ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

সংগ্রহ করা কোরবানির মাংসের বাজারেও মূল্যের ঊর্ধ্বগতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৪
সংগ্রহ করা কোরবানির মাংসের বাজারেও মূল্যের ঊর্ধ্বগতি

বরিশাল: ঈদুল আযহার দিন ছিন্নমূল বা প্রান্তিক মানুষের অনেকেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাংস সংগ্রহ করেন। শেষে পরিবার নিয়ে খাওয়ার জন্য কিছু রেখে দেন; আবার কিছু বিক্রি করেন কোরবানির গরুর মাংসের বাজারে।

বরিশালেও আছে এমন মাংসের বাজার। নিত্যদিনের পণ্যের বাজারে যেমন আগুন লেগে আছে; সংগ্রহ করা কোরবানির মাংসের বাজারেও তেমন ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।

সোমবার (১৭ জুন) ঈদের জামাতের পর বাড়ি বাড়ি কোরবানি শুরু হয়। যারা কোরবানি দিয়েছেন দিন শেষে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাংস সংগ্রহ করেন ছিন্নমূলেরা। বিকেল শেষে সংগ্রহ করা মাংসের কিছু অংশ তারা নগরের পোর্টরোড, চকের পুল, চৌমাথাসহ বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ীভাবে বসা বাজারে বিক্রি করে দেন।

পোর্টরোড এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মান ভেদে সাড়ে ৭০০ থেকে সাড়ে ৮০০ টাকা কেজিতে সংগ্রহ করা মাংস বিক্রি হচ্ছে। কেউ কেউ ‘হ্যাঁচকা’ দরে বিক্রি করছেন।

সংগ্রহ করা কোরবানির মাংস বিক্রেতা নজরুল জানান, তার এলাকার নারীরা কোরবানির দিন দুপুরে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গরিবের ভাগের মাংস সংগ্রহ করেছেন। যেখান থেকে তিনি প্রায় পাঁচ কেজি মাংস সাড়ে ৭০০ টাকায় কিনে নিয়েছেন। বিক্রি করছেন ৮০০ টাকা কেজি দরে।

তিনি বলেন, কাইল (রোববার) বিভিন্ন জায়গায় কসাইরা সাড়ে ৭০০-৮০০ টাকা কইর‌্যা গরুর মাংস বিক্রি করছে। আইজ-কাইল মাংসের দোহান (দোকান) বন্ধ থাকপে। তাই এই বাজারে ভালোই বেচাবিক্রি হইসে। মোর দার দিয়ে অল্প সময়ে মানুয়ে মাংস কিনন্যে নেসে।

বিভিন্ন জায়গা থেকে কেনা মাংস এক করে বিক্রি করেন, মানুষ কিনতে আগ্রহী হয়? প্রশ্নে উত্তরে তিনি বলেন, গরিব মানুয়ের স্বাদ কি আল্লাদ (আল্হাদ) কি, হেরা খাইতে পারলেই বাচে (বাঁচে)।

আলামিন নামে এক রিকশা চালক জানান, ২০২৩ সালেও বাজার দর থেকে ১০০ টাকা বেশি মূল্যে তিনি মাংস কিনেছিলেন। এ বছর তার চেয়েও বেশি দামে সংগৃহীত মাংস বিকি হচ্ছে। ক্রেতার কমতি নেই, তবে কেনার আগ্রহ অনেকেরই কম। কোরবানির মাংস খেতে সুস্বাদু হওয়ায় সবাই কিনতে চায়; কিন্তু মূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তাতে অন্যান্যবারের চেয়ে কম পরিমাণেই মাংস কিনতে হবে।

সবুজ নামে এক ক্রেতা আবার অসাধু চক্রের কথা বললেন। তার দাবি, সংগ্রহ করা গরুর মাংসেরন দোকানেও সিন্ডিকেট চক্র আছে। তারা এবার মাংসের দাম অনেক বাড়িয়েছে।

যদিও কামরুল নামে বিক্রেতা জানিয়েছেন, ঈদের দিন পুরো বেলা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা মাংস বিক্রি করে প্রান্তিক, ছিন্নমূল মানুষেরা নিজেদের স্বাদ কিছুটা পূরণ করতে পারে। বছরে একবারই তারা অন্তত দুই বেলা মাংস খেতে পারেন। কিন্তু সংসারের টানে মাংসের অনেক অংশই বিক্রি করে দিতে হয়। তার মতো অনেক ব্যবসায়ী এসব মাংস কিনে কিছু টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করেন। এখানে সিন্ডিকেট আসার কোনো উপায় নেই।

স্থানীয় কর্তাব্যক্তি বা প্রশাসনের কেউ এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তাদের ভাষ্য, বছরে একটা দিন গরিব মানুষগুলো নিজেদের ইচ্ছা পূরণ করতে পারে। তাই বিষয়টি নিয়ে কথা বলা ঠিক নয়। তবে, কোনো বিশৃঙ্খলা দেখে দিলে সেটির ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৪
এমএস/এমজে

 
 

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।