ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

শীতের সবজিতে খুশি মানিকগঞ্জের চাষিরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৬
শীতের সবজিতে খুশি মানিকগঞ্জের চাষিরা বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

উত্তম পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জের সাত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে।

মানিকগঞ্জ: উত্তম পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জের সাত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে।

শীতের শুরুতেই এসব সবজি বাজারজাত করে বেশ লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা।

উৎপাদনের খরচ তুলে ভালো মুনাফা হওয়ায় এবার মানিকগঞ্জের কৃষকদের মুখে প্রশান্তির হাসি ফুটেছে।

জানা গেছে, শীতকালীন আগাম সবজির বাজারমূল্য ভালো থাকার এ বছর বেশি মুনাফা পাচ্ছেন সবজি চাষিরা। প্রতিদিনই তাদের সবজি জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারজাত করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, মানিকগঞ্জের সাত উপজেলার মধ্যে সিংগাইর, সাটুরিয়া, ঘিওর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সবজির চাষ বেশি হয়। অল্প পুঁজিতে বেশি মুনাফার সুযোগ থাকায় সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে এসব অঞ্চলের কৃষকদের। ফলে ধান ও তামাকের পরিবর্তে এখন বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেকে।

সম্প্রতি সরেজমিনে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় সবজি চাষিদের।

বিভিন্ন সবজি খেত ঘুরে দেখা গেলো, ফুলকপি, পাতাকপি, লাউ, বেগুন, করলা, শিম, মুলা, লাউ শাক, লাল শাক, পালং শাক, ধনে ও মুলা শাকসহ বিভিন্ন শাক-সবজির চাষ করা হয়েছে। সকাল-বিকাল খেত থেকে এসব শাক-সবজি তোলা হচ্ছে।

সদর উপজেলার ঢাকুলী গ্রামের কৃষক আব্দুল খলিল জানান, এবা তিনি ছয় বিঘা জমিতে ফুলকপি ও তিন বিঘা জমিতে বেগুনের আবাদ করেছেন। কপি বাজারে তুলতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। তবে বেগুন বাজারে পাঠাতে শুরু করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে বেগুন চাষে তার খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। গত দুই সপ্তাহে প্রতি বিঘা জমি থেকে তিনি ১০ মণ করে বেগুন পেয়েছেন। মণপ্রতি বিক্রি করেছেন ১৪০০ টাকা দরে।

তিনি জানান, প্রতি চার দিন অন্তর তিনি প্রতি বিঘা জমি থেকে চার থেকে ছয় মণ করে বেগুন তুলতে পারেন। বাজারদর ভালো থাকলে প্রতি বিঘা জমি থেকে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা মুনাফা হবে তার।

একই এলাকার আলী হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে শশার আবাদ করেছেন। চারা রোপণ থেকে শুরু করে ফলন পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে বিঘাপ্রতি জমিতে ১৬ হাজার টাকার মতো। আর শশা বিক্রি করে পেয়েছেন বিঘাপ্রতি জমি থেকে ২৪ হাজার টাকা।

তিনি জানান, শশার জন্য তৈরি মাচায় শিম ও লাউয়ের চাষ করেছেন। এজন্য তার অতিরিক্ত খরচ হয়নি। উপরন্তু ওই জমি থেকে প্রায় ২০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন তিনি। বাকি সময়ে শিম ও লাউ বিক্রি করে আরো ৫০ হাজার টাকা পাবেন বলে তার আশা।

সাটুরিয়া উপজেলার কামতা এলাকার কৃষক লাল মিয়া জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। একই খেতে ধনে ও লাল শাক বুনেছেন। ধনে ও শাকের জন্য তার দেড় হাজার টাকা খরচ হলেও এক মাসের ব্যবধানে তিনি আয় করেছেন আট হাজার টাকা।

এবার শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন ও কৃষকদের মুনাফ‍া বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি অফিসের উপ পরিচালক আলীমুজ্জামান মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় আট হাজার হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। এর সঙ্গে স¤পৃক্ত রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার। সবজি চাষে অধিক লাভ হওয়ার কারণে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। এছাড়া কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৬
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।