খুলনা: জেলার পাইকগাছার কুমারখালী চরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সুন্দরবনের বনদস্যু রাঙ্গাবাহিনীর প্রধান আমির হোসেন রাঙ্গা নিহত হওয়ার ঘটনায় উপকূলবাসীর অনেকে খুশিতে মিষ্টি বিতরণ করেছেন।
সোমবার (১২ জানুয়ারি) ভোরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রাঙ্গা নিহত হন।
এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুটি বন্দুক, একটি বিদেশি পিস্তল, ১২ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, ৭ রাউন্ড চাইনিজ রাইফেলের গুলি এবং দুই রাউন্ড পিস্তলের গুলি, একটি দা ও একটি কাঁচি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত রাঙ্গা খুলনার রূপসা উপজেলার আলাইপুর গ্রামের শফি উদ্দিন সরদারের ছেলে। রাঙ্গার বিরুদ্ধে পাইকগাছা, দাকোপ, মংলা, রূপসাসহ বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, অপহরণ, ডাকাতিসহ অর্ধডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
খুলনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকনুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, বনদস্যু রাঙ্গাকে রোববার (১১ জানুয়ারি) বেলা তিনটার দিকে তার শ্বশুরবাড়ি পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালী গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে থানায় রেখে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রাঙ্গা স্বীকার করেন তিনি ও তার বাহিনীর কাছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ রয়েছে।
রোকনুজ্জামান বলেন, রাঙ্গার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের জন্য সুন্দরবনে অভিযানে যায় পুলিশ। সুন্দরবনের কুমারখালী নামক স্থানে পৌঁছলে রাঙ্গার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় রাঙ্গা গুলিতে আহত হয়। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পিছু হটলে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে গুরুতর আহত রাঙ্গাকে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, সোমবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য রাঙ্গার লাশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০১৪ সালে পাইকগাছায় চার দফা ‘বন্দুকযুদ্ধে‘ বাহিনী প্রধান কাশেমসহ ১৬ বনদস্যু নিহত হন। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সুন্দরবনের অন্য দস্যুরা।
জীবন বাঁচাতে সুন্দরবনের ভয়ঙ্কর এসব বনদস্যু ও জলদস্যু গা ঢাকা দেয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতি মুহূর্তে সুন্দরবনের কর্মরত বনজীবীসহ স্থানীয়দের ওপর নির্মম অত্যাচার, নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়ে আসছে বেশ কিছু দস্যুবাহিনী। তারা একের পর এক চাঁদার দাবিতে বিভিন্ন ব্যক্তিকে অপহরণ করতো। পরিস্থিতি এমন নির্মমতায় পৌঁছেছে যে জীবন-জীবিকার তাগিদে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে যাওয়া ব্যক্তিরা অপহৃত হলে তাদের পরিবার- পরিজন যদি দস্যুদের চাহিদা অনুযায়ী মুক্তিপণের অর্থ দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে অপহৃতকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আর এ কাজে বেশ পারদর্শী ছিল নিহত রাঙ্গা।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫
** সুন্দরবনের দস্যু বাহিনী প্রধান রাঙ্গা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত