ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শ্যামা পূজা শনিবার

সুকুমার সরকার, সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৬
শ্যামা পূজা শনিবার

ঢাকা: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্যামা বা কালী পূজা শনিবার (২৯ অক্টোবর)।

‘শ্যামা’ হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে শক্তির দেবী হিসেবে পরিচিত।

আর কালী বা কালিকা হলেন একজন দেবী। তার অন্য নাম আদ্যাশক্তি। প্রধানত শাক্ত ধর্মাবলম্বীরা কালীর পূজা করেন। শ্যামা পূজা সাধারণত গভীর রাতে হয়।

কালী দশমহাবিদ্যা নামে পরিচিত তন্ত্রমতে পূজিতা প্রধান দশজন দেবীর মধ্যে প্রথম দেবী। শাক্তরা কালীকে বিশ্বব্রহ্মা- সৃষ্টির আদি কারণ মনে করেন।

হিন্দু সমাজে দেবী কালীর মাতৃরূপের পূজা বিশেষ জনপ্রিয় একটি উৎসব। অন্য পূজার সময় হিন্দুরা নিরামিষ গ্রহণ করলেও শ্যামা পূজায় তার ব্যতিক্রম দেখা যায়।

শতপথ ব্রাহ্মণে ও তৈত্তিরেয় ব্রাহ্মণে নৈঋত দেবীর কথা উল্লেখ রয়েছে। বৈদিক সাহিত্যে কালীর নাম প্রথম পাওয়া যায় মুন্ডক উপনিষদে। সেখানে কালী যজ্ঞাগ্নির সপ্তজিহ্বার একটি। এখানে কালী আহুতি গ্রহণকারী অগ্নিজিহ্বা মাত্র। মহাভারতের সৌপ্তিক পর্বেও দেখা যায় কালীর শক্তির পরিচয়।

পুরাণ ও তন্ত্র গ্রন্থগুলোতে কালীর বিভিন্ন রূপের বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে সাধারণভাবে তার মূর্তিতে চারটি হাতে খড়্গ অসুরের ছিন্নমুণ্ড, বর ও অভয় মুদ্রা; গলায় মানুষের মুণ্ড দিয়ে গাঁথা মালা। বিরাট জিহ্বা, কালো গায়ের রং, এলোকেশে তার স্বামী শিবের বুকের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ব্রহ্মযামল মতে, কালী বঙ্গদেশের অধিষ্ঠাত্রী দেবী।

বিভিন্ন রূপভেদ আছে কালীর। অর্থাৎ, দক্ষিণাকালী, শ্মশানকালী, ভদ্রকালী, রক্ষাকালী, গুহ্যকালী, মহাকালী, চামুন্ডা ইত্যাদি। আবার বিভিন্ন মন্দিরে ‘ব্রহ্মময়ী’, ‘ভবতারিণী’, ‘আনন্দময়ী’, ‘করুণাময়ী’ ইত্যাদি নামে কালীপ্রতিমা প্রতিষ্ঠা ও পূজা করা হয়।

আশ্বিন-কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দীপান্বিতা কালীপূজা বিশেষ জাঁকজমক সহকারে পালিত হয়। এছাড়া মাঘ মাসে রটন্তী কালীপূজা ও জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণী কালীপূজাও বিশেষ জনপ্রিয়। অনেক জায়গায় প্রতি অমাবস্যা এবং প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবারে কালীপূজা হয়।

বাঙালি সমাজে কালী দেবীর উপাসকরা বিশেষ সম্মান পেয়ে থাকেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রামকৃষ্ণ পরমহংস ও তার শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ, রামপ্রসাদ সেন, কমলাকান্ত ভট্টাচার্য প্রমুখ।

রাজধানী ঢাকা শহরের রমনা কালীমন্দির খুবই প্রাচীন একটি কালীমন্দির। এছাড়া রয়েছে সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, ঢাকেশ্বরী মন্দির, চট্টেশ্বরী মন্দির, রক্ষাকালী মন্দির, নিমকালী মন্দির, সদরঘাট কালী মন্দির ইত্যাদি।

কালীকে বিষয়বস্তু করে রচিত ‘শ্যামাসংগীত’ বাংলা সাহিত্য ও সংগীত ধারার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কলকাতায় অনেক কালীমন্দির আছে বলেই ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে কালীকে ‘কলকাত্তাওয়ালি’ (কলকাতানিবাসী) বলা হয়।

কালী’ শব্দটি ‘কাল’ শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ রূপ, যার অর্থ “কৃষ্ণ, ঘোর বর্ণ। মহাভারত অনুসারে, এটি দুর্গার একটি রূপ।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৬
এসএস/এএ
 
 
 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।