ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনায় শীতের পিঠা বিক্রির ধুম

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২২
খুলনায় শীতের পিঠা বিক্রির ধুম

খুলনা: হেমন্তের নতুন চালে শীতের পিঠা বানানোর ধুম পড়েছে খুলনায়। মোড়ে মোড়ে বাহারি রকমের পিঠা তৈরি করছেন দোকানিরা।


সন্ধ্যার পর পর হিমেল হাওয়ায় ধোয়া ওঠা গরম ভাপা পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করছেন বিভিন্ন বয়সের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। শহর ও শহরতলীর ফুটপাত, রাস্তার মোড়, হাট-বাজারগুলোতে এসময়ে ভাপা পিঠার পাশাপাশি অন্যান্য পিঠাও বিক্রি হয়। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে পিঠা বিক্রি ও খাওয়ার পালা। নতুন চালের মন মাতানো গন্ধে ভরে ওঠে চারপাশ।

এমন পরিবেশে শীতের পিঠা খেতে কার না ভালো লাগে। ব্যস্ত এ শহরে অনেকেরই বাসায় পিঠা তৈরি করার সময় নেই। তাই শীতের বিকেল কিংবা সন্ধ্যার হিমেল হাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে পিঠা খেতে অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকানগুলোতে।
নগরীর তারের পুকুরপাড় এলাকায় নুরুজ্জামানের দোকানে পিঠা খেতে আসা নেয়ামুল বারী জানান, এখানের পিঠার স্বাদই আলাদা। বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে প্রতিবছরই এই দোকানে পিঠা খেতে আসি। কারণ এখানে চিতই পিঠার সঙ্গে খেজুরের গুড় এবং সরিষা ও ধনে পাতার ভর্তা পাওয়া যায়।

পিঠা খেতে আসা আবু মুসা গাজী বলেন, সময় পেলেই সন্ধ্যার পর এখানে পিঠা খেতে আসি। নু রুজ্জামানের  দোকানে খেজুরের গুড়ের পাশাপাশি বেশ কয়েক পদের ভর্তা দিয়ে পিঠা খাওয়া যায়। তাই এখানে পিঠার স্বাদ নিতে আসি।

পিঠা বিক্রেতা নুরুজ্জামান জানান, এবার চালের দাম বেশি হলেও আগের মতোই প্রতিটি চিতই পিঠা ৫ টাকা রাখা হচ্ছে। বিক্রিও বেশ ভালো।

সোলায়মান নগর এলাকার পিঠা বিক্রেতা মো. রফিক জানান, এখানে নতুন খেজুরের গুড় ও নতুন চালের গুঁড়া দিয়ে ভাপা পিঠা বানানো হয়। প্রতিটি ভাপা পিঠার দাম ১০ টাকা। এছাড়া কুলি পিঠা ১০ টাকা ও পাটিসাপটা পিঠা ১৫ টাকা দরে বিক্রি হয়।

সেখানে পিঠা কিনতে আসা মেসের উদ্দিন জানান, ভ্রাম্যমাণ এই দোকানের পিঠার মান ও স্বাদ ভালো। তাই এখান থেকে পিঠা কিনি।

নগরীর বেশ কয়েকটি পিঠার দোকান ঘুরে দেখা গেছে, তারের পুকুর পাড়, রূপসা ঘাট এলাকা, সাত নম্বর ঘাট,  নিউ মার্কেট, পাইওনিয়র কলেজের সামনে, রেলস্টেশন এলাকা, নিরালা, দৌলতপুর, খালিশপুর, গল্লামারী, সলেমান নগরের প্রবেশ দ্বারসহ প্রায় শতাধিক স্থানে বসেছে পিঠা তৈরির অস্থায়ী দোকান।

প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে দোকানগুলোয়। সন্ধ্যা হলেই বেড়ে যায় ক্রেতা সমাগম, যা রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত চলে।
রিকশাচালক, দিনমজুর, শিশু-কিশোর, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী সব শ্রেণি-পেশার মানুষ পিঠার দোকানে ভিড় করছেন। অনেকে কর্মস্থল থেকে ঘরে ফেরার পথে সন্ধ্যায় পিঠা নিয়ে যান।

ব্যস্ত নগর জীবনে অনেকেরই বাসায় পিঠা তৈরি করার সময় নেই। তাই শীতের বিকেল কিংবা সন্ধ্যার হিমেল হাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে পিঠা খেতে অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকানগুলোতে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শহরের বিভিন্ন মোড় ও পাড়া–মহল্লায় হতদরিদ্র ও স্বল্প আয়ের লোকজন গড়ে তুলেছেন শতাধিক পিঠার দোকান। এসব ভ্রাম্যমাণ দোকানে পুরুষদের পাশাপাশি অনেক নারীও  পিঠা বিক্রি করছেন। এর মাধ্যমে তারা বাড়তি আয় করতে পারছেন।

বিক্রেতাদের সঙ্গেও আলাপ করে জানা যায়, বেচা-বিক্রি বেশ ভালোই। তাই তো তারা এই শীতের মৌসুমে পিঠা বিক্রিকে বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা,  ডিসেম্বর ৬, ২০২২
এমআরএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।