ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিপ্লবী সরকার গঠন করে ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি হওয়ার আহ্বান মাহমুদুর রহমানের

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২৪
বিপ্লবী সরকার গঠন করে ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি হওয়ার আহ্বান মাহমুদুর রহমানের

ঢাকা: বাংলাদেশের বিদ্যমান সংবিধান বাতিল করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিয়ে বিপ্লবী সরকার গঠনের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার আহ্বান জানিয়েছেন আমাদের দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

সোমবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর পলাশীতে ছাত্রলীগের নির্যাতনে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে ‘আগ্রাসন বিরোধী আট স্তম্ভ’ পুনর্নির্মাণ করতে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।

২০২০ সালের ৭ অক্টোবর প্রথম এই স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছিল। পরে সিটি করপোরেশন স্তম্ভটি গুড়িয়ে দেয়। দীর্ঘ চার বছর পর তা পুনর্নির্মাণের ভিত্তি স্থাপন করা হয়।

সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, আবরার ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার প্রতীক। তিতুমীরের মতো শতবছর পরও আমরা আবরারকে বীর হিসেবে স্মরণ করতে চাই। অন্যদিকে শেখ মুজিব তার মেয়ে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের আইকন। সে কারণে আমি সরকারের প্রতি দেওয়া আমার ৭ দফা দাবিতেও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর নাম পরিবর্তন করে আবরার অ্যাভিনিউ করার কথা বলেছি।

তিনি বলেন, আমি অন্তর্বর্তী সরকার না করতে অনুরোধ করেছিলাম। তারা এখানে ভুল করেছে। আপনারা বিপ্লবী সরকার হোন। শেখ হাসিনার সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দেন। পরের নির্বাচিত সরকার এসে বিপ্লবের মর্মবাণী অনুযায়ী নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে।

আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক আখতার হোসেন বলেন, আবরার ফাহাদ একক কোনো ব্যক্তি নয়। সে কোটি মানুষের স্বাধীনতার প্রতীক। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যে নির্যাতন হয়, বুয়েটের ঘটনা ছিল তার একটি প্রতীক। এখনো এই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হয়নি। পলাতকদের গ্রেপ্তার করে খুনিদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কোনো আগ্রাসনকে প্রশ্রয় দেবে না। ভারতের জনগণের সঙ্গে আমাদের কোনো বৈরী সম্পর্ক নেই। আমাদের অবস্থান দিল্লির আধিপত্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে।  

এর আগে বিকেল তিনটায় শাহবাগে নিরাপদ বাংলাদেশ প্লাটফর্মের ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, ভাই আবরার ফাইয়াজ, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহবায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম ও এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বক্তব্য দেন।  

আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ভবিষ্যতে আর কোনো ছাত্র যেন নির্যাতনের শিকার না হয়, সেজন্য প্রশাসন যেন সচেষ্ট থাকে। সব শিক্ষার্থী যেন নিরাপদে ছাত্রাবাসে থাকতে পারে। কোনো রাজনৈতিক দলের কারণে যেন কেউ হত্যার শিকার না হয়।

এ সময় তিনি হাইকোর্টে দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু করে আসামিদের সাজা বহাল রাখার দাবি জানান।

আবরার ফাইয়াজ বলেন, আবরার ফাহাদ যে শুধু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছিলেন, তা নয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের বিরুদ্ধেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যে ভীতিকর পরিবেশ ছিল, তা যেন কখনো ফিরে না আসে।

১৫ বছরের ‘ট্যাগিংয়ের’ মানসিকতা বদলের বিষয়ে সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে আমাদের মধ্যে ট্যাগ দেওয়ার একটি মানসিকতা প্রবেশ করানো হয়েছে। কোনো ঘটনা ঘটলে সবাই আগে প্রমাণে ব্যস্ত হতো যে সে শিবির নয়। এই মানসিক পরিবর্তনের জন্য আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে।

এ সময় আবরার ফাহাদ হত্যায় জড়িতদের কেউ যেন ছাড় না পায় তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আগামী ১০০ বছর জেল খাটলেও আওয়ামী লীগের অপকর্মের নিষ্পত্তি হবে না। আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিতের পর ছাত্র-নাগরিক সিদ্ধান্ত নেবে, তাদেরকে পুনর্বাসিত করা হবে কি না।

এছাড়া রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করে সংবিধান বাতিলের দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।