নোয়াখালী: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান শহীদ, সাত বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্তদের একজন বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন।
১০ ডিসেম্বর তার ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী।
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বাগপাঁচড়া (বর্তমান শহীদ রুহুল আমিন নগর) গ্রামে ১৯৩৪ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে নৌ বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। ১০ ডিসেম্বর সম্মুখ যুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বোমার আঘাতে শহীদ হন তিনি।
ইতিহাসের পাতা থেকে জানা যায়, রুহুল আমিন ১৯৭১ সালের এপ্রিলে পিএনএস বখতিয়ার ঘাঁটি ছেড়ে ভারতের ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে মাতৃভূমিতে আসেন ও দুই নম্বর সেক্টরের হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
পরে যুদ্ধ জাহাজ ‘পলাশ’ এর আর্টিফিসার অফিসারের দায়িত্ব পান তিনি। ৯ ডিসেম্বর রাতে ওই জাহাজ হিরণ পয়েন্টে প্রবেশ করে। ১০ ডিসেম্বর খুলনা শিপ ইয়ার্ডের কাছাকাছি পৌঁছুলে শত্রু পক্ষের বোমারু বিমান ওই জাহাজ লক্ষ্য করে আঘাত হানে।
ওই সময় রণতরী ‘পলাশ’ ত্যাগ করে প্রাণ বাঁচানো সহজ ছিলো। কিন্তু রুহুল আমিন তা না করে সম্মুখ যুদ্ধ শুরু করেন। দেশ স্বাধীন করার জন্য বীরের মতো যুদ্ধ করে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধে মহান আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয় তাকে।
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন শুধু নোয়াখালী জেলা বা চট্টগ্রাম বিভাগের গর্ব নন, তিনি পুরো বাংলাদেশের গর্ব।
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্মরণে ২০০৮ সালের প্রথম দিকে জেলা পরিষদের অর্থায়নে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নিজ গ্রামে নির্মাণ করা হয় ‘‘বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন যাদুঘর ও গ্রন্থগার”। বর্তমানে এখানে প্রায় চার হাজার বই ও তার ব্যবহার্য বিভিন্ন সামগ্রী রয়েছে। প্রতিদিন শতাধিক দর্শনার্থী বীরশ্রেষ্ঠ সম্পর্কে জানতে এখানে আসেন।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসন, সোনাইমুড়ি উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধ সংসদ, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন যাদুঘর ও গ্রন্থগারের পক্ষ থেকে জাতীয় এই বীরকে স্মরণ করতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৫
এসআই