ঢাকা: সড়ক দুর্ঘটনা ও পরিবেশদূষণের রোধে ২০ বছরের পুরোনো বাস ও ২৫ বছরের ট্রাক তুলে দিতে যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল তা স্থগিত করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
প্রজ্ঞাপন জারির পরে থেকেই পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো বাতিলের দাবিতে চিঠি দেয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে।
প্রজ্ঞাপন স্থগিত সম্পর্কে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, গণপরিবহনের নামে ৪০-৪৫ বছর আগে যে লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন কিংবা ২০ বছরের পুরনো রিকন্ডিশন্ড গাড়ি রুট পারমিটের অনুমতি পাচ্ছিলো না বা নবায়ন হচ্ছিলো সেগুলো নবায়নের পথ সুগম হয়েছে। অথচ বাস ভাড়া নির্ধারণে অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ১০ বছর।
তিনি আরও বলেন, প্রজ্ঞাপন বাতিলের মধ্যে দিয়ে ভয়ংকর ঝুঁকিতে পড়লো নিরাপদ সড়ক তৈরির বিষয়টি। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে এটা প্রতিবন্ধকতারও সৃষ্টি করবে।
জারিকৃত প্রজ্ঞাপনটি জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ গণমাধ্যমকে বলেছেন, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় পুরোনো যানবাহনের বয়সসীমা নির্ধারণের আগে তাদের সঙ্গে কথা বলেনি। একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক যানবাহন তুলে দিলে শূন্যতা তৈরি হবে। এর প্রভাব যাত্রী পরিবহন ও বাণিজ্যে পড়বে। এ জন্য তারা সরকারকে চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিত করার আবেদন করেছিলেন।
এখন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করা হবে বলে জানিয়েছেন এ পরিবহন মালিক নেতা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্র বলছে, বাস ও ট্রাকের চলাচলের বয়সসীমা নির্ধারণ করে দেওয়ার পর সংস্থাটি একটি তালিকা করেছে। এতে দেখা গেছে, ২০ বছরের সীমা নির্ধারণ করা হলে ৩৩ হাজার ১৭৪টি বাস-মিনিবাস রাস্তা থেকে উঠে যাবে। আর ২৫ বছরের পুরোনো ট্রাকের সংখ্যা ৩০ হাজার ৬২৩টি।
বিআরটিএর তথ্যমতে, সারা দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৫৮ লাখের কাছাকাছি। এর মধ্যে বাস-মিনিবাসের সংখ্যা ৮১ হাজার ৮৪৭। হিসাব করে দেখা যায়, বাস-মিনিবাসের প্রায় ৪১ শতাংশই ২০ বছরের পুরোনো। অন্যদিকে দেশে নিবন্ধিত ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ট্যাংকলরির সংখ্যা দুই লাখ দুই হাজার ৭৭২টি। এর মধ্যে ২৫ বছরের পুরোনো ট্রাক ১৫ শতাংশের মতো।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২৩
এনবি/আরআইএস