ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিএনজি সিলিন্ডার রি-টেস্টে অনীহা, ঘটছে দুর্ঘটনা

তাবারুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৫
সিএনজি সিলিন্ডার রি-টেস্টে অনীহা, ঘটছে দুর্ঘটনা

ঢাকা: সিএনজি চালিত যানবাহনে ব্যবহৃত সিলিন্ডার প্রতি পাঁচ বছর পর পুন:পরীক্ষা (রি-টেস্ট) করার বাধ্য-বাধকতা থাকলেও তাতে অধিকাংশ যানবাহনের মালিকদের রয়েছে অনীহা। সময়মতো রি-টেস্ট না করার কারণে ঢাকাসহ সারাদেশে হরহামেশাই ঘটছে সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা।


 
বিস্ফোরক পরিদফতরের প্রজ্ঞাপন ও সিএনজি বিধিমালা-২০০৫ অনুসারে সিএনজি চালিত যানবাহনের সিলিন্ডার স্থাপনের পাঁচ বছরে পর পর পুনঃপরীক্ষার বিষয়ে বাধ্য-বাধকতা রয়েছে।
 
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল) ও তাদের অনুমোদিত রি-টেস্ট সেন্টার থেকে এসব মেয়াদ উত্তীর্ণ সিলিন্ডার পুনঃপরীক্ষা করতে হবে।
 
অন্যদিকে, আরপিজিসিএল ও তাদের অনুমোদিত ওয়ার্কশপ থেকে যানবাহনে সিএনজি সিলিন্ডার স্থাপন করার বাধ্য-বাধকতা রয়েছে। কিন্তু বহু যানবাহনের মালিক অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ওয়ার্কশপ থেকে কম মূল্যে ও নিম্নমানের সিএনজি সিলিন্ডার স্থাপন করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
 
অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ওয়ার্কশপ থেকে নিম্নমানের সিলিন্ডার স্থাপন ও মেয়াদ শেষে পুনঃপরীক্ষা না করাতে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটছে বলে আরপিজিসিএল’র বার্ষিক এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
 
২০১৪-১৫ সালের বার্ষিক এ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বর্তমানে দেশের ২৩টি জেলায় ৫৪৮টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও ১৮০টি যানবাহন সিএনজি রূপান্তরিত করার কারখানা চালু রয়েছে।
 
আরপিজিসিএল’র নিজস্ব দু’টি সিএনজি সিলিন্ডার রি-টেস্ট সেন্টার রয়েছে। এ বছর (২০১৪-১৫) এ দু’টি সেন্টার থেকে ১ হাজার ৭১৫টি সিলিন্ডার রি-টেস্ট করা হয়েছে। আর এখন পযন্ত এ দু’টি কারখানা থেকে সর্বমোট ৩ হাজার ৮০০টি সিলিন্ডার রি-টেস্ট করা হয়েছে।
 
অন্যদিকে, অনুমোদিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মোট ৪০ হাজার যানবাহনের সিলিন্ডার রি-টেস্ট করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
 
আরপিজিসিএল সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে চালু থাকা ১০০টি সিএনজি স্টেশন ও ১০টি কনভারসন ওয়ার্কশপে আরপিজিসিএল’র প্রকৌশলী ও কারিগরি কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণ স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। ওই সময় এসব দুর্ঘটনার কারন উদঘাটন করা হয়েছে।
 
বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের মাধ্যমে সংঘটিত দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হলো, অনুমোদিত ও মানসম্মত সিলিন্ডার, সিএনজি কিট ও যন্ত্রাংশ ব্যবহার না করা।
 
এ বিষয়ে আরপিজিসিএল’র মহাব্যবস্থাপক (জিএম-সিএনজি) প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী বিশ্বাসের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বার্ষিক প্রতিবেদনের বাইরে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি।
 
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরপিজিসিএল’র এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতি বছর যে পরিমাণ যানবাহন সিলিন্ডার রি-টেস্ট করার কথা, আসলে সেই পরিমাণ সিলিন্ডার রি-টেস্ট করছে না। এর অন্যতম কারণ হলো- মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিনিয়ত গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটছে।
 
তবে আরপিজিসিএল থেকে যানবাহনের মালিকদের সিলিন্ডার রি-টেস্ট করতে বাধ্য করার ক্ষমতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে কারণে রাস্তা দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে এসব মেয়াদ উত্তীর্ণ সিলিন্ডার নিয়ে যানবাহন চলছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) উদ্যোগ জরুরি বলেও তিনি মনে করেন।

দুর্ঘটনার কারণ উল্লেখ করে সিএনজি সিলিন্ডার রি-টেস্ট করাতে আরপিজিসিএল থেকে বিভিন্ন সময় সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়ে থাকে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৫
টিএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।