ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কেন পারাবতে সাড়ে ৫ ঘণ্টায় নয় ঢাকা-সিলেট?

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৬
কেন পারাবতে সাড়ে ৫ ঘণ্টায় নয় ঢাকা-সিলেট? ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঠিক টাইমে ছেড়েও প্রথম স্টপেজ বিমানবন্দরে পৌঁছাতে ১০ মিনিটের বেশি লেট। এ লেট আর গেলো না শেষ পর্যন্ত। একের পর এক স্টেশন স্পর্শ করছে পারাবত আর বাড়ছে লেট।

পারাবত এক্সপ্রেস থেকে: ঠিক টাইমে ছেড়েও প্রথম স্টপেজ বিমানবন্দরে পৌঁছাতে ১০ মিনিটের বেশি লেট। এ লেট আর গেলো না শেষ পর্যন্ত।

একের পর এক স্টেশন স্পর্শ করছে পারাবত আর বাড়ছে লেট।

শেষ পর্যন্ত লেট গিয়ে ঠেকেছে দেড় ঘণ্টায়। লেট করার কারণও স্পষ্ট, ‘স্পিড রেস্ট্রিকশন’ দেওয়া। কিছু স্টেশন বন্ধ রাখা। যে কারণে খুব গতিতে উঠেও আবার গরুর গাড়ি মতো গতিতেও চলতে দেখা গেছে পারাবতকে।
 
ট্রেনের লোকোমোটিভ মাস্টার পরিচালক এবং কন্ট্রোল সূত্র বলছে, এখন ঢাকা থেকে সিলেটে যেতে ৭ থেকে সাড়ে ৭ ঘণ্টা লাগে পারাবতে। ‘স্পিড রেস্ট্রিকশন’ না থাকলে আর বন্ধ স্টেশনগুলো খুলে দিলে মাত্র সাড়ে ৫ ঘণ্টায় পারাবতে সিলেট পৌঁছা যাবে!

এমনটা হলে ঢাকা-সিলেটের পথে রেল হবে বাসের চেয়ে জনপ্রিয়।
 
রেস্ট্রিকশন কোথায়? আর বন্ধ স্টেশন কোনগুলো? খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, এ রুটের শাহজিবাজার, লস্করপুর, টিলাগাঁও, লংলা, বরমচাল (রাতে বন্ধ), ভাটেরাবাজার মুকুন্দপুর (রাতে বন্ধ) স্টেশনগুলো পুরোপুরি বন্ধ। এ কারণে এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনে লম্বা দূরত্বের মধ্যে কোনো কোনো ট্রেনকে বসিয়ে রাখতে হয়। একটি গেলে আরেকটি যায়। লাইন ক্লিয়ার দ্রুত হয় না। লুজ টাইমে পড়ে পারাবতসহ অন্যান্য ট্রেনগুলো।
 
আরও জানা গেলো, নতুন করে কিছু স্পিড রেস্ট্রিকশন দেওয়ায় লোকোমোটিভ মাস্টার ট্রেনটি গতিতে তুলতে পারেন না। তাকে আস্তে আস্তে যেতে হয় নয়াপাড়া আর শাহজিবাজার এলাকায়।
 
রেস্ট্রিকশন দেওয়া জায়গাগুলোর খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, নয়াপাড়ার আশেপাশে স্পিড রেস্ট্রিকশন দেওয়া আছে আর শাহজিবাজারে বিসি পড়ায় ওইখানেও রেস্ট্রিকশন দেওয়া হয়। আবার শ্রীমঙ্গল নতুন ব্রিজ হওয়ার পরেও রেস্ট্রিকশন দেওয়া রয়েছে।
 
ঢাকা বিভাগের রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আরিফুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, বন্ধ স্টেশনগুলোর কয়েকটি আগামী জানুয়ারির দিকে খোলা যেতে পারে। কারণ, ওই সময় সহকারী স্টেশন মাস্টার পদে নতুনরা যোগ দেবেন।
 
পারাবত ট্রেনের নিয়মিত যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা-বিমানবন্দর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-শায়েস্তাগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল-কুলাউড়া-সিলেট- এ ৭ স্টেশন দিয়ে যদি পারাবত চালানো যেতো তবে সাড়ে ৫ ঘণ্টায়ও ঢাকা থেকে সিলেট যাতায়াত করা সম্ভব। আর ভৈরব বাজার, ভানুগাছ, নোয়াপাড়া- এ তিন স্টপেজ বাতিলেরও দাবি তাদের।
 
তাদের কেউ বলছেন, ঢাকা-সিলেট রুটের ৩০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ট্রেন পারাবতের গতি বাড়িয়ে স্টপেজ কমিয়ে অনেকটা ননস্টপ ট্রেনের মতো চালানো হোক। কারণ এখন যে লাল-সবুজ বগি দিয়ে চালানো হয়, তার গতি ঘণ্টায় দেড়শ’ কিলোমিটার।
 
এ রুটের যাত্রী, চালক-পরিচালকরা বলছেন, যদি লুজ টাইম ও রানিং টাইম কমানো এবং অপ্রয়োজনীয় স্টেশন বাতিল করা হয়, তাহলে এটি ৫ থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টায় খুব সহজেই চলতে পারে। আর বন্ধ স্টেশনগুলো চালু না করলে লুজ টাইম কমিয়েও লাভ হবে না। আপাতত পারাবতকে রাইট টাইম করতে হলে অবশ্যই শাহজিবাজার, লংলা স্টেশন খুলতে হবে- এমনটা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকেই জানাচ্ছেন তারা।
 
অবশেষে বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে রাইট টাইমে ছেড়ে পারাবত সিলেটে পৌঁছায় দুপুর আড়াইটায়। ৬ ঘণ্টার পথ লেগেছে ৮ ঘণ্টা। যেখানে বাসেই যাওয়া যায় ৫ থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৬
এসএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।