ঢাকা, সোমবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩১, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ সফর ১৪৪৬

জাতীয়

লক্ষ্মীপুরে বেড়েই চলেছে বন্যার পানি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২৪
লক্ষ্মীপুরে বেড়েই চলেছে বন্যার পানি

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) রাত ১১টা থেকে রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত জেলার সর্বত্র টানা ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এছাড়া গত তিনদিন ধরেই পার্শ্ববর্তী জেলা নোয়াখালীর পানি ঢুকছে লক্ষ্মীপুরে।

ফলে শনিবার রাত থেকে পানির উচ্চতা হু হু করে বাড়তে শুরু করে। রোববার পর্যন্ত কোথাও আধা ফুট, আবার কোথাও এক ফুটের বেশি পানির উচ্চতা বেড়েছে। এতে বসতবাড়ি এবং ঘরে কোমর পানি উঠে গেছে।

উপয়ান্তর না দেখে রাতেই আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটেছে মানুষ। সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা গভীর রাত থেকেই পানিবন্দি বাসিন্দাদের উদ্ধার অভিযান শুরু করে।

সর্বত্র এখন পানিবন্দি লোকজনের হাহাকার দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, নোয়াখালী জেলা থেকে লক্ষ্মীপুরে প্রবাহিত রহমতখালী, ওয়াপদা ও ভূলুয়া খাল দিয়ে হু হু করে পানি লক্ষ্মীপুরের লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। বিশেষ করে খাল সংলগ্ন এলাকাগুলো দ্রুত তলিয়ে যায়৷ শনিবার রাতেই সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের ওয়াপদা খাল সংলগ্ন এলাকায় হঠাৎ পানির উচ্চতা বেড়ে যায়। সেখানে বেশ কয়েকজন বাসিন্দা পানিবন্দি হয়ে পড়ে। গভীর রাতে তাদের উদ্ধারে যায় সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা। সেখান থেকে ৩৪ জনকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া রোববার সকালে পৌর এলাকার সাহাপুর গ্রামের একটি এলাকা থেকে ১৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর ফায়ারসার্ভিস উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মাদ আবদুল মন্নান বাংলানিউজকে বলেন, রোববার সকালে সাহাপুর গ্রাম থেকে পানিবন্দি থাকা ১৩ জন শিশু ও চারজন নারীকে আমরা উদ্ধার করে সাহাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। শনিবার রাতে সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নে আটকাপড়া ১০ জন শিশু, ১৪ জন নারী ও ১০ জন পুরুষকে উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে রাখা হয়েছে। যেখান থেকে আটকা পড়াদের খবর আসছে, তারা সেখানে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টির কারণে পানির উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। নোয়াখালীর দিকে থেকেও কিছু পানি ঢুকছে। উপজেলার পূর্বাঞ্চলগুলোর পরিস্থিতি কিছুটা অবনতির দিকে।

এদিকে ভূলুয়া খাল দিয়ে নোয়াখালী থেকে পানি আসায় জেলার কমলনগর ও রামগতি উপজেলার পূর্বাংশ তলিয়ে যাচ্ছে। আগে থেকে ওইসব এলাকায় জলাবদ্ধতা ছিল। এখন পানির উচ্চতা বেড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান বলেন, নোয়াখালীর পানি লক্ষ্মীপুরের খালগুলো হয়ে মেঘনা নদীতে নামবে। এদিকের পানি নামার সময় চন্দ্রগঞ্জ, মান্দারী এবং আশপাশের ইউনিয়নগুলোতে ঢুকে পড়ছে। অন্যদিকে ভারী বৃষ্টিপাতেও পানির উচ্চতা বেড়েছে। শনিবারের রাতে ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

তিনি জানান, খালগুলো দিয়ে স্লুইস গেট হয়ে পানি মেঘনায় নামছে। তবে নদীতে পানির লেভেল এখনও বিপৎসীমার নিচে আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।