ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হলুদ গালিচায় মোড়ানো বিস্তীর্ণ মাঠ!

জুলফিকার আলী কানন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২২
হলুদ গালিচায় মোড়ানো বিস্তীর্ণ মাঠ!

মেহেরপুর: হলুদ গালিচায় মোড়ানো দিগন্তজুড়ে বিস্তীর্ণ মাঠে এখন সরিষা ফুলের সমারোহ। শুধু হলুদ আর হলুদের আভায় যেনো মেহেরপুরের মাঠ সেজেছে আপন মহিমায়।

সবুজ প্রকৃতি যেনো হলুদের দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। সরিষা ফুলের মৌ—মৌ গন্ধে এখন মৌমাছির গুঞ্জন সরব হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। জেলার মাঠগুলো যেন হলদে সাজের সমাহার ইঙ্গিত করছে কৃষকদের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা। কৃষকের চোখে এখন লাভের হাতছানি।

মেহেরপুর সদর উপজেলার ফতেপুর, ইছাখালি, শ্যামপুর, কালিগাংনী, ঝাউবাড়ি, গাংনী উপজেলার রংমহল, খাসমহল, নওপাড়া, কালিগাংনী, বাঁশবাড়িয়া, তেরাইল, জোড়পুকুরিয়া, বাওট, ছাতিয়ান, সিন্দুর কৌটা, গোপালনগর, রাইপুর শিমুলতলা, কামারখালি, ওলিনগর, গোয়ালগ্রাম, মোমিনপুর, মহম্মদপুর, মটমুড়া, মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর, মোনাখালি, দারিয়াপুর, মহাজনপুর, যতারপুর, কোলাসহ বিভিন্ন এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠে এখন সরিষার হলুদ রঙের ফুলের সমারোহ। যেন হলুদ রঙের সুষমা শোভা পাচ্ছে দিকে দিকে।

চলতি রবি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সরিষাক্ষেতে রোগবালাই কম হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) শঙ্কর কুমার মজুমদার জানান, চলতি মৌসুমে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় জেলায় প্রায় ৩ হাজার কৃষককে বিনামূল্য সরিষার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এ বছর ৫ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। চলতি বছরে সরিষা চাষের লক্ষমাত্রা ছিল সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে। লক্ষমাত্রারা চেয়ে ১৩০০ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষার চাষ হয়েছে।

গাংনী উপজেলার খাঁসমহল গ্রামের সরিষা চাষি হুমায়ন কবীর জানান, আমার দেড় বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। আর গাছ ভালো হওয়ায় ভালো ফলনও আশা করছেন তিনি।

এছাড়া একই গ্রামের সামসুল আলম আড়াই বিঘা, আব্দুস সালামের দেড় বিঘা, আইয়ুব আলীর দেড় বিঘা, রবিউল ইসলামের এক বিঘা, সিরাজুল ইসলামের দেড় বিঘাসহ এলাকার শতাধিক চাষি সরিষা বুনেছেন।

একই গ্রামের সরিষা চাষি আইয়ুব আলী জানান, গত বছর সরিষার চাষ না করলেও তিনি এ বছর চাষ করেছেন। কারণ, বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেশি। তাই তিনি এবার ৩৩ শতাংশ জমিতে সরিষা চাষ করেছেন।

জেলা কৃষি কর্মকর্তা (ডিডি) শঙ্কর কুমার মজুমদার জানান, সরিষা আবাদ খুব প্রয়োজনীয় একটি ফসল, তাছাড়া সরিষা আবাদের পরই কৃষকরা দুটি ধানের আবাদ করতে পারছেন। যা থেকে বেশি আয় করা সম্ভব। গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এর প্রধান কারণের মধ্যে আছে, বাজারে সরিষা এবং ভোজ্য তেলের দাম বেশি। আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত অনুকূলে থাকলে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলেও তিনি আশাবাদী।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩  ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২২
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।