ঢাকা: ঢাকার সুত্রাপুর মৌজার ভূমি অবমুক্তি করা ও আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে ভূমি মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত অবৈধ পরিপত্র অবিলম্বে প্রত্যাহার করে পুনরায় খাজনা আদায়ের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে ‘পুরনো ঢাকা নাগরিক কমিটি’।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে পুরনো ঢাকা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান বকুল, লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী। বক্তব্য দেন মজিবুর রহমান খান, সাংবাদিক মোহাম্মদ মহসীন ও রেজাউল করিম বাবু।
পুরনো ঢাকা নাগরিক কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান বকুল বলেন, আমরা এর আগে ২০০৫ সাল থেকে বিএনপি সরকার, আওয়ামী লীগ সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও ডিসির সঙ্গে দেখা করেছি এবং বিভিন্ন দপ্তরে চিঠিপত্র দিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো দপ্তরই আমাদের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়নি। বিগত সরকার ইতোমধ্যে আমাদের একটা চিঠি দিয়েছে, ২৫ শতাংশ জমির মূল্য দিয়ে নবায়ণ করার জন্য।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পুরনো ঢাকার সুত্রাপুর, গেন্ডারিয়া, ওয়ারী, শ্যামপুর, কোতোয়ালী ও এর আশপাশ এলাকা প্রায় ৩০ লাখ মানুষ। এই বাসিন্দারা ভূমির খাজনা যুগযুগ ধরে পরিশোধ করে আসছে। কিন্তু ২০১১ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধিশাখা-৮ এক পরিপত্র দ্বারা পুরনো ঢাকার সুত্রাপুর মৌজার খাজনা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী হীন উদ্দেশ্যে ২০১১ সালে ৭০-৮০ বছর সুত্রাপুর মৌজার ৫৪৮ তৌজির লাখ লাখ মানুষ বাড়িঘর, জায়গা-জমি ও সম্পত্তিকে অবৈধভাবে খাসমহাল ও লিজের নামে নামজারি ও খাজনা নেওয়া বন্ধ করে রাখে। ফলে এ এলাকার মানুষরা বাড়ি, জমি পৈতৃক সম্পত্তি নামজারি করতে পারছে না, খাজনাও জমা নিচ্ছে না। জমি হস্তান্তর, জমি ক্রয়-বিক্রয় ও রেজিস্ট্রি করতে পারছে না। এমনকি পিতা-মাতার মৃত্যুর পর ওয়ারিশরা বাড়িঘরের ভাগাভাগি বা বণ্টননামা, হেবা রেজিস্ট্রিও করতে পারছেন না।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক প্ল্যান পাসও হচ্ছে না। নিজ জমিতে ভবণ নির্মাণ করতে পারে না এবং ব্যাংক থেকে ঋণও নেওয়া যায় না। ফলে পুরান ঢাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারও হচ্ছে না এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভূমির নামজারি না করা এবং ভূমি উন্নয়ন কর না নেওয়ার কারণে সরকার নিজেও প্রতি বছর শত শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ২০১১ সালের পর থেকে ডেভেলপার কোম্পানিগুলো ঋণ নিয়ে এসব এলাকায় ফ্ল্যাট বাড়ি তৈরি করেছেন, এখন তারা ঋণের বোঝায় জর্জরিত। তারা শুধু বিপদে নয়, প্রচুরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২৪
ইএসএস/এমজেএফ