টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান থেকে: টঙ্গীর তুরাগ তীরে ফজরের নামাজের পর শুরু হওয়া আম বয়ানে মগ্ন মুসল্লিরা। বয়ান চলবে জুমার নামাজের আগ পর্যন্ত।
শুক্রবার বাদ ফজর মাওলানা ইসমাইল হোসেনের আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু শুরু হয় ৫০তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
অবরোধের মধ্যেও ভোগান্তি, শঙ্কা সঙ্গে করে দেশ-বিদেশের বিপুলসংখ্যক মুসল্লি যোগ দিয়েছেন মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহৎ এ ধর্মীয়
আসরে।
ইজতেমা সর্বাত্মকভাবে সফল করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক নজরদারি ও প্রশাসনের তরফে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি।
এবারের দু’পর্বের ইজতেমায় অংশ নেয়ার জন্য ইজতেমা ময়দানকে জেলাওয়ারি নির্দিষ্ট খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্বে ৩২টি জেলার মুসল্লিদের জন্য ময়দানকে ৪০টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে।
এ সব জেলার মুসল্লিরা খিত্তাওয়ারি অবস্থান নিবেন। ১ থেকে ২ নম্বর খিত্তায় গাজীপুর জেলা, ৩ থেকে ১৩ নম্বর খিত্তায় ঢাকা জেলা, ১৪ নম্বর খিত্তায় সিরাজগঞ্জ জেলা, ১৫ নম্বর খিত্তায় নরসিংদী, ১৬ নম্বর খিত্তায় ফরিদপুর, ১৭ নম্বর খিত্তায় রাজবাড়ী, ১৮ নম্বর খিত্তায় শরীয়তপুর, ১৯ নম্বর খিত্তায় কিশোরগঞ্জ, ২০ নম্বর খিত্তায় নাটোর, ২১ নম্বর খিত্তায় রংপুর, ২২ নম্বর খিত্তায় শেরপুর ও হবিগঞ্জ, ২৩ নম্বর খিত্তায় রাজশাহী, ২৪ নম্বর খিত্তায় জয়পুরহাট, ২৫ নম্বর খিত্তায় গাইবান্ধা, ২৬ নম্বর খিত্তায় লালমনিরহাট, ২৭ নম্বর খিত্তায় দিনাজপুর, ২৮ নম্বর খিত্তায় সিলেট, ২৯ নম্বর খিত্তায় চাঁদপুর, ৩০ নম্বর খিত্তায় ফেনী, ৩১ নম্বর খিত্তায় চট্টগ্রাম, ৩২ নম্বর খিত্তায় রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান, ৩৩ নম্বর খিত্তায় বাগেরহাট, ৩৪ নম্বর খিত্তায় কুষ্টিয়া, ৩৫ নম্বর খিত্তায় নড়াইল, ৩৬ নম্বর খিত্তায় চুয়াডাঙ্গা, ৩৭ নম্বর খিত্তায় যশোর, ৩৮ নম্বর খিত্তায় ভোলা, ৩৯ নম্বর খিত্তায় বরগুনা, ৪০ নম্বর খিত্তায় ঝালকাঠি জেলার মুসল্লিরা অবস্থান নেবেন।
তুরাগ নদী মুসল্লিদের পারাপারের জন্য ৭টি ভাসমান সেতু স্থাপন করেছে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল ব্রিগেড। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ১১টি উৎপাদন নলকূপের মাধ্যমে প্রতিদিন তিন কোটি লিটারেরও বেশি বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত ও সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে। এরই মধ্যে নষ্ট ও ক্ষতিগ্রস্ত অজু গোসলখানা এবং টয়লেটগুলো সংস্কার করেছে সিটি কর্পোরেশন।
সরকারিভাবে মুসল্লিদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে মন্নু গেট, এটলাস গেট, বাটা কারাখানার গেট ও টঙ্গী হাসপাতালসহ ৫টি অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। রোগীদের হাসপাতালে নেয়ার জন্য সর্বক্ষণিক ১২টি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন থাকবে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ময়দান এলাকায় থাকছে র্যাব, পুলিশ বাহিনীর পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তায় ১০ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।
সংবাদ সংগ্রহে আসা সংবাদকর্মীদের জন্য মিডিয়া সেন্টার ও বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের (ফ্রি ওয়াইফাই জোন) ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য বিআরটিসির বিশেষ বাস সার্ভিস শুরু হয়েছে। বিআরটিসি বাস আব্দুল্লাহপুর-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল, শিববাড়ী-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল, টঙ্গী-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল, চৌরাস্তা-মতিঝিল ভায়া ইজতেমায় চলাচল করবে।
গাবতলী-গাজীপুর ভায়া ইজতেমাস্থল, গাবতলী-মহাখালী ভায়া ইজতেমা, গাজীপুর-মতিঝিল ভায়া ইজতেমা, মতিঝিল-বাইপাইল ভায়া ইজতেমা, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, চিটাগাং রোড-সাভার, ঢাকা-নরসিংদী এবং ঢাকা-কুমিল্লা বিশ্ব ইজতেমা সার্ভিস চলাচল করবে।
৯ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি ও ১৬ থেকে ১৮ জানুয়ারি দ্বিতল বাস কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন পয়েন্ট থেকে মুসল্লিদের বিশ্ব ইজতেমায় পৌঁছানোর জন্য নিয়োজিত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘন্টা, জানুয়ারী ০৯, ২০১৫
** ১ম দফার বিশ্ব ইজতেমা শুরু
** ভোগান্তি নিয়ে ইজতেমায় মুসল্লিরা