ঢাকা: সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ‘কখনো ইসলাম অথবা নবী মুহাম্মদ (স.) এর বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য দেননি। এছাড়াও নিউইয়র্কে দেওয়া তার ৩০ মিনিটের বক্তব্য বিকৃতভাবে গণমাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়’।
এমনটাই দাবি করা হয়েছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে।
২০১৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে এক অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী বলেছিলেন, ‘আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাত দুটোর ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীর যতোটা বিরোধী, তার চেয়ে বেশি হজ আর তাবলিগের বিরোধী’।
লতিফ সিদ্দিকীকে মুক্তি দিতে স্ত্রী লায়লা সিদ্দিকীর পক্ষে সরকারকে দেওয়া আইনজীবীর পাঠানো আইনি নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কিছু বিষয় এবং হজ নিয়ে লতিফ সিদ্দিকীর কিছু অনানুষ্ঠানিক বক্তব্য তার অজ্ঞাতসারে গোপনভাবে রেকর্ড করে প্রচার করা হয়।
এ বক্তব্য দেওয়ার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে মেক্সিকো যান। সেখানে যাওয়ার পর জানতে পারেন, তার বক্তব্য ডিজিটালি প্রস্তুত এবং বিকৃত করে বাংলাদেশের স্থানীয় গণমাধ্যম প্রচার করে।
আইনি নোটিশে দাবি করা হয়, ওই অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী প্রায় ৩০ মিনিট বক্তব্য রেখেছিলেন। কিন্তু গণমাধ্যম তার এ বক্তব্যে বিকৃত করে মাত্র দুই মিনিট নয় সেকেন্ড প্রচার করে। ওই অনুষ্ঠানে লতিফ কখনো ইসলাম ও নবী মুহাম্মদ (স.) এর বিরুদ্ধে কোনো কিছু বলেননি।
কিন্তু মিডিয়ায় লতিফ সিদ্দিকীর বিকৃত বক্তব্য প্রচারের পর সারা দেশে ৩০টি মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। আর সবগুলো মামলাই দণ্ডবিধির ২৯৫, ২৯৫/এ অথবা ২৯৮ ধারায়। এসব মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। মামলার পর গত বছরের ২৩ নভেম্বর দেশে ফিরে ২৫ নভেম্বর ধানমণ্ডি থানায় ধরা দেন। একইদিন আদালতে আত্মসমর্পণের পর থেকেই কারাগারে রয়েছেন তিনি।
রোববার (১১ জানুয়ারি) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে লায়লা সিদ্দিকীর পক্ষে আইনি নোটিশটি পাঠান আইনজীবী ব্যরিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
নোটিশে দাবি করা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৮৮ ধারায় বাংলাদেশের বাইরে সংঘটিত অপরাধের দায়িত্ব বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘সরকারের অনুমতি ব্যতীত এ রুপ কোনো অভিযোগের অনুসন্ধান বাংলাদেশে হইবে না’।
এছাড়াও সংবিধানের ৩৫(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘এক অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারিতে সোপর্দ ও দণ্ডিত করা যাইবে না’। কিন্তু তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে।
এসব কারণ দেখিয়ে মুক্তি দাবি করেন লতিফ সিদ্দিকীর স্ত্রী লায়লা সিদ্দিকী।
নোটিশে বলা হয়, সাত দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা না নিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে বিবাদী করা হয়েছে আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, কারা মহাপরিদর্শক, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার ও ডেপুটি জেলার, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার এবং ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমকে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার সরকারে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। চলতি সরকারে পেয়েছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। কিন্তু ওই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে গত বছরের ১২ অক্টোবর দলের সভাপতিমণ্ডলীর পদ এবং মন্ত্রিত্ব হারান টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে নির্বাচিত চারবারের এই সংসদ সদস্য।
** লতিফ সিদ্দিকীর মুক্তি চেয়ে স্ত্রীর আইনি নোটিশ
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫