ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাড়তি নিরাপত্তায় গতি কমেছে ট্রেনের

শরীফ সুমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৫
বাড়তি নিরাপত্তায় গতি কমেছে ট্রেনের ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহী: রাতের ট্রেন ভোরে, ভোরের ট্রেন দপুরে। আর দুপুরের ট্রেন রাতে।

সিডিউল বিপর্যয়ের কারণে অবরোধের মধ্যে এভাবেই চলছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ট্রেন চলাচল। নাশকতা ঠেকাতে ট্রেনের গতি কমিয়ে আনা হয়েছে ৫০ কিলোমিটারে। পাইলটিং (ট্রেনের আগে আরও একটি ইঞ্জিন পাঠানো) সিস্টেমে চলছে রাতের ট্রেন। ফলে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট সময়ের চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে ট্রেন। আবার রাজধানীসহ বিভিন্ন রুট ঘুরে রাজশাহীতে পৌঁছাচ্ছেও দেরিতে।  

এর ফলে রাজশাহী-ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের এখন যারপরনাই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর (পুলিশ, র‌্যাব-বিজিবি) বিশেষ পাহারায় লোকাল বাসগুলো চলাচল করলেও ছাড়ছে না নামী-দামী কোম্পানির বাসগুলো। ফলে চাপ পড়েছে ট্রেনের ওপর। যাত্রীরা বসার জন্য টিকিট না পেলেও ‘স্ট্যান্ডবাই’ টিকিট নিয়েই গন্তব্যে পৌঁছাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন ট্রেনের জন্য।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জাহীদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বিশেষ করে রাজশাহী-ঢাকা বাস সার্ভিস স্বাভাবিক না হওয়ায় ট্রেনের যাত্রী সংখ্যাও বেড়েছে। এর ফলে অনেকেই টিকিট না পেয়ে দাঁড়িয়েই রওনা দিচ্ছেন। এর উপর নাশকতার আশঙ্কায় ট্রেনের গতি কমানোয় প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে সিডিউল বিপর্যয়। আগে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলো ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে চলত।

সেখানে তা কমিয়ে ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটারে আনা হয়েছে। তবে প্রতিদিন সকালের তিতুমীর, মধুমতি, সাগরদাঁড়ি, সিল্কসিটি ও সিক্সডাউন মিল ছাড়লেও গন্তব্যে যেতে এবং সেখান থেকে ফিরে আসতে তিন থেকে চার ঘণ্টা দেরি হচ্ছে। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।

রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল করিম জানান, রাজশাহী থেকে প্রতিদিন পাঁচটি রুটে ট্রেন চলাচল করে। রুটগুলো হচ্ছে- ঢাকা, খুলনা, সৈয়দপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজবাড়ী। এসব গন্তব্যে প্রতিদিনই ১৬টি ট্রেন ৩২ বার যাওয়া-আসা করে। এর মধ্যে ৮টি ট্রেন আন্তঃনগর।

অবরোধকালীন সময় রাজশাহী-ঢাকাসহ এ পাঁচটি রুটের যাত্রীদের ভ্রমণকালীন নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। রাজশাহী স্টেশনে নাশকতা এড়াতে পাঁচটি প্লাটফর্মসহ গুরুতপূর্ণ ১৬টি স্থানে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। গভার্মেন্ট রেলওয়ে পুলিশের (জিআরপি) সঙ্গে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মীও।

আবদুল করিম আরও জানান, রাতের ট্রেনগুলো চলাচল করছে পাইলটিং ব্যবস্থায়। পুলিশ পাহারায় একটি ইঞ্জিন এক স্টেশন থেকে অপর স্টেশন পর্যন্ত আগে গিয়ে জানালে পেছনের ট্রেনটি ছাড়ছে। প্রতি ট্রেনের নিরাপত্তায় একজন উপপরিদর্শকসহ (এসআই) ১২ সদস্যের নিরাপত্তা দল থাকছে।

এছাড়া রাজশাহী মহানগর পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরাও রেলের নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। এভাবে চলার কারণে রাজশাহী রুটে ট্রেন চলাচলে শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। তবে চলমান অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার হলে আবারও নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন চলাচল করবে বলেও জানান পশ্চিম রেলের এ কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, অবরোধের নাশকতা রোধে গত সোমবার (১২ জানুয়ারি) থেকে প্রতি কিলোমিটার রেলপথে ১০ জন করে পাহারাদার থাকছেন। এ জন্য কাজ করছেন ১০ জন করে আনসার সদস্য। এছাড়া রাজশাহী থেকে আবদুল্লাপুর পর্যন্ত রেল লাইন পাহারা দিতে রাতে একটি ট্রলিও যাতায়াত করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।