ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অন্ধকারে পায়ে হেঁটে রাজধানীর পথে হাজার হাজার মানুষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২২
অন্ধকারে পায়ে হেঁটে রাজধানীর পথে হাজার হাজার মানুষ

সাভার, (ঢাকা): আছমা বেগম। বাঁ পায়ে প্রতিবন্ধকতা নিয়ে অনেক কষ্টে হেঁটে ঢাকার দিকে যাচ্ছেন তিনি।

জাহাঙ্গীর নগরের সামনে সড়ক অবরোধ থাকায় রংপুর থেকে বাসে এসে বিশমাইল নেমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাঁটতে থাকা আছমার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। জানান, তিনি কাজ করেন মিরপুরের একটি গার্মেন্টসে। ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন গত বুধবার। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বাড়ি থেকে ফিরছেন কারণ, কাল সকাল থেকে তাকে কর্মস্থলে যোগ দিতে হবে। কিন্তু নবীনগর পার হওয়ার পর রাস্তায় গাড়ি থেমে যায়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও কোনো উপায় না পেয়ে এখন হেঁটে রওনা দিয়েছেন।

এমন অবস্থা আছমা বেগমের মতো অসংখ্য মানুষের। শত শত নয়, হাজার হাজার মানুষ আন্ধকার সড়ক ধরে পায়ে হেঁটে রাজধানীর দিকে যাচ্ছেন। কারও হাতে ব্যাগ, কারও মাথায় বোঝা।

কথা হয় মো. মিলন সরকার নামে একজনের সঙ্গে। তিনি পরিবার নিয়ে নবীনগর থেকে হেমায়েতপুর যাবেন। ইতিহাস বাসে চড়ে বিশমাইল পর্যন্ত এসেছেন। বাস আর ঢাকার দিকে যাবে না।  অগত্যা পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছেন। কোলে তার ছোট মেয়ে। রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ, সরকারের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, প্রশাসনের জায়গায় জায়গায় তল্লাশি এখন তার কাছে অসহ্য হয়ে উঠেছে।

মিলন বলেন, আর কত রং দেখা লাগবে জানি না। আমরা সাধারণ মানুষ পড়েছি বিপদে। সব কিছু ভালোই চলছিল। হঠাৎ রাস্তা বন্ধ, তল্লাশি। মানুষের কষ্ট মানুষ বোঝে না। এ কষ্ট দেখার কেউ নাই।

বিকেলে বিএনপির ‘নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা সেখানে বিক্ষোভ করেন। মহাসড়কের শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের সামনে অবরোধের কারণে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল।

বিকেল ৫টায় অবরোধ শুরু হয়ে শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টায়। ততক্ষণ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে সড়কের দুই পাশে প্রায় ৬ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। যদিও সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে সড়ক ছেড়ে দেয়ে ছাত্রলীগের নেতারা। কিন্তু ততক্ষণে হাজারো যাত্রী নেমে পড়েন, পায়ে হেঁটে তার ফিরছেন নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে।

বিষয়টি নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান বিএনপির নৈরাজ্য ঠেকাতে আমরা মাঠে রয়েছি, থাকব। আজ জঙ্গি, সন্ত্রাসী ও পুলিশের ওপর হামলার প্রতিবাদে আমরা এই অবরোধ কর্মসূচি নিয়েছি। রাস্তা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপি যদি কোনো নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আবারও তারা রাজপথ দখল করবেন।

সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ঘণ্টাব্যাপি তারা সড়ক অবরোধ করেছিল। পরে তারা রাস্তা ছেড়ে দেয়। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২২
এসএফ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।