ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নিজামীর আপিল মামলা

রাষ্ট্রপক্ষের ফের যুক্তি উপস্থাপন ৭ ডিসেম্বর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৫
রাষ্ট্রপক্ষের ফের যুক্তি উপস্থাপন ৭ ডিসেম্বর আমির মতিউর রহমান নিজামী

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর আপিল আবেদনের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন আগামী ০৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।



বুধবার (০২ ডিসেম্বর) শুনানির নবম কার্যদিবসে আসামিপক্ষের শেষ হলে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।  
 

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে শুনানি চলছে। অন্য বিচারপতিরা হচ্ছেন, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

বুধবার আসামিপক্ষের তিনদিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। প্রথমে সাক্ষ্যভিত্তিক যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন নিজামীর আইনজীবী এস এম শাহজাহান। এর আগে সোমবার (৩০ নভেম্বর) ও মঙ্গলবার (০১ ডিসেম্বর) আরও দুই কার্যদিবসেও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তিনি। নিজামীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত আটটি অভিযোগে সাক্ষ্য-প্রমাণ বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
 
এরপর নিজামীর প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন আইনি পয়েন্টে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন।   

এর আগে গত ০৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ছয় কার্যদিবসে ট্রাইব্যুনালের রায়সহ মামলার নথিপত্র উপস্থাপন শেষ হয়।

০৯ সেপ্টেম্বর প্রথমদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এরপর নিজামীর পক্ষে এক নম্বর অভিযোগ উত্থাপন করেন অ্যাডভোকেট-অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন। ১৭, ১৯, ২৩, ২৪ ও ২৫ নভেম্বর পরবর্তী পাঁচদিন শুনানি করেন এস এম শাহজাহান।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত বছরের ২৯ অক্টোবর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি আনোয়ারুল হক ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন নিজামীকে।

এ রায়ের বিরুদ্ধে ২৩ নভেম্বর আপিল করেন নিজামী। ছয় হাজার ২শ’ ৫২ পৃষ্ঠার আপিলে মোট ১শ’ ৬৮টি কারণ দেখিয়ে ফাঁসির আদেশ বাতিল করে খালাস চেয়েছেন তিনি।

তবে সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায় আপিল করেননি রাষ্ট্রপক্ষ।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নিজামীর আপিলের সার-সংক্ষেপ দুই সপ্তাহের মধ্যে দাখিলের জন্য রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এরপর উভয়পক্ষ সার-সংক্ষেপ জমা দেন।

নিজামীর বিরুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড এবং হত্যা-গণহত্যাসহ সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) মোট ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে ৮টি অর্থাৎ ১, ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৮ ও ১৬ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয় ট্রাইব্যুনালের রায়ে।
 
প্রমাণিত চারটি অর্থাৎ সাঁথিয়া উপজেলার বাউশগাড়িসহ দু’টি গ্রামে প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষকে গণহত্যা ও প্রায় ৩০-৪০ জন নারীকে ধর্ষণ (২ নম্বর অভিযোগ), করমজা গ্রামে ১০ জনকে গণহত্যা, একজনকে ধর্ষণসহ বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ (৪ নম্বর অভিযোগ), ধুলাউড়ি গ্রামে ৫২ জনকে গণহত্যা (৬ নম্বর অভিযোগ) এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (১৬ নম্বর অভিযোগ) দায়ে নিজামীকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।

অন্য চারটি অর্থাৎ পাবনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাওলানা কছিমুদ্দিন হত্যা (১ নম্বর অভিযোগ), মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র (৩ নম্বর অভিযোগ), বৃশালিখা গ্রামের সোহরাব আলী হত্যা (৭ নম্বর অভিযোগ) এবং রুমী, বদি, জালালসহ সাত গেরিলা যোদ্ধা হত্যার প্ররোচনার (৮ নম্বর অভিযোগ) দায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

৫ ও ৯ থেকে ১৫ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এসব অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন তিনি। এগুলোও ছিল হত্যা-গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ এবং বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের উস্কানি ও প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৫
ইএস/এএ্সআর

** আসামিপক্ষের শেষ, যুক্তি উপস্থাপন করছেন রাষ্ট্রপক্ষ
** শেষ দিনের যুক্তি উপস্থাপন করছেন নিজামীর আইনজীবী

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।