ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘প্রশ্নই আসে না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৫
‘প্রশ্নই আসে না’ খন্দকার মাহবুব হোসেন

ঢাকা: ‘অপরাধ স্বীকার করে শুধু মৃত্যুদণ্ডের হাত থেকে অব্যাহতি চান নিজামী’- অ্যাটর্নি জেনারেলের এমন মন্তব্যের জবাবে নিজামীর প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ‘আমাদের কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে’?

‘প্রশ্নই আসে না, তাহলে মামলা করলাম কি করে?’- এমন মন্তব্য করে বুধবার (০২ ডিসেম্বর) বিকালে তিনি বলেন, অ্যার্টনি জেনারেল সাহেবের বক্তব্য আমি যা শুনলাম টিভিতে তা ফৌজদারি আইন সম্পর্কে অজ্ঞতাপূর্ণ। আমরা বলেছি যে, সাক্ষ্য-প্রমাণে নিজামী সাহেবের অপরাধ প্রমাণিত হয় না।



বুধবার আপিল শুনানির নবম কার্যদিবসে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে যুক্তিতর্ক শেষ করেন আসামিপক্ষ। এরপর রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আগামী ০৭ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করার দিন ধার্য রয়েছে।

যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, সরকার মেশিনারি ব্যবহার করে সেফহোমে রেখে সাক্ষীদের আদালতে উপস্থাপন করেছে। আর এর প্রমাণ মিলেছে সাক্ষীদের ভিন্ন বক্তব্যে। কারণ, তারা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে কথা বলেছেন তা আদালতে বলেননি।

তিনি বলেন, মতিউর রহমান নিজামীর আপিল মামলার শেষ প্রান্তে বলেছি, অনেকগুলো অভিযোগের কোনোটিতে যদি মনে হয়, অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, সেক্ষেত্রে আসামির বয়স ও অসুস্থতা বিবেচনা করে তাকে লঘুদণ্ড পাওয়ার যোগ্য তিনি।

নিজামীর বিরুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড এবং হত্যা-গণহত্যাসহ সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) মোট ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে ৮টি অর্থাৎ ১, ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৮ ও ১৬ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয় ট্রাইব্যুনালের রায়ে।

প্রমাণিত চারটি অর্থাৎ সাঁথিয়া উপজেলার বাউশগাড়িসহ দু’টি গ্রামে প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষকে গণহত্যা ও প্রায় ৩০-৪০ জন নারীকে ধর্ষণ (২ নম্বর অভিযোগ), করমজা গ্রামে ১০ জনকে গণহত্যা, একজনকে ধর্ষণসহ বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ (৪ নম্বর অভিযোগ), ধুলাউড়ি গ্রামে ৫২ জনকে গণহত্যা (৬ নম্বর অভিযোগ) এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (১৬ নম্বর অভিযোগ) দায়ে নিজামীকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।

অন্য চারটি অর্থাৎ পাবনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাওলানা কছিমুদ্দিন হত্যা (১ নম্বর অভিযোগ), মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র (৩ নম্বর অভিযোগ), বৃশালিখা গ্রামের সোহরাব আলী হত্যা (৭ নম্বর অভিযোগ) এবং রুমী, বদি, জালালসহ সাত গেরিলা যোদ্ধা হত্যার প্ররোচনার (৮ নম্বর অভিযোগ) দায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

৫ ও ৯ থেকে ১৫ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এসব অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন তিনি। এগুলোও ছিল হত্যা-গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ এবং বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের উস্কানি ও প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৫
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।