ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীতে আবারও শীতের কামড়

শরীফ সুমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৫
রাজশাহীতে আবারও শীতের কামড় ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহী: মাঝখানে বিরতি দিয়ে রাজশাহীতে আবারও কামড় বসিয়েছে শীত। দিনের তাপমাত্রা প্রতিদিনই কমছে।

ঘন কুয়াশার চাদর ভেদ করে ভোরের সূর্যের দেখা মিলছে দুপুরে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার (৯ জানুয়ারি) রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার (১০ জানুয়ারি)  সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৫। আজ রোববার (১১ জানুয়ারি) রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুই দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তিনি জানান, ডিসেম্বরের পর সামান্য বিরতি দিয়ে রাজশাহীর ওপর দিয়ে আবারও মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) থেকে মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এছাড়া চলতি মাসের শেষের দিকে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।

এদিকে শীতে মহানগরীর ছিন্নমূল মানুষ পথের ধারে খড়-কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে শীতে কাতর তারা। সন্ধ্যার পর তাদের ওপর অবর্ণনীয় দুর্ভোগ নেমে আসে। সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণও শুরু হয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে ষাটোর্ধ্ব জয়নাল মিয়া জানালেন, সৌভাগ্যক্রমে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুইটি কম্বল তিনি পেয়েছেন। রাতে একটি মেঝেতে বিছান, অপরটি গায়ে জড়িয়ে ঘুমান। কিন্তু সকালে ভিক্ষা করতে যাওয়ার সময় তেমন কোনো শীত বস্ত্র নেই তার। আর কম্বল শরীরে জড়িয়ে ভিক্ষাও করতে পারেন না। গায়ে দেওয়ার মতো শীতবস্ত্র না দিয়ে সবাই কেন শুধু কম্বলই দেন এ প্রশ্নের কোনো উত্তর খুঁজে পান না জয়নাল মিয়া।     

প্রতিকূল আবহাওয়ায় ভিড় বেড়েছে মহানগরীর গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। বিশেষ করে ফুটপাতের দোকানগুলোতে দেখা গেছে উপচেপড়া ভিড়। প্রয়োজনের তাগিদে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো নিজের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য সুবিধাজনক দামে শীতবস্ত্র কিনতে পারছেন সেখানে।

আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে মানুষজন আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত নানা রোগে। বেশী আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। হাসপাতালেও বাড়ছে শীতজনিত নানা অসুখে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশুরা কোল্ড ডায়ারিয়া ও বয়স্করা শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক আজিজুল হক জানান, হঠাৎ করে শীত বেড়ে যাওয়ায় সব বয়সের মানুষ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এ সব রোগীর মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বেশি।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক হজরত আলী জানান, বাড়তি শীত নিয়ে শঙ্কা কাটছে না কৃষকদেরও। বছরে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে বোরো বীজতলার কোল্ড ইনজুরি, আলুর আর্লি ব্লাইটসহ ডাল ফসলের নানান শীতজনিত রোগের প্রার্দুভাব দেখা দেয়। তবে এ জন্য কৃষকদের স্থানীয়ভাবে নিকস্থ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ মেনে চলার আহবান জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।