সিরাজগঞ্জ: ফেসবুকে পরিচয়ের মাধ্যমে প্রেম। এরপর স্বামী-সন্তানকে ফেলে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় প্রেমিক জুয়েল সরকারের (২৭) বাড়িতে ছুটে আসেন ভারতীয় নারী নার্গিসা বেগম ওরফে রাইসা মল্লিক (৩২)।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন জুয়েল সরকারের বাবা ইরান সরকার। তিনি বলেন, ৩ জানুয়ারি জুয়েল ও নার্গিসা ভারতে গেছেন। তারা সেখানে সংসার করছেন। তার আগের স্বামীর সাথে ডিভোর্সও হয়ে গেছে।
জানা গেছে, জুয়েল সরকারের সঙ্গে ২০২২ সালে ফেসবুকে পরিচয় নার্গিসা বেগমের। তখন কুমারী পরিচয়ে জুয়েলের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পরেন তিনি। দেড় বছর প্রেম চলার পর দুইজনই বিয়ে করতে আগ্রহী হন। এরপর ২০২৩ সালের ৩১ মে নার্গিসা উল্লাপাড়ায় আসেন এবং ১ জুন কুমারী পরিচয়ে জুয়েলকে বিয়ে করেন।
তাদের বিয়ের বিষয়টি বাংলাদেশীয় বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ হলে তার ভারতীয় স্বামী মীর ফজলুর রহমান ছুটে আসেন উল্লাপাড়ায়। পরে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে নার্গিসা বিবাহিত ও তার স্বামী পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার ফজলুর রহমান মীর এবং জিসান নামে তাদের ৮ বছরের সন্তান রয়েছে মর্মে সংবাদ প্রকাশ হয়। এসব কিছু জানার পরও জুয়েল নার্গিসাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নন।
২০২৩ সালের ২২ জুন স্ত্রী নার্গিসাকে ফিরে পেতে ভারত থেকে উল্লাপাড়ায় ছুটে আসেন তার স্বামী ফজলুর রহমান মীর। স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে থানা পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। কিন্তু নার্গিসা ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানালে খালি হাতেই ফিরতে হয় তাকে। এরপর ৩০ জুলাই আবারও উল্লাপাড়ায় এসে থানায় মামলা করেন ফজলুর রহমান মীর। ১ আগস্ট পুলিশ এ দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে সিরাজগঞ্জ জেলহাজতে পাঠায়। একদিন জেলহাজতে থাকার পর জামিনে তারা বের হয়ে আসেন।
জুয়েলের বাবা ইরান সরকার বলেন, পাঁচ মাস বাড়িতে থাকার পর ৩ জানুয়ারি নার্গিসার বাবা খাইরুল আলম মল্লিক এসে তাদের ভারতে নিয়ে যান। তারা ভারতের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত আছেন। দুয়েকদিন পর পর ভিডিও কলেও কথা হয় তাদের সাথে।
উল্লাপাড়া উপজেলার দুর্গানগর ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর এবাদ আলী জানান, প্রেমের টানে বাংলাদেশে এসেছিলেন, পরে দু’জন আবার ভারতে চলে গেছে।
উল্লাপাড়া মডেল থানার উপ পরিদর্শক মামুন মিয়া জানান, ভারতীয় নাগরিক প্রেমিকা নার্গিসার আগের স্বামী মীর ফজলুর রহমানের প্রতারণা ও অর্থ-আত্মসাৎ মামলায় ইরান সরকার, জুয়েল সরকার এবং নার্গিসের নামে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, মামলা তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৪
এএটি