ফরিদপুর: ফরিদপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে স্বামী মো. সাগর মোল্লাকে (২২) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে আরও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক আশোক কুমার দত্ত এ রায় দেন।
রায়ের সময় সাগর কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাকে পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার এজাহার, আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লার বাসিন্দা মো. সাগর মোল্লার সঙ্গে ফরিদপুর সদরের ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর মল্লিক পাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. সালাম মল্লিকের মেয়ে শারমিন আক্তারের (১৯) বিয়ে হয়। বিয়ের পর শারমিন বুঝতে পারেন তার স্বামী মাদকাসক্ত। এ নিয়ে সংসারিক ঝাগড়ার এক পর্যায়ে শারমিন বাবার বাড়িতে চলে আসেন এবং স্বামীকে এক পাক্ষিক তালাক দেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী সাগর ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর একটি ছুরি নিয়ে শারমিনের বাড়িতে গিয়ে শারমিনের বুকে ও পেটে এলোপাথারি ভাবে কোপ দিয়ে পালিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় শারমিনকে প্রথমে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থনান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় শারমিনের ভাই মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে সাগরকে একমাত্র আসামি করে হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় ২০২২ সালের ২ ডিসেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার ২০ দিন পর ১৯ ডিসেম্বর মারা যান শারমিন। শারমিনের মৃত্যুর পর কোতয়ালী থানায় তার ভাইয়ের দায়ের করা ওই মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হয়।
গত ৩০ জুন এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল সাগরকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র প্রদান করেন। অভিযোগপত্র প্রদানের দুই মাস ২৫ দিনের মাথায় এ রায় প্রদান করেন আদালত।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর পিপি নওয়াব আলী বলেন, এ রায়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ রায়ের ফলে সমাজে হত্যার প্রবণতা কমে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২৩
এমএম