গোপালগঞ্জ: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, কৃষি, মৎস্য ও দারিদ্র বিমোচনে এগিয়ে যাচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলা।
এ ধারা অব্যাহত থাকলে একদিন উন্নয়নের মডেল জেলায় পরিণত হবে গোপালগঞ্জ।
২০১২ সালের ৪ নভেম্বর তিনি এ জেলার প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন। এরই মধ্যে গোপালগঞ্জের মানুষের কাছে তিনি একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ও জনবান্ধব জেলা প্রশাসক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলানিউজের গোপালগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট এস এম একরামুল কবীর।
সপ্তাহে নির্দিষ্ট একদিন জেলা প্রশাসক সাধারণ মানুষের কথা শোনেন ও প্রয়োজন অনুযায়ী পরামর্শ দেন।
সম্প্রতি গোপালগঞ্জে রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বলেন, রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর ভাটিপাড়া পর্যন্ত নতুন রেল লাইন স্থাপন করা হয়েছে। এ লাইনে একটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে। কাশিয়ানী থেকে গোপালগঞ্জ সদর হয়ে টুঙ্গীপাড়া পর্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসারণের জন্য আরো একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই লাইন স্থাপনের কাজ শুরু হবে।
পদ্মাসেতু নির্মাণ শেষ হলে এ জেলার সঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জেলার রেল যোগাযোগ চালু হবে। যা সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, গোপালগঞ্জের অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। এটি খাদ্য ও মৎস্য-উদ্বৃত্ত জেলা। এখানে প্রচুর ধান, পাট, টমেটো, তরমুজ ও দেশীয় মাছ উৎপাদিত হয়। বিভিন্ন জেলার সঙ্গে রেল যোগাযোগ চালু হলে কৃষক অল্প খরচে কৃষিপণ্য বিভিন্ন জেলায় পাঠাতে পারবেন। এতে কৃষক লাভবান হবেন। কম খরচে মানুষ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করতে পারবেন। তাদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। ফলে জেলার মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গোপালগঞ্জ জেলা তথ্যবাতায়ন খোলা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ বিষয়ক সেমিনার করা হচ্ছে। মানুষকে অনলাইন ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের অনেক কাজ ই-সেবা কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। এখন ঘরে বসেই শিক্ষা, ভূমিসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছে মানুষ। বর্তমানে বিভিন্ন পরীক্ষার আবেদন পত্র গ্রহণ, পূরণ ও তথ্যাদি অনলাইনেই মিলছে।
ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করায় জনগণ সহজে ও দ্রুততম সময়ে বিভিন্ন সেবা পাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বর্তমানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ইলেক্ট্রনিক হাজিরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে অফিসে নির্ধারিত সময়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক নজরদারির জন্য বসানো হয়েছে সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা। তাছাড়া স্কাইপ-এর মাধ্যমে জেলার সব এলাকার অবস্থা সরাসরি মনিটর করা সম্ভব হচ্ছে।
জেলার শতকরা ৪০ ভাগ ডিজিটাল সেন্টার থেকে মানুষ পরিপূর্ণ সেবা পাচ্ছে। এসব ডিজিটাল সেন্টার থেকে জনসাধারণ খুব অল্প সময়ে ও কম খরচে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বৈদেশিক যোগাযোগ, কম্পোজ, স্ক্যানিং সেবা, খতিয়ান সরবরাহ, বিল পরিশোধ ইত্যাদি সেবা পাচ্ছে। তবে ইন্টারনেটের গতি কম হওয়ায় ৬০ ভাগ ডিজিটাল সেন্টার থেকে জনসাধারণ কাঙিক্ষত সেবা পাচ্ছে না। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে ব্রডব্যান্ডের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
জেলার বেকার সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের জন্য বেকারদের আইসিটির ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তারা ইংরেজি না জানায় ও তাদের শেখার ধৈর্য কম হওয়ায় কাঙিক্ষত ফল পাচ্ছি না। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি তাদের আইসিটির ওপর প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করতে। কারণ এ সেক্টরে কাজ করে অল্প পরিশ্রম করে ভালো উপার্জন করা সম্ভব। এর মধ্যেও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বেশ কয়েকজন স্বাবলম্বী হয়েছেন।
গোপালগঞ্জ পৌর এলাকার অন্যতম সমস্যা যানজট। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বলেন, গোপালগঞ্জ পৌরসভার প্রধান রাস্তাটি চার লেনে উন্নীত করার জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই এ কাজ শুরু হবে। এছাড়া রাস্তার পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। হাইওয়ের অতিরিক্ত স্পিড ব্রেকারগুলো অপসারণ করা হয়েছে। আশা করি, শিগগিরই যানজন সমস্যা নিরসন হবে।
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের হরিদাসপুর এলাকায় বিসিক শিল্পনগর সম্প্রসারণ করা হয়েছে। আরো কিছু জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া পদ্মাসেতু হলে মহাসড়কের পাশে অনেক শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, তখন বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তাছাড়া জেলার কোটালীপাড়া উপজেলায় এক্সক্লুসিভ ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন গড়ার প্রস্তাবও বিবেচনাধীন।
জেলার জলাভূমি বেষ্টিত গ্রামগুলোতে সড়ক পথে যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ও কাশিয়ানী উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম নিম্ন জলাভূমিবেষ্টিত। এসব গ্রামের মাঠ-ঘাট সাত/আট মাস পানিতে ডুবে থাকে। ওই সময় তারা ছোট ছোট ডিঙি নৌকায় যাতায়াত করেন। পানি কমতে শুরু করলে কাদায় নাকাল হন এসব গ্রামের বাসিন্দারা। সরকারের টিআর প্রকল্পের মাধ্যমে এসব গ্রামে রাস্তা নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পানি নিষ্কাশনের জন্য খাল খনন করা হয়েছে।
এছাড়া ওই সময় কৃষকের তেমন কোনো কাজ থাকে না। ওই সময় কৃষকদের কাজ দেওয়ার জন্য ‘ ‘পেন কালচার’’ পদ্ধতিতে মাছ চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ পেন কালচার সফল হওয়ায় প্রতি বছর এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে স্থানীয় কৃষকদের কর্মহীনতা দূর হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
জেলার শিক্ষার হার সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমানে এই জেলার শিক্ষার হার ৫৮ দশমিক ১ শতাংশ (২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী)। এ হার মোটামুটি সন্তোষজনক। তবে, বর্তমানে এ হারকে আরো বাড়াতে কাজ করা হচ্ছে। শিশুদের মধ্যে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্রেণিকক্ষে ই-কনটেন্টের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন পর্যায়ে পাঁচটি উপজেলার সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিনব্যাপী বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করেছি। এতে কিছুটা সুফল পাওয়া যাচ্ছে। তবে, শিক্ষক নিয়োগে ম্যানেজিং কমিটির ক্ষমতা রহিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক কমিশন গঠন করলে ও এ কমিশন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলে ভালো শিক্ষক নিয়োগ করা সম্ভব হবে। আর তা সম্ভব হলে শিক্ষার মানের উন্নয়ন ঘটবে।
জেলার বাল্য বিয়ের হার হ্রাস পেয়েছে বলে মনে করেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, এখনকার অভিভাবকরা অনেক সচেতন। তবে, অভাব অনটন বা নিরাপত্তার অভাবে গ্রাম-গঞ্জে দুই/চারটি বাল্য বিয়ের ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বয়স বাড়িয়ে অনেকে এ কাজ করে থাকেন। তবে জনগণ সচেতন হওয়ায় এলাকার কোনো শিশু বা কিশোর-কিশোরীর বিয়ে ঠিক হলে আগেই তারা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানিয়ে দেন। ফলে খবর পেয়ে বেশ কিছু বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করছে প্রশাসন।
এ জেলার কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। ছোট-খাটো বিষয় নিয়ে অভিমান করে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। তবে এ বিষয়ে কোনো গবেষণার ফলাফল হাতে নেই বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। সচেতনতা বৃদ্ধি করা গেলে এর হার কমিয়ে আনা সম্ভব।
তিনি বলেন, সারাদেশের মতো এখানেও যৌন হয়রানির কিছু ঘটনা ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বেসরকারি সংস্থা এ বিষয় নিয়ে সচেতনামূলক কাজ করছে। এছাড়া যৌন হয়রানির খবর পেলে প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে বখাটেদের আটক করে জেল-জরিমানা করছে। সমস্যাটি সমাধানে সামাজিক উদ্যোগ ও জনসচেতনতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক বলেন, জেলায় ৬৮টি ইউনিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে সিংগা, মাহমুদপুর ও পাইককান্দি ইউনিয়নে কোনো হাট নেই। ফলে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে তাদের। শিগগিরই এসব এলাকায় হাট-বাজার স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতি বছর মধুমতি নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে জেলার দক্ষিণ ফুকরা গ্রাম। এতে ফসলের ক্ষেতসহ সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। নদী ভাঙন রোধে কাজ শুরু করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আগামীতে আর এ সমস্যা থাকবে না।
জেলা প্রশাসক বলেন, জেলার ক্রীড়াঙ্গণকে সক্রিয় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখানে ২৭তম জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দীর্ঘ ১৯ বছর পর জেলা প্রশাসক গোল্ড কাপ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। অনুর্ধ্ব-১৮ ফুটবলারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বি-ডিভিশন ফুটবল লীগ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি আরো জানান, গোপালগঞ্জে মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এতে এ জেলার মেয়ে খেলোয়াড়রা উৎসাহিত হবেন।
শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শেষের পথে। এটি নির্মিত হলেও শিগগিরই এখানে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়তো হবে না। কারণ গোপালগঞ্জে থ্রি-স্টার মানের কোনো হোটেল নেই। তবে জাতীয় পর্যায়ের ম্যাচ হওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।
গোপালগঞ্জে বিকেএসপির আদলে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
তিনি বলেন, আমি সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে প্রায়ই তাদের মুখোমুখি হয়েছি। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন গ্রামে প্রচুর তরমুজ উৎপাদিত হয়। তরমুজের মৌসুমে ওই এলাকার অস্থায়ী আড়ৎগুলোতে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী সেখানে অগ্রণী ব্যাংকের শাখা অনুমোদন করা হয়েছে। আগামী মৌসুমের আগেই ওই এলাকায় ব্যাংকের শাখাটি স্থাপিত হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, টুঙ্গীপাড়া উপজেলার দরিদ্রতম গ্রাম বেলেডাঙ্গা। ওই গ্রামের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করতেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় ও বিদ্যুতের অভাবে তাদের জীবন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন স্থবির ছিল। আমি ওই গ্রাম পরিদর্শন করি। পরে ওই গ্রামের দরিদ্র ৫০ পরিবারকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে অনুরোধ জানাই। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা করে কৃষিঋণ দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দরিয়ারকূল গ্রামের ১৫০টি পরিবারকে অনুরূপ আর্থিক সাহায্য করা হবে। গ্রামটিতে রাস্তা করা হয়েছিল। কিন্তু বর্ষায় এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বছর ওই গ্রামে বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পন্ন হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক বলেন, গোপালগঞ্জ শহরের গোবরা এলাকায় বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শহরের সদর হাসপাতাল সংলগ্ন নবীনবাগ ও পাঁচুড়িয়া এলাকায় শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। বর্তমানে সদর হাসপাতালে মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম চলছে তিন বছর ধরে।
এছাড়া নারী শিক্ষার হার বাড়াতে পুরাতন জেলখানা ভেঙে শেখ হাসিনা স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপিত হয়েছে। আট কোটি টাকা ব্যয়ে ডিজিটাল লাইব্রেরি ও ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাব করা হচ্ছে। এতে চাকরি প্রাপ্তি ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ের কাজে দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে এ জেলার নিচু অঞ্চল গোপালগঞ্জ সদর ও টুঙ্গীপাড়া উপজেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও লবণাক্ততা নিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ কাজ সম্পন্ন হলে এসব এলাকার কৃষি জমি দুই ও তিন ফসলি কৃষি জমিতে রূপান্তরিত হবে।
এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় প্রথমবারের মতো এক দশমিক ছয় লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এ জেলায় কখনো খাদ্য ঘাটতি বলে কিছু থাকবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৫