ঢাকা, সোমবার, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চুয়াডাঙ্গায় সারের কৃত্রিম সংকট

জিসান আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪
চুয়াডাঙ্গায় সারের কৃত্রিম সংকট

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় দিন দিন তীব্র হচ্ছে সার সংকট। কোনভাবেই স্বাভাবিক হচ্ছে না নন-ইউরিয়া সার সরবরাহ।

ডিলারদের কাছে মিলছে না চাহিদামতো এসব সার। তবে অতিরিক্ত দামে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সার পাচ্ছেন চাষিরা। কৃষকদের অভিযোগ, সারের কৃত্রিম সংকটে ভরা মৌসুমে গোলকধাঁধায় পড়েছেন তারা। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দামেই সার কিনতে হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে ভুট্টা চাষের তোড়জোড় শুরু হলে জেলাজুড়ে নন-ইউরয়িা সারের সংকট তীব্র হয়। সরকারি ডিলারদের কাছে যখন ভর্তুকিমূল্যে সার পাওয়া যায় না তখন অতিরিক্ত মূল্যে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পাওয়া যায় সার। এমন পরিস্থিতিতে সার সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় সার ডিলারদের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সার সংকটকে পুঁজি করে অতিরিক্ত মূল্য আদায় না করতে বারবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন স্বয়ং জেলা প্রশাসক। কিন্তু এরপরও সার সার সংকট কাটেনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় রবি মৌসুমের চাষাবাদে সারের চাহিদা বাড়ে। চলতি মৌসুমে ৯৪ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে চাষ শুরু হয়েছে। এসব জমির অধিকাংশ ক্ষেতে এখন মাঠের পর মাঠ ভুট্টা চাষ করা হয়। ভুট্টা চাষের শুরুতে সারের প্রয়োজন হয় বেশি।

কৃষকদের অভিযোগ, ডিলারদের কাছে গেলে চাহিদা মতো সার পাওয়া যায় না। বিঘাপ্রতি জমির জন্য ১০ কেজি সার দিচ্ছে। তাতে আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার খুচরা দোকান থেকে সার পাওয়া গেলেও দাম ৩-৪শ টাকা বেশি।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বেলগাছি গ্রামের কৃষক আজিমুল ইসলাম বলেন, প্রয়োজনের সময় সার পাচ্ছি না। আবার অপ্রয়োজনে সারের সংকট নেই। প্রতিবছরই এই সময় কমবেশি সারের সংকট দেখা দেয়। তবে এবার এই সংকট আরও তীব্র হয়েছে।

আরেক কৃষক রুহুল আমিন বলেন, ভুট্টা চাষের সময় প্রচুর পরিমাণ সারের প্রয়োজন হয়। না হলে ফলন ভালো হয় না। কিন্তু সরকারি ডিলাররা সে পরিমাণ সার দিতে পারছে না। খুচরা ব্যবসায়ীরা যদিও বিক্রি করছে কিন্তু সেখানে দাম বেশি। যেখানে ডিলাররা সার দিতে পারছে না, সেখানে খুচরা ব্যবসায়ীরা ঠিকই সার মজুদ করে রেখেছেন। তাহলে খুচরা দোকানিরা সার কোথা থেকে পাচ্ছেন?

খুচরা ব্যবসায়ীদের যুক্তি, সারের সংকট নেই। অন্য স্থান থেকে সার নিয়ে এসে চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে। এজন্য সারের দাম কিছুটা বাড়তি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিসিআইসি সার ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী বলেন, রবি মৌসুমে ডিএপি এবং এমওপি সারের চাহিদা বাড়ে। চাহিদা মতো সার না পাওয়ায় সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। এ বছরে যে পরিমাণ সারের চাহিদা পাঠানো হয়েছিল তার তুলনায় আমরা সার পেয়েছি ৫৫-৬০ শতাংশ। ফলে একটি সংকট শুরু থেকেই গেছে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, সরকার কৃষকদের জন্য ভর্তুকিমূল্যে সার দিচ্ছে। সার ক্রয়-বিক্রয়ে কোনো কারসাজি বা সিন্ডিকেট করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরবচ্ছিন্নভাবে সকল কৃষকদের মাঝে সার সরবরাহ করার জন্য কাজ চলছে। সংকট দিনে দিনে কেটে যাচ্ছে। আর কয়েকদিন পর সার সংকট থাকবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।