ঢাকা: অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপির দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় জামিন পেয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার রুবেল হোসেন। এর ফলে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে তার অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা আপাতত কেটে গেল।
রোববার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রুবেলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইমরুল কায়েস।
এর আগে সকালে জামিনের আবেদন জানান রুবেলের আইনজীবী ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ। শুনানি শেষে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন আদালত।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের চূড়ান্ত দলে রয়েছেন রুবেল। কারাগারে থাকায় তার বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে শঙ্কা ছিল।
বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সোমবার (১২ জানুয়ারি) থেকে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে জাতীয় দলের ক্যাম্প। রোববারই কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে এতে অংশ নিতে পারবেন রুবেল- এমনটাই জানিয়েছেন তার স্বজনেরা।
আগামী ২৪ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়বেন টাইগাররা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) আগেই জানিয়ে রেখেছে, জামিনে মুক্তি পেলে অস্ট্রেলিয়ায় দলের সঙ্গে যেতে পারবেন এ পেসার।
এর আগে শনিবার বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, রুবেল যদি রোববার আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসতে পারেন, তাহলে তিনি বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাবেন।
তিনি বলেছিলেন, কিন্তু জামিন না পেলে মামলার বিষয়বস্তু দেখে তাকে আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। রুবেল দোষী না হলে তাকে আমরা আইনি সহায়তা করবো। রুবেল বিশ্বকাপ স্কোয়াডে রয়েছেন। দল ও দেশের জন্যে তাকে খুব দরকার।
আবার রুবেল দোষী সাব্যস্ত হলে বোর্ড তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান পাপন।
এ অবস্থায় শনিবার (১০ জানুয়ারি) রুবেল হোসেনের সঙ্গে কারাগারে দেখা করেন তার বাবা-মা ও বিসিবির অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান। প্রায় আধঘণ্টা আকরাম খান ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন রুবেল।
রুবেল যেন জামিনে মুক্তি পান, সে আশা করেছিলেন আকরাম খানও।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান রুবেল। শুনানি শেষে বেলা পৌনে একটার দিকে তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার সাদাতের আদালত।
আদালতে জামিনের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রুবেলের আইনজীবী ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ। অন্যদিকে হ্যাপিও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রুবেলের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন তার আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মনসুর রিপন।
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগে মিরপুর থানায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর রুবেলের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন হ্যাপি। এ মামলায় গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্টে হাজির হয়ে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন রুবেল। বিচারপতি সৈয়দ এবি মাহমুদুল হক ও বিচারপতি মো: আকরাম হোসেন চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে আগাম জামিন দেন। গত ৬ জানুয়ারি এ জামিননামা সিএমএম আদালতে দাখিল করেছিলেন রুবেল।
আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হবে সোমবার (১২ জানুয়ারি)। আইন অনুসারে বিচারিক আদালত থেকে জামিন নিতেই বৃহস্পতিবার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন রুবেল।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৫