ঢাকা: সারা দেশে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হওয়ায় বাড়ছে বন্যাপ্রবণ নদ-নদীর পানি। একই সঙ্গে লঘুচাপের কারণে উপকূলে প্রবেশ করতে পারে অধিক জোয়ারের পানি।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) এমন তথ্য জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, দেশের সব প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী, সাঙ্গু, গোমতী, মুহুরি, মাতামুহুরি ও হালদা নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুইদিন পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিভাগের এসব নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী ১ দিনে নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে।
সিলেট বিভাগের সুরমা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, অপরদিকে কুশিয়ারা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা রয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী ২ দিনে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে। অন্যান্য প্রধান নদীসমূহ— খোয়াই, ভুগাই, ধলাই, যাদুকাটা, মনু ও সোমেশ্বরী নদীসমূহের পানির সমতল স্থিতিশীল আছে, অপরদিকে সারিগোয়াইন ও কংস নদীর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের এসব নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী ২ দিনে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া সংস্থার তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৩ দিন পর্যন্ত বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় নদীসমূহে স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা অধিক উচ্চতার জোয়ার পরিলক্ষিত হতে পারে। রংপুর বিভাগের তিস্তা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে, ধরলা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, অপরদিকে দুধকুমার নদীর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। অপরদিকে ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। পরবর্তী ২ দিন পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে।
রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদের পানির সমতল স্থিতিশীল আছে ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী ৪ দিন পানির সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদীর ও তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২ দিন পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির সমতল ধীর গতিতে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী তিনদিন গঙ্গা-পদ্মা উভয় নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে, তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২৪
ইইউডি/এমজে