিছুদিন পরে বরিশালে ফিরে আসে এবং আমাদের ব্যান্ডে ভোকালিস্ট হিসেবে যোগ দেয়।

তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে আমাদের ব্যান্ডের যাত্রা শুরু হয়। তখন ব্যান্ড বলা হতো না। পপ গ্রুপ বলা হতো। আজম খান ও ফেরদৌস ওয়াহিদ পপ গ্রুপ ছিল ঢাকায়। সেই সময়ে রিন্টু, রফিক, কাওসার, জন মাইকেল চৌধুরী পিন্টু ও আমি ক্রিডেন্স ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। এরপর টুটুল এসে যোগ দিলে আমাদের ব্যান্ড আরও চাঙ্গা হয়। তখনকার যুব সমাজের মাঝে টুটুল বেশ জনপ্রিয় ছিল। স্টেজে গান গাইতে উঠলেই ওয়ানমোর শব্দটি শোনা যেত। এককথায় মানুষজন পাগল ছিল ওর প্রতি। আর আমি ও টুটুল একসঙ্গে গান গাইলে তো কথাই ছিল না।

জিল্লুর রহমান আরও বলেন, আমার একটি গান বিটিভিতে রেকর্ডিং হয়েছিল আর টুটুলের 'স্বর্ণালী স্বপ্নিল আজ রাতে' নামের একটি গানও রেকর্ডিং হয়েছিল। দুটি গানই প্রচার হয়েছিল।

জিল্লুর রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে ব্যান্ডের সবাই আমরা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসভবনে থেকে ভয়ানক সেই রাতের সাক্ষী হয়েছিলাম। ভাগ্যক্রমে রিন্টু পারিবারিক কারণে সেদিন ঢাকায় যেতে পারেনি। কিন্তু সে আমার জীবনের সব থেকে ঘনিষ্টজন ছিল।

এ ব্যান্ডের সঙ্গে নব্বই দশ থেকে পথ চলতে থাকা মিন্টু চৌধুরী, সবীর প্যাট্রিক মধু ও সমরেশ রায় পলাশ বলেন, টুটুল ভাইসহ এ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাকালীন সবাই বন্ধুসুলভ ছিলেন। সবাই একসঙ্গে হলে আড্ডায় মেতে উঠতাম জীবনের এই বয়সে এসেও। তাদের কাছ কতকিছু শিখেছি। কিন্তু এভাবে চলে যাবেন ভাবতে পারিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২২
এসএম/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।