ঢাকা, রবিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মামার অভিযোগ: সহপাঠী ও তার বাবা হত্যা করেছে রাফিতকে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২৪
মামার অভিযোগ: সহপাঠী ও তার বাবা হত্যা করেছে রাফিতকে

ঢাকা: বাগবিতণ্ডার জেরে হত্যার শিকার হন মিরপুর কমার্স কলেজের ছাত্র জুবায়ের হাসান রাফিত। স্বজনদের অভিযোগ, কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে বিরোধের কারণে হত্যা করা হয়েছে তাকে।

রাফিতের মামা নুরুজ্জামানের অভিযোগ, পুর্বশত্রুতার জের ধরে তার ভাগ্নেকে হত্যা করেছে তার সহপাঠী রাজিন চৌধুরী ও তার বাবা ইকবাল চৌধুরী।

রোববার (৭ জুলাই) ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে এমন অভিযোগ করেন তিনি। এর আগে গতকাল শনিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় হত্যার শিকার হন রাফিত। তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির মিরপুর বিভাগের শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান।

নুরুজ্জামান বলেন, রাফিত মেধাবি ছিল। কলেজের ক্লাস ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করত। এক মাস আগে তাদের ক্লাসের অন্য এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে রাজিনের মারামারি হয়। রাফিত দুজনের মারামারি ঠেকান, তবে রাজিনের বিপক্ষে কথা বলেন। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হন। পরে ক্লাসের মধ্যেই রাজিন তার ওপর চড়াও হন। এরপর রাফিত বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষকে জানান।

তিনি আরও জানান, কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আবু মাসুদ রাজিনের বাবা-মাকে তলব করেন। তাদের সামনেই রাজিনকে সতর্ক করেন। এই ক্ষোভ থেকেই রাজিন ও তার বাবা ইকবাল চৌধুরী কৌশলে রাফিতকে তাদের বাসায় নিয়ে হত্যার পর পালিয়ে যান। এ দুজন গ্রেপ্তার হলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলেও উল্লেখ করেন নুরুজ্জামান।

তিনি বলেন, রাফিত একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। এইচএসসি পরীক্ষা থাকায় কলেজ বন্ধ ছিল। কিন্তু কোচিং খোলা ছিল। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে রাফিত কোচিং করতে বাসা থেকে বের হয়। দুই বিষয়ে কোচিং ক্লাস করার কথা ছিল তার। একটি কোচিং শেষে বরে হয়ে অন্যটিতে সে যায়নি। বাসায়ও ফেরেনি। রাফিত মোবাইল ব্যবহার না করায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে কলেজের এক শিক্ষকের মাধ্যমে তার নিহতের সংবাদ পাই আমরা।

জানা গেছে, রাজিনের বাবা ইকবাল চৌধুরী একজন আইনজীবী ও মা ঝিনাইদহ একটি কলেজের শিক্ষক।

রাফিতের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে। তার বাবা আবুল বাশার ভূমি অফিসে চাকরি করেন। মা আয়েশা সিদ্দিকা রুমী গৃহিণী। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে রাফিত ছিল সবার বড়। তারা মিরপুর-১ নম্বর রোডে এ-ব্লকে বসবাস করেন।

রাফিতের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন শাহ আলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আমিনুল ইসলাম চৌধুরী। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, নিহতের মাথায় ধারালো অস্ত্রের কয়েকটি কাটা জখম রয়েছে। এছাড়া ডান চোখের পাশে কাটা, গলায় ৩ ইঞ্চি পরিমাণ কাটা জখম, বুকের ডান পাশে কাটা জখম আছে। ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও কব্জি প্রায় বিচ্ছিন্ন। প্রাথমিক তদন্ত হিসেবে তিনি লিখেছেন, সহপাঠীদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার পর রাফিতের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নুরুজ্জামান তার ভাগ্নের মরদেহ বুঝে পেয়েছেন। রূপগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে রাফিতের মরদেহ দাফন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২৪
এজেডএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।