ঢাকা, বুধবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

অবশেষে পরিবারে ঠাঁই হলো রুহুলের

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২২
অবশেষে পরিবারে ঠাঁই হলো রুহুলের রুহুলকে তার স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: ৪০ বছর বয়সী রুহুল মিয়াকে প্রায়ই দেখা যেতো মৌলভীবাজারের রাজনগর থানা এলাকার আশপাশে ঘুরে বেড়াতেন। থানা পুলিশ কিংবা আশপাশের লোকজনসহ সবাই তাকে ‘পাগল’ বলেই মনে করতেন।

থানার সামনে তাকে নিয়মিত দেখে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুলের খোঁজ খবর নিতে নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। সে অনুযায়ী মানসিক ভারসাম্যহীন রুহুলের বাড়িঘর, আত্মীয় স্বজনের খোঁজখবর নেওয়ার দায়িত্ব পান ওই থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) নুর উদ্দিন।

দায়িত্ব পেয়ে কয়েকদিনের ব্যবধানে এসআই নুর উদ্দিন রাজনগর উপজেলার সদর ৫ নম্বর ইউনিয়নের মশুরিয়া গ্রামে খোঁজ নিয়ে সেই রুহুল মিয়ার আত্মীয় স্বজনকে খুঁজে বের করতে সক্ষম হন।

জানা যায়, রুহুলের মা মারা যাওয়ার পর বাবা আরব আলী দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই থেকে সৎমা রুহুলকে মানসিক অত্যাচার করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এমন পরিস্থিতিতে রুহুল দীর্ঘদিন তাঁর মামা বাড়িতে অবস্থান করলেও সেখান থেকে পালিয়ে যান।

পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) রাজনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের মশুরিয়া গ্রামে রুহুলের এলাকার লোকজনদের সঙ্গে বসে আলাপ-আলোচনা করে ভারসাম্যহীন রুহুলকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

রুহুলের স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, রুহুলের এই পরিস্থিতির পেছনে মূল কারণ সম্পত্তি এবং সৎমা। রুহুলের আপনজনেরাই সম্পত্তির ভাগ-ভাটোয়ারা সংক্রান্ত বিষয়ে রুহুলকে কৌশলে পাগল সাজিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তবে এর পেছনে মূল ভূমিকা ছিল সৎমায়ের।

এদিকে খোঁজ পাওয়া রুহুলকে পরবর্তীতে রাজনগর থানা পুলিশের সহায়তায় এলাকার লোকজনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সামনে রুহুলকে তার পরিবার গ্রহণ করে এবং রুহুলের যথাযথ চিকিৎসা করাবে মর্মে পুলিশকে আশ্বস্ত করেন।

রাজনগর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় জানান, রুহুল নামের এই লোক প্রায় সারাদিনই থানার আশেপাশে থাকতো। দেখে কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হতো আমার। পুলিশের কাজই হচ্ছে মানুষের জন্য কাজ করা। আর আমার থানার সামনেই একটা মানসিক ভারসাম্যহীন লোক অসহায়ের মতো পড়ে থাকেন।

তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এসআই নুর উদ্দিনকে দায়িত্ব দেই তার পরিবার খুঁজে বের করার জন্য। আমরা রুহুলকে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। তার পরিবারকে যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য বলেছি। ভবিষ্যতে যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ পুলিশ তাঁর পাশে থাকবে। ’   

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২২
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।