ঢাকা: হাইকোর্টে পৃথক দু’টি বেঞ্চের এজলাসকক্ষে বইয়ের মধ্যে পাওয়া তিনটি বস্তুই টাইম বোমা। তবে এগুলো তেমন শক্তিশালী নয়।
মূলত আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই এগুলো রাখা হয়েছিল বলেও ধারণা করছেন তিনি।
বস্তু তিনটি উদ্ধার করে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এসব কথা জানিয়েছেন রহমতউল্লাহ চৌধুরী। তবে পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে বলেও জানান তিনি।
রোববার (১১ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে ১৭ নম্বর আদালতের এজলাসকক্ষের ভেতরে একটি বইয়ের মধ্যে পাওয়া যায় দু’টি বোমা সদৃশ বস্তু। এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে ৯নং আদালতের ভেতরে বইয়ের মধ্যে পাওয়া যায় আরও একটি বোমা সদৃশ বস্তু। খবর পেয়ে তিনটি বস্তুই উদ্ধার করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায় বোম ডিসপোজাল ইউনিট।
ইউনিট ইনচার্জ সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার রহমতউল্লাহ চৌধুরী বাংলানিউজকে আরও জানান, এগুলোতে ক্ষতিকারক বিস্ফোরক দ্রব্য ছিল। বইয়ের মধ্যে রাখা বস্তুগুলো প্রাথমিকভাবে টাইম বোমা বলে পরীক্ষা করে জানা গেছে। তবে তেমন শক্তিশালী না হওয়ায় এগুলো বিস্ফোরিত হলে আশেপাশে থাকা ৪/৫ জন আহত হতে পারতেন।
সুপ্রিম কোর্টের এতো নিরাপত্তার মধ্যে এগুলো কিভাবে ভেতরে নিয়ে এজলাসকক্ষের বেঞ্চে রাখা সম্ভব হলো- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গাউন পরে আইনের বইয়ের মধ্যে রেখে এগুলো যে কেউ সহজেই নিয়ে যেতে পেরেছে বলে আমাদের ধারণা। এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্টদের চোখ এড়াতে আইনের পোশাক ও আইনের বইকে ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে।
একই দিনে তিনটি টাইম বোমা উদ্ধারের খবরে হাইকোর্ট জুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
অ্যানেক্স ভবনের ১৭ নম্বর আদালতে বিচারপতি নিজামুল হক ও বিচারপতি নূরুল হুদা জায়গিরদারের হাইকোর্ট বেঞ্চের এজলাসকক্ষে বিকেল পাঁচটায় পাওয়া যায় দু’টি বোমা সদৃশ একটি বস্তু। এর আগে অ্যানেক্স ভবনের ৯নং আদালতে বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি মো. হাবিবুল গনির বেঞ্চের এজলাসকক্ষেও একই ধরনের বোমা সদৃশ একটি বস্তু পাওয়া যায়।
বোমা সদৃশ বস্তুগুলো দেখার পর পুলিশ ও বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ১৭নং আদালতে পাওয়া দু’টি এবং দুপুর ৩টা বিশ মিনিটের দিকে ৯নং আদালতে পাওয়া একটি বস্তু বোম উদ্ধার করে নিয়ে যান বোম ডিসপোজাল ইউনিটের দল। ইউনিট ইনচার্জ সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার রহমতউল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে দলটি আদালতের এজলাসকক্ষ থেকে সতর্কতার সঙ্গে এগুলো অপসারণ করে নিয়ে যান।
তিনটি বস্তুই বই কেটে ভেতরে বসানো ছিল। উভয় ক্ষেত্রেই গাজী শামছুর রহমানের ‘মাইনর অ্যাক্ট’ বইয়ের মধ্যে বোমা সদৃশ বস্তু রাখা ছিল। এর মধ্যে ৯নং আদালতে পাওয়া বইয়ের মধ্যে একটি এবং ১৭নং আদালতে পাওয়া একটি বইয়ের মধ্যে দু’টি বস্তু রাখা হয়। বই দু’টি খুলে তার মাঝখানে পাতা কেটে লাল টেপে মোড়ানো বোমা সদৃশ বস্তুটি রাখা হয়। এমনকি উভয় ক্ষেত্রে ফাঁকা এজলাস কক্ষের পেছনের বেঞ্চে বই রাখা ছিল।
৯নং আদালতের বেঞ্চ অফিসার আবদুল হাসিব বাংলানিউজকে জানান, বেঞ্চের বিচারপতিরা মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার পর ফাঁকা এজলাসকক্ষের পেছনের বেঞ্চে বইটি দেখা যায়। বইটি খুলে সেখানে তার মাঝখানে পাতা কেটে লাল টেপে মোড়ানো বোমা সদৃশ বস্তুটি দেখা যায়।
দ্রুত এজলাসকক্ষ থেকে সবাই সরে যান। কক্ষটি বন্ধ রাখা হয়। এরপরই পুলিশ ও বোমা অপসারণ দলকে খবর দেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার এস এম কুদ্দুস জামান জানান, বোমা অপসারণ দলকে খবর দেওয়ার পর তারা এসে সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৫
** হাইকোর্টে আরও দু’টি বোমাসদৃশ বস্তু, চরম আতঙ্ক
** বোমাসদৃশ বস্তুটি সরানো হয়েছে
** হাইকোর্টের ভেতরে বোমাসদৃশ বস্তু, আতঙ্ক