ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

হবিগঞ্জে চায়ের সর্বোচ্চ ফলন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৬
হবিগঞ্জে চায়ের সর্বোচ্চ ফলন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল চা। সারাদেশে চা বাগানের সংখ্যার দিক থেকে হবিগঞ্জের অবস্থান দ্বিতীয়। এ জেলায় উৎপাদিত চা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ বছর হবিগঞ্জে চায়ের সর্বোচ্চ ফলন হয়েছে বলে বিভিন্ন বাগান সূত্রে জানা গেছে।

হবিগঞ্জ: বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল চা। সারাদেশে চা বাগানের সংখ্যার দিক থেকে হবিগঞ্জের অবস্থান দ্বিতীয়।

এ জেলায় উৎপাদিত চা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ বছর হবিগঞ্জে চায়ের সর্বোচ্চ ফলন হয়েছে বলে বিভিন্ন বাগান সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে চা পাতার উৎপাদন শুরু হয়। চলে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। এ বছর মৌসুমের এক মাস বাকী থাকতেই লস্করপুর ভ্যালিতে সর্বোচ্চ উৎপাদনের রেকর্ড এক কোটি ১০ লাখ কেজি ছাড়িয়ে গেছে। নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে উৎপাদনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। এতে চায়ের উৎপাদন আরও বাড়তে পারে।

চায়ের ভাল ফলনের জন্য প্রয়োজন নিয়মিত বৃষ্টি। বৃষ্টির পর রোদ পেলেই চা গাছে কুঁড়ি আসে। এ বছর নিয়মিত বৃষ্টি হওয়ায় হবিগঞ্জে চায়ের ফলন ভাল হয়েছে। সময়মত গাছ থেকে এসব কুঁড়ি সংগ্রহ করে মেশিনে প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেন শ্রমিকরা।

লস্করপুর, সিলেট, জুড়ী, লংলা, মনু-ধলাই, বালিশিরা ও চট্টগ্রামসহ সাতটি ভ্যালির মাধ্যমে দেশের প্রায় ৩৫৮টি বাগান রয়েছে। এর মধ্যে ১৫৮টি বাগানে ফ্যাক্টরি রয়েছে। আর শ্রমিক রয়েছেন প্রায় ২০ লাখ। এর মধ্যে হবিগঞ্জের বাগানগুলোতে চা পাতা উৎপাদনে লক্ষাধিক শ্রমিক জড়িত রয়েছেন। বেশিরভাগ নারী শ্রমিক চা পাতা উত্তোলন করে।

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের চান্দপুর বাগানে দেখা যায়, শিলা উড়াং, রুমা উড়াং, সাগরী রায়, সন্ধ্যা মহালী, বিনা সাঁওতাল, মঙ্গল মুন্ডা, জরা মুন্ডাসহ অর্ধশতাধিক চা শ্রমিক ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে চা পাতা সংগ্রহ করছেন। এ মৌসুমে চায়ের ভাল ফলন হওয়ায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করছেন।

লস্করপুর ভ্যালির চেয়ারম্যান ও চাকলাপুঞ্জি চা বাগানের ব্যবস্থাপক এসসি নাগ বাংলানিউজকে জানান, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, চুনারুঘাট, মাধবপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার ৭০৩.২৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৪টি ফ্যাক্টরিযুক্ত চা বাগান রয়েছে।

এছাড়া ফাঁড়িসহ প্রায় ৩৫টি বাগানের প্রত্যেকটিতে প্রতি হেক্টর জমিতে ২২/২৫শ’ কেজির উপরে ও নিচে ১৫০/১১৬শ’ কেজি চা পাতা উৎপাদন হচ্ছে। এদিকে, চা পাতা উৎপাদন লাভজনক হওয়ায় প্রত্যেক বাগানের পতিত জমি আবাদ করে চা গাছ রোপণ করা হচ্ছে।

দেউন্দি চা বাগানের সিনিয়র ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, চলতি বছরে আগাম বৃষ্টি, অনুকূল আবহাওয়া, নতুন চা এলাকা সম্প্রসারণ, ক্লোন চা গাছের ব্যবহার বৃদ্ধি ও চা বোর্ডের নজরদারির কারণে এ মৌসুমে চা শিল্পের ইতিহাসে সর্বোচ্চ চা উৎপাদিত হয়েছে।

বাহুবলের আমতলী চা বাগানের ম্যানেজার কাজী মাসুদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, হবিগঞ্জের প্রায় ছোট বড় ৩৫টি বাগানে এ বছর চা পাতার উৎপাদন শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বাংলানিউজকে জানান, হবিগঞ্জের বাগানগুলোর বেশিরভাগই লস্করপুর ভ্যালির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। ২০১৫ সালে চুনারুঘাটে লস্করপুর ভ্যালিতে সর্বোচ্চ এক কোটি নয় লাখ কেজি তৈরি চা উৎপাদিত হয়েছিলো। এ বছর এ উৎপাদনের এ মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৬

এনটি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।