আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): রেলপথে নাশকতা রোধে নিরাপত্তা জোর করা হয়েছে। কমানো হয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেনের গতিবেগ।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার বাংলানিউজকে নাশকতা রোধে রেলপথে নিরাপত্তা জোরদার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রেলওয়ে পুলিশ সূত্র জানায়, রেলপথে অব্যাহত নাশকতা এড়াতে রেলপুলিশ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। পদক্ষেপের মধ্যে প্রতি দুই কিলোমিটার অন্তর রেলপথে ৪জন করে নিরাপত্তা রক্ষী দায়িত্ব পালন করবে। এখন থেকে প্রতিটি যাত্রীবাহী ট্রেনে নিরাপত্তা সদস্য তিনের বদলে পাঁচ করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো চিহ্নিত করে আনসার সদস্যে মোতায়ন করার।
এরইমধ্যেই রাতে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের সামনে নিরাপত্তারক্ষীসহ একটি ইঞ্জিন ও ট্রলি দিয়ে টহল শুরু হয়েছে।
এছাড়া, নাশকতা প্রতিরোধ রেলপথে গ্রাম পুলিশের পাহারা বসানো হবে। স্থানীয় সরকার দলীয় লোকজন খবরা-খবর দিয়ে তাদের সাহায্য করবে। গ্রাম পুলিশের সঙ্গে রেলওয়ে পুলিশ সর্বক্ষণিক মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রাখবে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে রেলওয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। বৈঠকে রেলপথে নাশকতা বন্ধ করতে পুলিশ-জনগণ এক সঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের লোকোশেড ইনচার্জ মোহাম্মদ মহসিন ভূইয়া বাংলানিউজকে জানান, ট্রেন চলাচল নিরাপদ রাখতে এখন থেকে প্রতিটি যাত্রীবাহী আন্ত:নগর ট্রেনের আগে জরুরি শাটল (যাত্রীবাহী ট্রেনের আগে একটি ইঞ্জিন চালানো), জরুরি ট্রলি (ট্রলি নিয়ে ট্রেনের আগে যাত্রা) ও জরুরি টহল (লাইন ঠিক আছে কি না, তা রেলওয়ে কর্মীর হেঁটে দেখা) চালানো হবে। এ জন্য ট্রেনের ইঞ্জিন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ শাটল ট্রেনগুলো চালাতে গিয়ে অটোমেটিক ট্রেনের সময়সূচি বদলে যাচ্ছে। আর যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কমানো হয়েছে ট্রেনের গতিবেগ।
এব্যাপারে ডিভিশনাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (ডিএমই) সাদেকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবে ও ঘনকুয়াশার কারণে এখন ৪০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো হচ্ছে। যার ফলে ট্রেন গন্তব্যেস্থলে পৌঁছতে অনেকটা বিলম্ব হচ্ছে।
সম্প্রতি রেলপথে দুর্বৃত্তরা আবারও নাশকতা চালাচ্ছে। রাতের আধারে খুলে ফেলে রেললাইনের ফিসপ্লেট ও নাটবল্টু। কোথাও কোথাও কেটে ফেলে রেল লাইন। এতে যাত্রীবাহী ট্রেন দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে হতাহতের মতো ঘটনা ঘটছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কোটি কোটি টাকার রেল সম্পদ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেন বিলম্ব হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ট্রেন যাত্রীদের।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫