ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ছেলের জীবন বাঁচাতে কিডনি দিলেন মা

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২২
ছেলের জীবন বাঁচাতে কিডনি দিলেন মা

জয়পুরহাট: জয়পুরহাট সদর উপজেলার আমদই গ্রামের বাসিন্দা শ্রী তপন চন্দ দেবনাথের স্ত্রী শ্রীমতী বাসন্তী রানী দেবনাথের একমাত্র ছেলে বিকাশ চন্দ্র দেবনাথ (২৬)। বিকাশ বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে পরিসংখ্যান বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত।

এক বছর আগে বিকাশের মা-বাবা জানতে পারেন, তাদের ছেলের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। তাতে আকাশ ভেঙ্গে পড়ে তাদের মাথায়। বিকাশের বাবা একজন দরিদ্র কৃষক মানুষ। নিজের সম্বল এক বিঘা জমি বিক্রি করে গত এক বছর বিকাশের চিকিৎসা ও ডায়ালাইসিস করে আসছে।

ডাক্তার জানিয়েছিলেন, বিকাশকে বাঁচাতে একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। এতে অপারেশন বাবদ ৩-৪ লাখ টাকা খরচ হবে। একটি কিডনি ও অপারেশনের টাকা যোগার করার জন্য দীর্ঘ এক বছর বিভিন্ন মাধ্যমে ধরনা দিলেও আশানুরূপ ফল মেলেনি। ওই সময় বাঁচার জন্য বিকাশ তার ফেসবুক পোস্টে মানবিক সাহায্যের আবেদন জানিয়ে পোস্ট দেয়। সে পোস্ট দেখে এলাকার কিছু মানুষ তাদের সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করলে কোনো স্বজন বা অপরিচিত কেউ কিডনি দানে এগিয়ে আসেননি।

এরপর মমতাময়ী মা বাসন্তী রানী দেবনাথ তার একমাত্র সন্তান বিকাশকে বাঁচাতে তার শরীর থেকে একটি কিডনি দেওয়ার জন্য মনস্থির করেন। আদালতের অঙ্গীকারনামার মাধ্যমে সরকারী সব নিয়ম কানুন শেষ করেন তিনি। গত ৮ ডিসেম্বর ঢাকার শ্যামলী এলাকার একটি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে ভর্তি হন তারা। সেখানেই পরের দিন কিডনি প্রতিস্থাপনের পর মা ছেলেকে আইসিইউতে রাখা হয়। এখনও তারা সেখানেই চিকিৎসাধীন।

হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, অপারেশন পরবর্তী ১৫ দিন হাসপাতালেই থাকতে হবে তাদের। এরপর আগামী ৩ মাস ঢাকায় থেকে নিয়মিত চেক আপ করাতে হবে।

জানা গেছে, অপারেশন পরবর্তী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের কাছাকাছি তারা একটি বাসা ভাড়া নিয়েছেন। তবে কৃষক পরিবারটির পক্ষে এতো খরচ বহন করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এমতাবস্থায় বিকাশ ও তার পরিবারের সহায়তায় জয়পুরহাটের বিত্তবান ও সমাজ সেবকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জয়পুরহাটে দায়িত্ব পালন করা সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে আমদই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহানুর আলম সাবু বলেন, বিকাশ আমার ইউনিয়নের শিক্ষিত ছেলে। আমি যখনই শুনেছি তখনই সাধ্যমত চেষ্টা করেছি তাদের সাহায্য করতে। এরপর তাদের পরিবার আমার সঙ্গে আর যোগাযোগ করেননি। চিকিৎসার খরচ এবং পরবর্তীতে তাদের জীবন যাপনের জন্যে আমি যথাসাধ্য সাহায্যের চেষ্টা করব।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।