ঢাকা: দুস্থ মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচির (ভিজিডি) মূল লক্ষ্য, অসহায় মানুষদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্মনির্ভরশীল করে তোলা হলেও বাস্তবে তা সঠিকভাবে হচ্ছে না বলে মনে করছে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বারদের সম্পৃক্ত না করাই এক্ষেত্রে বড় সমস্যা দাবি করে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কমিটির সদস্যরা।
বৈঠকে ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের ভিজিডি বণ্টনের কাজ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
বুধবার (১৪ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মহিলা ও শিশু বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিটির সভাপতি বেগম রেবেকা মবিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দাবি করা হয়, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে ভিজিডি ব্যবহার করেন বলে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়। বৈঠকে কোনো একটি নির্দিষ্ট এনজিওকে সব দায়িত্ব না দিয়ে জেলা পর্যায়ের সবার কাছে পরিচিত এবং ট্র্যাক রেকর্ড ভালো যে এনজিওগুলোর, তাদের এ কাজে সম্পৃক্ত করার প্রস্তাব করা হয়।
একই সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের এই কাজে তদারকির দায়িত্ব দেওয়ারও সুপারিশ করা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ভিজিডি কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত এনজিওগুলো স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অবগত না করেই ভিজিডি বণ্টন করছে। অনেক সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাদের পছন্দের লোকজনদের মধ্যে ভিজিডি বণ্টন করেন। আবার ভুয়া পরিচয়েও বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে তদারকির অভাব রয়েছে বলে বৈঠকে অভিযোগ করা হয়।
কমিটি সদস্য মাহাবুব আরা বেগম বলেন, ভিজিডি বিতরণের সময় স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অবহিত করা এবং এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে লিয়াজোঁ করার জন্য এনজিওগুলোকে চিঠি পাঠাতে হবে। এছাড়া গ্রহণকারী ব্যক্তি নির্বাচনের সময় প্রত্যেকের মূল আইডি গ্রহণ এবং তালিকা সম্পন্ন হওয়ার পর তা ফেরত দিতে হবে।
কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর বলেন, ভিজিডির মূল লক্ষ্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অসহায় মানুষদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলা। সে উদ্দেশ্য পূরণ না হলে পুরো বিষয়টিই অর্থহীন হয়ে পড়বে।
এ সময় মহিলা মেম্বারদের ভিজিডি গ্রহণকারী ব্যক্তি নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব রাখেন তিনি।
তিনি বলেন, মহিলা মেম্বাররা খুব কষ্ট করে নির্বাচিত হয়ে আসলেও তাদের যথেষ্ট কাজ দেওয়া হয় না। তাই, ভিজিডি গ্রহণকারী ব্যক্তি নির্বাচনে তাদের দায়িত্ব দেওয়া হলে এটি আরো স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ হবে।
সিরাজুল আকবর আরো বলেন, সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে মহিলাদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। এক্ষেত্রে একজন নারীই ঠিক করবেন কখন সন্তান নেবেন, কখন নেবেন না।
এ বিষয়ে কমিটির সদস্য প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ জানান, নীতিমালা অনুযায়ী এনজিও নির্বাচনের জন্য কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই এ কাজ তদারকি করেন।
এ ছাড়া উপজেলা পর্যায়ের পরিচিত এনজিওগুলোকে এ কাজে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৫