নরসিংদী: লতিফা বেগম (৭০) নামে এক বৃদ্ধা রেললাইনে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলে তাকে বাঁচাতে গিয়ে চালক হার্ড ব্রেক করায় ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এতে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বৃদ্ধা লতিফা বেগম শহরের কাউরিয়াপাড়া এলাকার জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী। ছেলের ওপর অভিমান করে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে আত্মহত্যা করতে আসেন ওই বৃদ্ধা।
রেলওয়ে পুলিশ ও ট্রেন যাত্রীরা জানান, বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা অভিমুখী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেন নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশ করছিল। ট্রেনটি দুই নম্বর লাইন থেকে এক নম্বর লাইনে কিছুটা প্রবেশ করলে নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে এক নম্বর লাইনে এক নারীকে শুয়ে থাকতে দেখে চালক হার্ড ব্রেক করেন। এতে ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়লে ঢাকাগামী ১ নম্বর লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বৃদ্ধার আত্মহত্যার খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।
এদিকে ইঞ্জিন বিকল হয়ে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকা পড়লে ঢাকাগামী রেলরাইনে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পেছনে খানাবাড়ি স্টেশনে আটকে পড়া মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এনে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সরিয়ে সেটি আবার পুনরায় মহানগর এক্সপ্রেসটি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে।
নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার কামাল হোসেন জানান, বিকেল আনুমানিক ৫টা ১৫ মিনিটে ঢাকাগামী রেললাইনের ১ ও ২ নং লাইনে একটি বৃদ্ধাকে বাঁচাতে কর্ণফুলি এক্সপ্রেস ট্রেনটি হার্ড ব্রেক করে। এতে ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পরে। এ অবস্থায় খানাবাড়ী রেলস্টেশনে মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি থাকায় সেখান থেকে ট্রেনটির ইঞ্জিন এনে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে ১ নম্বর লাইনে আনতে সাহায্য করে। পরে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শহিদুল্লাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বৃদ্ধা লতিফা বেগমকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত পরিচয় জানা গেছে। তিনি কাউরিয়াপাড়া এলাকার জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী। তিনি অসুস্থ ছিলেন বলে জানা গেছে।
ওই বৃদ্ধার রবাত দিয়ে নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শহিদুল্লাহ জানান, বার্ধক্যজনিত কারণে বৃদ্ধা লতিফা বেগম বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তার এই অসুস্থতার জন্য প্রতিমাসে ওষুধ খরচ বাবদ ৪ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়। যার পুরো খরচ বহন করেন তার ছেলে। সম্প্রতি লতিফা বেগমকে তার ছেলে কথা শোনান। তাই ছেলের ওপর অভিমান করে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২৪
এমজেএফ