ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

কয়েকটি রুটে চলছে না বাস, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫
কয়েকটি রুটে চলছে না বাস, ভোগান্তিতে যাত্রীরা বাসের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে

ঢাকা: সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজধানীর কয়েকটি রুটে কাউন্টারভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু করেছে সরকার। তবে এতে খুঁশি নন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।

ফলে গত দুই দিন ধরে রাজধানীর কয়েকটি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন তারা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই সব রুটের যাত্রীরা।

রাজধানীর এয়ারপোর্ট থেকে প্রগতি সরণি হয়ে সায়দাবাদ বা সদরঘাট রুটে চলাচলকারী কিছু বাস গত দুই দিন ধরে চলছে না। এই রুটে কয়েকটি কোম্পানির বাস চললেও সেটা হাতেগোনা। আবার কয়েকটি কোম্পানির বাস পুরোপুরিই বন্ধ রয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর সায়েদাবাদ, মুগদা, বাসাবো, খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা হয়ে চলাচলকারী রাইদাসহ কয়েকটি কোম্পানি তাদের বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রেখেছে। অনাবিল, তুরাগ পরিবহনের কয়েকটি বাস চলছে, তবে তা হাতেগোনা।

এ ছাড়া সদরঘাট থেকে প্রগতি সরণি হয়ে এয়ারপোর্ট রুটে চলাচলকারী আকাশ পরিবহনের বাসও পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ভিক্টরসহ অন্যান্য বাস চলছে স্বল্প পরিমাণে। ফলে এসব রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের গন্তব্যে যেতে পড়তে হচ্ছে পরিবহন সংকটে।

এদিকে কয়েকটি কোম্পানির বাস পুরোপুরি বন্ধ থাকায় হাতেগোনা যে কয়টি চলছে, সেগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। বিশেষত সকালে অফিস শুরুর সময়ে সায়দাবাদ, মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা, নতুনবাজার, সরদরঘাটের বাহাদুরশাহ পার্ক, রায়সাহেব বাজার, তাঁতিবাজার মোড়, গুলিস্থান, পল্টন এলাকায় যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে দীর্ঘক্ষণ। অনেক্ষণ পর বাস এলে যাত্রীদের হুড়োহুড়ি করে বাসে উঠতে দেখা গেছে। অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে উঠতে পারেননি। এতে বাধ্য হয়ে যাত্রীদের কেউ কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ আবার রিকশা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে গেছেন।

দুপুরে গুলিস্থানের জিপিও মোড়ে আব্দুস সালাম নামে এক যাত্রী বলেন, এক ঘণ্টা হলো দাঁড়িয়ে আছি, বাড্ডা রুটে চলাচলকারী পরিবহনগুলোর মধ্যে শুধু একটা ভিক্টর ও প্রচেষ্টা পরিবহনের গাড়ি দেখতে পেয়েছি। এই দুইটা গাড়ি এলেও ভেতরে কোনো জায়গা না থাকায় উঠতে পারিনি। এখন পরের বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি।

নতুনবাজার এলাকায় কথা হয় ইউআইইউ’র সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী মির্জা তাসলিমের সঙ্গে। তিনি মানিকনগর যেতে রাইদা বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। প্রায় আধাঘণ্টা বাসের জন্য অপেক্ষা করেও কোনো বাস দেখতে পাননি। এমনকি তিনি জানেনও না রাইদা বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বাংলানিউজকে মির্জা তাসলিম বলেন, গতকালও ভার্সিটিতে আসার সময় ২০-২৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে একটি বাস পেয়েছি। কিন্তু তাতেও উঠতে অনেক কষ্ট হয়েছে। এখন আজ বাস নেই। রাইদা বাস যে বন্ধ তাই তো জানতাম না। এখন অটোরিকশা ছাড়া যাওয়ার উপায় নেই।

বংশাল যেতে আকাশ পরিবহনের জন্য উত্তর বাড্ডায় দাঁড়িয়েছিলেন ব্যবসায়ী মাকসুদুর রহমান। তিনি বলেন, ২৫ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে আছি। দুই একটি ভিক্টর বা তুরাগ বাস গেলেও আকাশ পরিবহনের কোনো বাস নেই। রাইদাও দেখিনি। পরিবহন মালিকরা যখন ইচ্ছা তখন বাস বন্ধ করে দেবে, তা হতে পারে না। সরকারের এই বিষয়ে কঠোর হওয়া উচিত।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তিনটি রুটের বাসে ই-টিকিটিং ও কাউন্টার পদ্ধতি চালু করে সরকার। এসব রুটে গোলাপি রঙের বাসে কাউন্টার থেকে টিকিট কিনে উঠতে হবে। তবে দ্বিতীয় দিন থেকেই আবার যত্রতত্র যাত্রী তুলছিল এসব বাস। এমনকি আগের মতোই যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী তোলার দাবিতে ১০ ফেব্রুয়ারি সায়েদাবাদে বাস চালক-শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫
এসসি/জিডিসি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।