ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ এখন এয়ার কন্ডিশন ছাড়া সিনেমা হলে বসতে চায় না।
তিনি বলেন, সিনেমা দেখতে গিয়ে মানুষ কেনাকাটা করতে চায়, খাওয়া দাওয়া করতে চায়। এসব চাহিদা সিনেপ্লেক্সগুলো পূরণ করছে। সেজন্য সিঙ্গেল স্ক্রিন সিনেমা হল বন্ধ হলেও সিনেপ্লেক্সের সংখ্যা বাড়ছে।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র এবং বাচসাস সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা- ২০২২’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে আয়োজন করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)।
দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের সার্বিক উন্নয়নের জন্য এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বন্ধ সিনেমা হল পুনরায় চালু করা, নতুন সিনেমা হল নির্মাণ এবং সিনেমা হলের আধুনিকায়নের জন্য সরকার কাজ করছে। সরকার বিশেষ ঋণ তহবিল গঠন করেছে। এই সুবিধা চালু হলে সিনেমা হলের সংখ্যা বাড়বে। আমরা চাই প্রতি উপজেলায় একাধিক সিনেমা হল হোক। আর এটিই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, আমরা সিনেমায় অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়েছি। পাশাপাশি অনুদান প্রাপ্ত সিনেমাগুলোকে হলে চালানোর বাধ্যবাধকতা তৈরি করেছি। সিনেমা বানিয়ে কোনো একটি প্রতিষ্ঠান বা ওটিটি প্লাটফর্ম এর কাছে বিক্রি করে দিলে তা পুরো ইন্ডাস্ট্রির কল্যাণ বয়ে আনবে না। সেজন্য হলে মুক্তি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা চালু করেছি।
মন্ত্রী বলেন, দেশে হলের সংখ্যা একশর নিচে নেমে গিয়েছিল। কিন্তু হাওয়া ও পরাণ সিনেমা মুক্তির পর দেশে বর্তমানে সিনেমা হল ৩০০ হয়েছে। হাওয়া সিনেমা দেখতে কলকাতায় কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত লাইন হয়েছে। দুপুর ২টায় সিনেমা শুরু হবে, কিন্তু সকাল ৯টা থেকে লাইন দিয়েছে মানুষ। এমন দৃশ্য হাওয়া ও পরাণের নির্মাতারাও ভাবেননি। আমাদের সিনেমা সমগ্র ভারতসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও মুক্তি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর অনেক সিনেমা দেশ গঠনে ভূমিকা রেখেছিল, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল জাতির পিতার হাত ধরে ১৯৫৭ সালে এফডিসি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। চলচ্চিত্র শিল্প আমাদের স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে অনেক ভূমিকা রেখেছে। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে আমাদের অনেকগুলো কালজয়ী সিনেমাগুলো দেশ গঠনে ভূমিকা রেখেছে।
চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প যে উচ্চতায় ছিল, মাঝে তা থমকে গিয়েছিল। একে একে সব সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। পাশাপাশি ভালো সিনেমার সংকট দেখা দিয়েছিল। কিন্তু পরে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাচসাস সভাপতি রাজু আলীম। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাচসাসের সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমীন, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সাংবাদিক নেতা শাবান মাহমুদ প্রমুখ।
সেমিনারে বাচসাসের বীর মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দেওয়া হয়।
সেমিনার শেষে শেষে ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের মুক্তিযুদ্ধের গল্প অবলম্বনে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের সিনেমা- ‘একজন দুর্বল মানুষ’ প্রদর্শন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
ইএসএস/আরএইচ