ঢাকা: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, চট্টগ্রাম, সিলেট ও উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রোববার রাতে অর্ধশতাধিক নৈশ কোচ ছেড়ে গিয়েছে। এমনকি কলকাতার যাত্রীদের জন্য বেনাপোলের উদ্দেশেও বাস ছেড়ে গেল।
২০দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধের মধ্যে এ বাস ছেড়ে গেলেও যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি কোনো ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
ঈগল পরিবহনের বারিধারা কাউন্টারের সেলস ম্যানেজার সাগর জানালেন, বিশ্বইজতেমা প্রথম পর্ব শেষ হওয়ায় যাত্রীদের চাপ কিছুটা বেশি। ইজতেমা ফেরত বহু যাত্রী বাসের জন্য অপেক্ষ করছেন। যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি কোনো ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না।
কাউন্টারের সামনের রাস্তায় বাস আসামাত্র যাত্রীরা বাসে যাচ্ছেন। অবরোধের মধ্যে এমন সুব্যবস্থায় বাস পেয়ে যাত্রীরা দারুণ খুশি। মুখে বাড়ি ফেরার পরিতৃপ্তির হাসি। কাউন্টারে অনেক নারী ও শিশুও দেখা গেল।
সাগর রোববার মধ্যরাতে বাংলানিউজকে জানান, বাড়তি নয়- বাস মালিক অ্যাসোসিয়েশনের বেধে দেওয়া ভাড়াই নেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে।
তিনি জানান, টহল পুলিশ পাহারা দিয়ে বাস চলাচলের ব্যবস্থা করছেন। এভাবে ঘাট পর্যন্ত বাস যাচ্ছে। একই ব্যবস্থা দৌলতদিয়া থেকে যাচ্ছে যশোর-খুলনা অবধি।
সোহাগ কাউন্টারের সহকারী গোপাল জানালেন, তাদের এ কাউন্টার হয়ে ৬টি বাস যশোর-খুলনা, বেনাপোল, বরিশালসহ বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গিয়েছে। অনির্ধারিত অনেক যাত্রী আসছেন তাদের কাউন্টারে। তারা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বাসের ব্যবস্থা করছেন।
গোপাল আরও জানান, এ কয়দিন বাস চলেনি। বাস না চললে চালক ও হেলপাররা কোনো মজুরি পান না। তারা ট্রিপের ওপর মজুরি পান।
রাজধানীর আরামবাগ-ফকিরাপুল, মালিবাগ, বাড্ডা, কলাবাগান, শ্যামলী ও গাবতলী টিকিট কাউন্টার ঘুরে দেকা গেল, অপেক্ষান যাত্রীরা বাস আসা মাত্র তাদের নির্ধারিত আসনে গিয়ে বসছেন।
ফকিরাপুল সোহাগ পরিবহনের সেলসম্যান আকরাম জানালেন, আমরা ভেবেছিলাম কাঙ্খিতভাবে যাত্রী পাব না। কিন্তু রোববার এ অবস্থা দেখে ভালই লাগছে। লোকে ঢাকায় কাজে এসে আটকা পড়েছিলেন, তারা এখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন মনের শান্তিতে।
তিনি বলেন, অবরোধ ২/১ দিন হলে মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু অনির্দ্দিষ্ট সময়ের জন্য এমন কর্মসূচি মেনে নেওয়া যায় না। সবাই চায় কাজ শেষে আপনজনের সান্নিধ্য। মানুষের তো শিক্ষা, চিকিৎসাসহ কতো কাজের জন্য ঢাকায় আসতে হয়।
আরামবাগ-ফকিরাপুল বাস ডিপো থেকে ঈগলের ১৩টি বাস ছেড়ে গিয়েছে যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বেনাপোলের উদ্দেশে।
এছাড়া সোহাগের ১১টি, হানিফের ১৫টি, শ্যামলীর উত্তরবঙ্গসহ চট্টগ্রামের উদ্দেশে ২০টি বাস ছেড়ে গিয়েছে।
ঢাকার বিভিন্ন বাস কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শুধু টিকিট কাটা যাত্রীরাই নয়, ইজতেমায় আগত মুসল্লিরা বাস রিজার্ভ করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৬০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫